উত্তর ২৪ পরগনা: শীতের ভোরে দোকানের বন্ধ শাটারের সামনে হঠাৎ চোখটা পড়ে আটকে গিয়েছিল প্রাতঃভ্রমণকারীদের। মাথায় উসকু খুসকো চুল। পরনে নাইটি, তারওপর একটা হলুদ শাল, আর তারও ওপরে একটা ফুল ফুল প্রিন্টের চাদর। অপরিচিত মুখ। প্রাতঃভ্রমণে রোজ যাঁরা বের হন, তাঁরা আগে কখনও তাঁকে দেখেননি। বৃদ্ধাকে ভবঘুরে কিংবা ভিখারি লাগেনি। তাই অত্যুৎসাহী কয়েকজন তাঁকে প্রশ্নটা করেই ফেলেন। বৃদ্ধা ভাঙা গলায় যা শোনালেন, তাতে রীতিমতো চমকে ওঠার মতো। ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তাঁকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে গিয়েছে ছেলেরাই। বিস্ফোরক অভিযোগ করেন ওই বৃদ্ধা। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়ার (Bhatpara) রথতলা এলাকায়।
জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধার নাম উমারানি প্রামাণিক। বাড়ির ঠিকানা সবই ঠিকঠাক বলেন তিনি। বৃদ্ধা জানান, তিনি চুঁচুড়া ঘটক পাড়া অঞ্চলের বাসিন্দা। বয়স সত্তর ছাড়িয়েছে। শুক্রবার সকালে ভাটপাড়ার রথতলা অঞ্চলে তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগ, ছেলেরাই তাঁকে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে অচৈতন্য করে গঙ্গা পেরিয়ে এখানে ফেলে দিয়ে গিয়েছে। বৃদ্ধা তাঁর ছেলেদের নামও জানান। ছেলেদের নাম টিঙ্কু প্রামাণিক, মনোজ প্রামাণিক। তাঁরা পেশায় মাছ ব্যবসায়ী।
ভাটপাড়া থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ভাটপাড়া পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবপ্রসাদ সরকার ও এলাকার বাসিন্দা,কাউন্সিলার। ভাটপাড়া থানার পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হসপিটালে। ভাটপাড়া থানার পুলিশ ওই বৃদ্ধার বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করে দেখছে। এই অমানবিকতায় হতবাক এলাকার বাসিন্দারা। বৃদ্ধা যা যা দাবি করছেন, তা যদি সত্যি হয়, তা রীতিমতো শিউরে ওঠার মতো। আপাতত বৃদ্ধার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। বৃদ্ধার বলা ঠিকানায় খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। এখনও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি পুলিশ।