উত্তর ২৪ পরগনা: কিছুদিন আগে নদিয়ার একটি স্কুলে দুই শিক্ষকের মারামারির ভিডিয়ো ভাইরাল হয় সোশাল মিডিয়ায়। যা নিয়ে রীতিমত হইচই শুরু হয়। আরও একবার স্কুলের ভিতর দুই শিক্ষকের মারামারির অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। এবার উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা। অভিযোগ, শুক্রবার দেগঙ্গার হাজি আবদুল আলি স্মৃতি এমএসকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাঁর এক সহ-শিক্ষককে মেরে নাক ফাটিয়ে দেন। রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেয় শুয়ে ছটফট করতে থাকেন ওই শিক্ষক। ক্লাসরুম ভেসে যায় রক্তে। মাস্টারমশাইদের মধ্যে এমন হাতাহাতি দেখে ভয়ে ছোটাছুটি শুরু করে ছেলেমেয়েরা। দেগঙ্গা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাজিতপুর উত্তরপাড়ার এই স্কুলের ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়।
অভিযোগের আঙুল স্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়দেব ঘোষের দিকে। অভিযোগ, জয়দেব ঘোষ তাঁর সহ-শিক্ষক কার্তিক পালকে বেধড়ক মারধর করেন। চড় চাপাটির পাশাপাশি নাকে, মুখে চলতে থাকে ঘুসিও। এরপরই ফিনকি দিয়ে রক্ত ছোটে কার্তিক পালের নাক থেকে। হইচই এতটাই জোরাল ছিল, গ্রামের লোকজনের কানেও তা পৌঁছয়। ছুটে আসেন তাঁরা। অভিযোগকারী কার্তিক পালকে দেগঙ্গার বিশ্বনাথপুর হাসপাতালে নিয়ে যান এলাকার লোকজনই। কিন্তু শিক্ষক কার্তিক পালের অবস্থা খারাপ হওয়ায় সেখান থেকে বারাসত হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
অভিযোগকারী শিক্ষক কার্তিক পালের কথায়, বহুদিন ধরেই তিনি অসুস্থ। শরীর ভাল নয় তাঁর। তবু রোজই স্কুলে আসেন তিনি। কার্তিকবাবু বলেন, “পুজোর আগে থেকে আমার শরীরটা খারাপ। ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে পায়েও ভীষণ যন্ত্রণা। আমি ওনাকে বলি দেড়টার সময় আমি স্কুল থেকে চলে যাব। আমার ডাক্তার দেখাতে হবে। উনি ছিলেন না, ওনাকে আমি ফোনেই জানাই টিফিন শুরু হবে দেড়টায়, তখনই বেরিয়ে যাব। উনি আমাকে পাল্টা বলেন, ছাড়বেন না। অন্যদিকে ওনার কাছে আমি ৫০ হাজার টাকাও পাই। ২ বছর হয়ে গেল সেই টাকা ফেরত দেননি। আমি বারবার বলি, চিকিৎসার জন্য এখন আমার টাকা দরকার। আমি আজ সাড়ে ১০টা নাগাদ স্কুলে পৌঁছই। উনি ১০টা ৪০ নাগাদ স্কুলে ঢোকেন। এসেই আমার উপর হম্বিতম্বি শুরু করে। কেন আমি বৃহস্পতিবার স্কুলে এলাম না, তা নিয়ে। বলেই আমাকে মারতে শুরু করে। নাকে ঘুসি মেরে ফাটিয়ে দেয়।”
যদিও অভিযুক্ত শিক্ষক জয়দেব ঘোষ বলেন, “আমি একদমই মারিনি। ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। উনি পড়ে যান। তাতেই রক্তারক্তি। উনি রোজই বলেন দেড়টার সময় স্কুল থেকে চলে যাব। উনি আমাকে ফোনে গালাগালিও দেন। আমার ফোনে সব রয়েছে। আজ স্কুলে ঢুকতেই আঙুল তুলে আমার দিকে ধেয়ে আসেন। আমাকে একটা ঘুসি মারেন। তাতেই ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। উনি পড়ে যান বেঞ্চের উপর।” এদিকে ঘটনার খবর পেয়েই স্কুলে পৌঁছন দেগঙ্গা থানার পুলিশ। অভিযুক্ত জয়দেব ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়। অভিভাবকরাও এই ঘটনায় প্রধান শিক্ষক জয়দেব পালের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন।
আরও পড়ুন: Kolkata Book Fair 2022: আনুষ্ঠানিকভাবে গিল্ডের হাতে ‘বইমেলা প্রাঙ্গণ’ তুলে দিল রাজ্য সরকার