বিশ্বভারতীর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ নিয়ে আকচা-আকচি চরমে, ডেকোরাম নিয়ে প্রশ্ন তৃণমূলের
বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য টুইট করে, গোটা বিতর্ককে 'পিসির ছোট মানসিকতার' প্রকাশ বলে কটাক্ষ করেছেন।
কলকাতা: বিশ্বভারতীর শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে দানা বেঁধেছে বিতর্ক। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি, মুখ্য়মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ করা হলেও তাঁর তরফে কোনও প্রাপ্তি স্বীকার করা হয়নি। পাল্টা তৃণমূলের দাবি, রাজ্যের মুখ্য়মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানোর একটা নির্দিষ্ট ‘ডেকোরাম’ আছে। সেটুকু মেনে চলা সকলেরই কর্তব্য। এর মধ্যে আবার বিজেপিও ঢুকে পড়েছে ‘রাজনীতি’কে হাতিয়ার করে। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য টুইট করে, গোটা বিতর্ককে ‘পিসির ছোট মানসিকতার’ প্রকাশ বলে কটাক্ষ করেছেন। এই আমন্ত্রণ-তরজার আবহেই বৃহস্পতিবার ১০০ বছরে পা দিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন: রবীন্দ্রনাথ, বিশ্বভারতী অবিচ্ছিন্ন ভারতের ঐতিহ্য, মোদীর ভাষণে বারবার উঠে এল সে কথাই
এদিন বিশ্বভারতীর শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন আচার্য নরেন্দ্র মোদী। শান্তিনিকেতনে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোথাওই কোনও উপস্থিতি নজরে আসেনি। প্রথম থেকেই এ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি মমতার কাছে এ দিনের অনুষ্ঠানের কোনও আমন্ত্রণই এসে পৌঁছয়নি। বৃহস্পতিবার সকালেই বিশ্বভারতীর লেটার হেডে একটি আমন্ত্রণপত্র প্রকাশ্য়ে আসে। যেখানে আমন্ত্রিতের জায়গায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম লেখা। নিচে ৪ ডিসেম্বর তারিখ লিখে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর স্বাক্ষর।
এরপরই জল্পনা, তবে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবধি এ আমন্ত্রণ পত্র এসে পৌঁছয়নি। নাকি অন্য কোনও ‘ত্রুটি’র কারণে মমতা এদিনের অনুষ্ঠানে থাকলেন না। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূল মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “যিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম মুখে নিচ্ছেন না, যিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম মুখে নিচ্ছেন না। পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয় বলছেন, তিনি কখনই কি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন? সে কি সম্ভব? না আমন্ত্রণ জানাননি।”
আরও পড়ুন: ভোকাল ফর লোকালের প্রকৃষ্ট উদাহরণ পৌষমেলা, বিশ্বভারতীর শতবর্ষে বললেন মোদী
এরপরই ব্রাত্যকে বিশ্বভারতীর ৪ ডিসেম্বরের ওই চিঠির কথা বলা হলে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ সরকার কি সেই চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করেছে? বিশ্বভারতীর উপাচার্য চিঠি পাঠিয়ে সাইন করে দিয়ে কি নিজেই চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করেছেন? মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানোর পদ্ধতি এটা? আগের দিন রাতে বলাটা কোনও ডেকোরাম? তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।”
যদিও ব্রাত্যর এ মন্তব্য প্রসঙ্গে বিশেষ কিছু বলতে চাননি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বিশ্বভারতীতে দাঁড়িয়ে শুধু বলেন, “কে কী বলছে আপনারা তা পরীক্ষা করে দেখেছেন? খোঁজ নিয়েছেন? বিশ্বের দরবারে বিশ্বভারতীর একটা আলাদা মর্যাদা রয়েছে। তাই এই বিশ্বভারতীর সঙ্গে জড়িয়ে কোনও কথা বলার আগে ভালভাবে খোঁজ নেওয়া দরকার।”
Visva Bharati had sent invite to WB CM on 4Dec2020.
But for Pishi, politics is more important than the legacy of Gurudev Tagore! Never ever has a CM insulted Tagore’s Viswa Bharati like this!
Pishi is impersonation of narrow mindedness that is pushing Bengal to utter darkness! pic.twitter.com/Lf5CLyTaPT
— Amit Malviya (@amitmalviya) December 24, 2020
অন্যদিকে বিজেপির অমিত মালব্য বিশ্বভারতীর ‘আমন্ত্রণ পত্র’ শেয়ার করে টুইটারে লেখেন, “বিশ্বভারতী মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ৪ ডিসেম্বর। কিন্তু পিসির জন্য গুরুদেবের ঐতিহ্যের থেকে রাজনীতিটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এর আগে কোনও মুখ্যমন্ত্রী এভাবে রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতীকে অপমান করেননি। পিসির এই সঙ্কীর্ণ মানসিকতাই বাংলাকে ঘন অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”