ব্যারাকপুর: শনিবার বেলঘরিয়ায় এক ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। কোনওক্রমে এ যাত্রায় রক্ষা পেয়েছেন ব্যবসায়ী। গতকালের ঘটনার পর আজ দুপুরে ব্যবসায়ীর বাড়ি যান বিজেপি নেতা অর্জুন সিং। গতকালই টিটাগড়ের দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগে সরব হয়েছিলেন অর্জুন সিং। এরপর আজ বিকেলে পুলিশমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে সরব ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী। গুলি চলার ঘটনা ও রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে অর্জুন সিং বলেন, ‘পুলিশমন্ত্রীর অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। ছেড়ে দেওয়া উচিত। ওঁর ভাইপোর কাছে দিয়ে দিন, সক্ষম আছেন ভাইপো।’
ব্যারাকপুরের দাবাং নেতা অর্জুন সিংয়ের একাধিকবার দলবদলের ইতিহাস রয়েছে। কখনও ঘাসফুল ছেড়ে পদ্মে, আবার কখনও পদ্ম ছেড়ে ঘাসফুলে। লোকসভা ভোটে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন অর্জুন। বিজেপির থেকে টিকিট পান। কিন্তু ভোটে পরাস্ত হয়েছেন। পার্থ ভৌমিকের কাছে পরাজয়ের পর অর্জুন সিংয়ের মুখে এই মন্তব্য বেশ শোরগোল ফেলে দিয়েছে রাজ্য রাজনীতির অন্দরমহলে। ওই মন্তব্যের পর অর্জুন সিংয়ের আরও সংযোজন, ‘তিনি (পুলিশমন্ত্রী) তো কিছুই করতে পারছেন না, ভাইপোই করুক। ভাইপোর জন্য তো তিনি অনেক কিছু করেছেন, ভাইপোকে দিয়ে দিন।’
অর্জুন সিংয়ের এমন মন্তব্য ঘিরে যখন বিভিন্ন গুঞ্জন শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে, তখন এই নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও। শুভেন্দুর বক্তব্য, ‘অর্জুন সিংয়ের অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। তিনি যা বলেছেন নিজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বলেছেন।’
তবে ব্যারাকপুরের পরাজিত বিজেপি প্রার্থীর এমন মন্তব্য মোটেই ভালভাবে দেখছেন না তৃণমূল নেতা শান্তনু সেন। অর্জুন সিং যে পুলিশমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন, তার বিরোধিতা করে শান্তনু সেন বলেন, “দেশের অন্যতম সফলতম মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশমন্ত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কারণেই এনসিআরবির তথ্য অনুযায়ী, আজকের দিনেও ভারতের অন্যতম নিরাপদ রাজ্যের নাম পশ্চিমবঙ্গ এবং দেশের অন্যতম নিরাপদ শহরের নাম কলকাতা।”
একইসঙ্গে দলবদলু নেতাকে কটাক্ষও করতে ছাড়েননি শান্তনু সেন। তিনি বলেন, “যারা টিকিট না পেয়ে অন্য দলে গিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে চেষ্টা করেছিলেন ভোটে জেতার, মানুষ তাঁদের প্রত্যাখ্যান করেছেন। হার মেনে নিতে হবে। এসব কথা বলে তৃণমূলের অন্দরে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করে মূর্খের স্বর্গে বাস করবেন না। তৃণমূল একটি ঐক্যবদ্ধ পরিবার, যার নেত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেনাপতির নাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।”