Barasat Attempted to Suicide: পরীক্ষার খাতায় লিখে রেখেছিল ‘একটা লাইন’, বাবা-মায়ের অশান্তিতে স্কুলেই চরম সিদ্ধান্ত ‘ফার্স্ট গার্লের’
Barasat Attempted to Suicide: ছাত্রীকে আপ্রাণ বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু তা যে খুব একটা বেশি কার্যকরী হয়নি, তার প্রমাণ মিলল বুধবারই।
উত্তর ২৪ পরগনা: জেলার বুকে প্রথম সারির স্কুলের ‘ফার্স্ট গার্ল’। কিন্তু সেই মেয়েটাই ক্লাসে ভীষণ রকম অমনযোগী হয়ে পড়ে। এমনকি পরীক্ষার খাতাতেও লিখে এসেছিল, শেষ পরীক্ষার দিন সে কিছু একটা ঘটাবে। সচেতন ছিলেন শিক্ষিকারা। তাকে বুঝিয়েওছিলেন। কিন্তু ক্লাস নাইনের একটা বাচ্চা মেয়ে জীবনের এত বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতে পারে, তা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি কেউ। পরীক্ষা শেষে স্কুলের দোতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করল নবম শ্রেণির ছাত্রী। ঘটনাটি মর্মান্তিক আর কারণ আরও বেশি মর্মান্তিক। গত দু’বছরে কোভিড কালে বাড়িতে ঘটে গিয়েছে একের পর এক বিপর্যয়। বাবা-মায়ের মধ্যে নিত্য অশান্তি, তাঁদের বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত মেয়েটার মনে প্রভাব ফেলেছিলেন, স্কুলের শিক্ষিকারা বিষয়টি জানতেন। ছাত্রীকে আপ্রাণ বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু তা যে খুব একটা বেশি কার্যকরী হয়নি, তার প্রমাণ মিলল বুধবারই। বারাসতের কালীকৃষ্ণ গার্লস হাইস্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনা রীতিমতো চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। মেয়েটি চিকিৎসাধীন।
ছাত্রীটির নাম গোপন রাখা হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, ওই ছাত্রী কালীকৃষ্ণ স্কুলের পঞ্চম শ্রেণি থেকেই পড়ত। পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী ভুগছিল অন্য সমস্যা। শিক্ষিকা ও পাড়া প্রতিবেশীদের মারফত জানা যাচ্ছে, ওই ছাত্রীটির বাড়িতে ভীষণরকমের সমস্যা ছিল। তার বাবা-মা নিত্য অশান্তি করতেন। ইদানীং তাঁরা বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। মেয়েটাকে নিয়েও বাড়িতে অশান্তি হত। কোভিডকালে বাড়িতে থেকে আরও বেশি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে ছাত্রীটি।
এখন স্কুলে এলেও ক্লাসে কিছুটা হলেও অন্য মনস্ক থাকতে সে। শিক্ষিকারা বিষয়টি খেয়াল করেছিলেন। স্কুল সূত্রেই জানা যাচ্ছে, ছাত্রীর মুখে সব শুনে তার মাকে স্কুলে ডেকে পাঠিয়েছিলেন শিক্ষিকারা। কিন্তু তিনি স্কুলে আসেননি। এরপর পরীক্ষার মাঝে একটি খাতায় সে লিখে রাখে, শেষ পরীক্ষার দিন একটা কিছু করবে সে। বুধবার স্কুলে শেষ পরীক্ষা ছিল। শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন, পরীক্ষার পর ক্লাসরুমেই বেশ কিছুক্ষণ বসে ছিল সে। তারপর কিছুটা ফাঁকা হলে দোতলার বারান্দার থেকে ঝাঁপ দেয়। কিন্তু সেই সময় বাকি ছাত্রীরা চিৎকার করে ওঠে। স্কুলের শিক্ষিকারা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। এই ঘটনার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ থানায় ফোন করে। ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বরাবর প্রথম হওয়া ছাত্রীটি হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায়, রীতিমতো মর্মাহত শিক্ষিকারা। স্কুলের এক শিক্ষিকা বলেন, “ওর প্রিয় বন্ধুও আমাদের বলেছিল, মেয়েটা মানসিক সমস্যায় ভুগছিল। পরিবারে অশান্তি ছিল। ওর বেস্ট ফ্রেন্ডই আমাদের সবটা জানায়। আমরা তখন ওর মাকে ডেকে পাঠাই। কিন্তু ওর মা সেসময় ব্যক্তিগত কাজ থাকায় আসতে পারেননি। তার আগেই এই ঘটনা।”