উত্তর ২৪ পরগনা: বাড়িতে স্ত্রীয়ের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল। ঝগড়ার মধ্যেই দাঁ হাতে তুলে ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। বছর দশেকের ছেলেও তা দেখেছিল। তারপরই স্ত্রীয়ের বাপেরবাড়ি থেকে খবর আসে স্ত্রীয়ের বিধবা দিদির মৃত্যু হয়েছে। সারা দেহ তাঁর ক্ষত বিক্ষত। রক্তবন্যা বয়ে যাচ্ছে! তখনই সন্দেহ প্রকট হয়েছিল, এ কাজ কার হতে পারে! উত্তর ২৪ পরগনার হৃদয়পুরের আপনপল্লির মাঝবয়সী এক বিধবার রহস্যমৃত্যুতে গ্রেফতার করা হল তাঁরই বোনের স্বামীকে। নেপথ্যে কী কারণ থাকতে পারে, তা নিয়ে খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
সোমবার বাড়ি থেকেই রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় শম্পা সরকার নামে বছর পঁয়তাল্লিশের ওই মহিলার। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ওই মহিলার দেহ উদ্ধার করে। দেহ দেখেই পুলিশ ধারণা করেছিল, ধারালো কোনও অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে।
এদিকে, ঘটনার পর থেকেই মৃত মহিলার বোনের স্বামী জয়দেব সাহা পলাতক ছিলেন। প্রথম থেকেই পরিবারের সদস্যরা এই খুনের ঘটনায় জয়দেব সাহার জড়িত থাকার সম্ভাবনার কথা বলে আসছিলেন।
জয়দেব বারাসতের রামকৃষ্ণপল্লির বাসিন্দা। তাঁর স্ত্রী স্বপ্নার বয়ান অনুযায়ী, সোমবার তাঁদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি হয়। এর আগেও মাঝেমধ্যে তাঁদের মধ্যে অশান্তি হয়েছে। এদিনের অশান্তির মাঝেই আচমকা জয়দেব বাড়ি থেকে একটি দাঁ নিয়ে বেরিয়ে যান। ছেলেও বিষয়টি দেখে।
জয়দেব কোনও অনর্থ করতে পারেন ভেবে তাঁর পিছু নেন স্ত্রীও। তবে তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। ঘন্টা তিনেক পরে হৃদয়পুর আপনপল্লির বাপের বাড়ি থেকে খবর আসে, তাঁর বিধবা দিদি শম্পা সরকার খুন হয়েছেন।
খবর পেয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। পরিবারের সদস্য়দের সঙ্গে কথা বলেন। তদন্তকারীরা কথা বলেন প্রতিবেশীদের সঙ্গেও। ঘটনার পর্যায় অনুসরণ করে পুলিশের সন্দে হয় জয়দেবের ওপরেই। রাতেই গ্রেফতার করা হয় জয়দেবকে।
এক প্রতিবেশীর কথায়, “শুনলাম বাড়ি থেকে অশান্তি করে জয়দেব দাঁ নিয়ে ছুট লাগায়। ওঁর স্ত্রীও দৌঁড়েচ্ছিল। কিন্তু ধরতে পারেনি। রাগের মাথায় কিছু একটা করে থাকতেই পারে। তবে এসব তো অনুমানের ভিত্তিতে বলা যায় না। ওঁদের পরিবারের কী নিয়ে অশান্তি হত ওতো বাইরে থেকে বোঝা যেত না, শ্যালিকাকেই কেন খুন করতে গেলেন, তাও ধোঁয়াশা। পুলিশ তদন্ত করছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, খুনের ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে জেরা করা হচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ জয়দেবের দিকেই ছিল। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে রীতিমতো স্তম্ভিত জয়দেবের স্ত্রী। কোনও কিছুই খোলসা করে বলেননি তিনি। তবে বারবারই বলছেন পারিবারিক অশান্তি ছিল। সেক্ষেত্রে কোনও বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের ব্যাপার আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আরও পড়ুন: সাইকেলগুলো এই ছেলেটাই চুরি করছে! সন্দেহের বশে চলল গণপিটুনি