উত্তর ২৪ পরগনা: বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংয়ের বাড়িতে ফের বোমাবাজি। মঙ্গলবার সকাল ন’টায় অর্জুন সিং বাড়ির পিছনে আবার বোমা ছুড়ে পালাল দুষ্কৃতীরা। ছবি তুলতে বাধা পুলিশের। চলছে পুলিশের তদন্ত। ৮ ই সেপ্টেম্বরের পর আবার ফের বোমাবাজি নিয়ে প্রশ্ন উঠল প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ন’টার সময়ে আচমকাই অর্জুন সিংয়ের বাড়ির পিছনে বোমা ছুড়ে মারে দুষ্কৃতীরা। গত ৮ সেপ্টেম্বরের বোমাবাজির পর এলাকায় নতুন করে আরও ২০টা সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়। বাড়ানো হয় পুলিশ পিকেট। সঙ্গে তো সিআইএসএফ জওয়ানদের প্রহরাও রয়েছে। তার মাঝেও কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল, তাতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
সব থেকে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার, সোমবার রাতে বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংয়ের ছেলে পবন সিংয়ের সঙ্গে ফোনে দীর্ঘক্ষন কথা বললেন এনআইএ-এর এক কর্তা। গত ৮ ই সেপ্টেম্বর সাংসদের বাড়িতে বোমা মারার ঘটনা নিয়ে কথা বলেন তিনি। সাংসদ এর পরিবার সূত্রে খবর, মঙ্গলবার এই ঘটনায় তদন্তে আসতে পারে এনআইএ। তারই মধ্যে আজই ফের বোমাবাজি।
এ প্রসঙ্গে সাংসদ অর্জুন সিং বলেন. “ওখানে একজন তৃণমূলের বিধায়ক হয়েছেন। বিভিন্ন কারখানা থেকে লোহা চুরি যায়। ওর মাধ্যমে সব কাজ হয়। রাতে চোররা চুরি করে নিয়ে যায়। পুলিশের সামনে দিয়েই। তারাই লোহা নিয়ে যাওয়ার সময়ে বোমা ছুড়তে ছুড়তে চলে যায়। আমি এসপিকে ফোন করেছি। এলাকায় ভয় দেখানো হচ্ছে। এই রাজনীতি আশা করতাম না আমরা। কিন্তু এখন এমনই রাজনীতি করছে তৃণমূল।”
স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, “শুনলাম একটা বিকট শব্দ। ছুটে আসতেই শুনি ফের বোমা পড়েছে সাংসদের বাড়ির পিছনে। ক’দিন আগেই এমন ঘটল। পুলিশ তদন্ত করছে। আমরা ভয়ে আছি। এর থেকে বিশেষ কিছু আর বলব না।”
ভাটপাড়ায় বারবার গুলি, বোমা এবং খুনের ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকার বাদিন্দারা। দিনকে দিন বাড়ছে দুষ্কৃতীরাজ। অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসীরাও। স্থানীয়রাই বলছেন, ভাটপাড়া ছেড়ে চলে যেতে ইচ্ছা হয়। আত্মীয়রাও আসতে ভয় পাচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবারই সিআইএসএফ প্রহরার দেড় ফুটের মধ্যেই সাংসদ অর্জুন সিংয়ের বাড়িতে বোমাবাজি হয়। তবে এই প্রথমবার নয়, ভোট পরবর্তী পর্যায়ে জুলাই মাসেও অর্জুনের বাড়িতে বোমাবাজি হয়।
সাংসদ অর্জুন সিং ওয়াই প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান। আর তাঁর ছেলে বিধায়ক পবন সিং ওয়াই ক্যাটাগরি নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে সিআইএসএফ। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সাংসদের বাড়িতে এবং তাঁর বাড়ির দরজায় মাছিও বসতে পারে না! কেউ প্রবেশ করতে গেলে তাঁর মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে চেকিং, সারা শরীর চেকিং করা হয়।
এমনকি সবার পকেট চেকিং হওয়ার পর তবেই প্রবেশের অনুমতি মেলে। বাড়ির সামনে ‘নো পার্কিং জোন’। সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ। এই অবস্থায় দুষ্কৃতীরা কীভাবে বারে বারে বোমাবাজি করে? নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সাংসদের পুত্র পবন সিংও।
আরও পড়ুন: অর্জুন সিংয়ের বাড়িতে বোমাবাজি, ঘটনার খোঁজখবর করা শুরু করল এনআইএ