বনগাঁ : ঘাসফুল শিবিরের নয়া বিতর্কে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। অভিষেকের হাতে ক্রমে যাচ্ছে দলের রাশ? এমন প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে। তারই মধ্যে প্রকাশ্যে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাঁচাছোলা বিরোধিতায় ঘাসফুলের অন্দরে ফাটল দেখতে পাচ্ছেন অনেকেই। তবে এ সব বিরোধিতাকে আমল দিচ্ছেন না কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। নিজস্ব ঢঙে তিনি বুঝিয়ে দিলেন, তিনি অভিষেকের সঙ্গে আছেন। মহাভারতের প্রসঙ্গ টেনে মদন বোঝালেন, তাঁর চোখে সামনে থেকে লড়াই করা ‘অর্জুন’ হলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আর ‘কৃষ্ণ’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদের নাম না করে আক্রমণও করেন মদন।
বনগাঁ থেকে রামপুরহাট পর্যন্ত বাস চলাচল শুরু হবে। তার আগে শুক্রবার পরিদর্শন করতে বনগাঁয় এসেছিলেন মদন মিত্র। সেখানেই এই বিষয়ে মন্তব্য করেন তিনি।
এ দিন বারবার অভিষেককে ক্ষমতা দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন মদন মিত্র। তিনি জানান, তিনি মমতার সঙ্গে আছেন। আর সেই সঙ্গে তিনি চান, অভিষেককে যাতে আরও বেশি শক্তিশালী করা যায়। এ ব্যাপারে তিনি তৃণমূলকর্মীদেরও আবেদন জানাবেন বলে উল্লেখ করেন। মদনের মতে, এই মুহূর্তে দলের যুব নেতাদের সঙ্গে যাঁর সবথেকে বেশি যোগাযোগ, তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিজস্ব স্টাইলে মদন বোঝান, মহাভারতে যুধিষ্ঠির থাকলেও আসল লড়াইটা লড়তে হয়েছিল অর্জুনকে। এ ক্ষেত্রে তিনি মনে করেন, অভিষেকই সেই অর্জুন, আর অভিষেককে তিনি মনে করিয়ে দিতে চান, তাঁর রথে সারথী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই মহাভারতের ‘কৃষ্ণ’।
মদন মিত্র বলেন, ‘কয়েকজন বুড়ো নেতা রাতারাতি খুব জ্ঞান দিচ্ছেন। এ সমস্ত নেতারা আন্দোলনে, মার খাওয়ার সময় ছিলেন না। তবে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নেননি তিনি। তাঁর দাবি, শুভেন্দু বা তাঁর সমর্থকেরা দলটাকে মায়ের ভোগে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। মদন বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যদি মনে করেন, এমন লোকদের তিনি দায়িত্ব দেবেন যাঁরা পার্টিটাকে মায়ের ভোগে পাঠিয়ে দেবে, দিতে পারেন, কারণ পার্টিটা তাঁর।’
তিনি জানান, তৃণমূল যেখানে দায়িত্ব দেবে, সেখানেই থাকবেন তিনি। তবে বিধায়ক বলেন, ‘তৃণমূলে থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জিন টেস্ট করবে, ডিএনএ টেস্ট করবে, মদন মিত্র তা বরদাস্ত করবে না।’
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্প্রতি নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেছেন, দু’মাস সব বন্ধ রাখা উচিত। এটা তাঁর ব্যক্তিগত মত। একদিকে তৃণমূল ভোট করার পক্ষে আর অন্যদিকে, অভিষেকের কেন তার পাল্টা মত প্রকাশ করলেন, তা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। আর সেই প্রশ্ন বিরোধী মহল থেকে পৌঁছে গিয়েছে ঘাসফুল শিবিরেও। তৃণমূলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিষেকের ব্যক্তিগত মত প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদটি সর্বক্ষণের। তাই এই পদে থেকে কারও ব্যক্তিগত কোনও মত থাকতে পারে না।’ শুধু তাই নয়, কল্যাণের মতে, এটা মমতার সরকারের বিরুদ্ধাচরণ করা।
আরও পড়ুন : Sujan Chakraborty on TMC: ‘দেড় পয়সার কী যোগ্যতা?’ মমতাকে ছাড়া অভিষেকের অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন সুজনের