বারাকপুর: গত সোমবারই নয়াদিল্লিতে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছেন অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত (Kangana Ranaut)। গায়ক আদনান সামি, পরিচালক করণ জোহর, একতা কাপুরের মতো ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে দেশের সর্বোচ্চ অসামরিক এই পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন অভিনেতা। আর শনিবার পদ্মশ্রী সম্মানিত কঙ্গনার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়ের হল থানায়। এদিন টিটাগড় থানায় অভিনেতার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করলেন আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী।
কিন্তু কী নিয়ে কঙ্গনার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ?
পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত হওয়ার পরপরই এক সাক্ষাৎকারে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কঙ্গনা রানাউত মন্তব্য করেন, “১৯৪৭ সালে ভারতকে স্বাধীনতা নয়, ভিক্ষা দেওয়া হয়েছিল। আসল স্বাধীনতা এসেছে ২০১৪ সালে।” অর্থাৎ, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচিত হওয়া এবং তাঁর সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়াকেই অভিনেত্রী ‘আসল’ স্বাধীনতা হিসাবে বর্ণনা করেছেন। আর এ নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ইতিমধ্যেই কঙ্গনার মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন বরুণ গান্ধীরা। এবার দেশদ্র্রোহিতার অভিযোগে অভিনেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হল টিটাগড় থানায়।
কঙ্গনার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ টিটাগড় থানায় মামলা দায়ের করা আইনজীবীর দাবি, অভিনেতা দেশের সংবিধানকে অবমাননা করেছেন। শুধু তাই নয়, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অপমান করেছেন উনি। তাই তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা দায়ের করেছেন বলে জানলেন আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী। তিনি বলেন, “ভারতবর্ষের একজন নাগরিক হয়ে কঙ্গনার টিভি চ্যানেলের এই সাক্ষাৎকার মেনে নেওয়া যায় না। এটা দেশের মানুষের অপমান। এই জন্য ১২৪এ, ১৫৩এ, ১৫৩বি, ২৯৫এ, ৫০৪ এবং ৫০৫ -এইসব ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে টিটাগড় থানার মামলা করেছি।”
কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী আগেও এ রাজ্যে কঙ্গনার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কে একটি মন্তব্য করায় উত্তর কলকাতার এক থানায় মামলা দায়ের হয় কঙ্গনার নামে। টিটাগড় থানা আইনজীবীর অভিযোগ গ্রহণ করেছে বলে খবর।
উল্লেখ্য, বারবার বিভিন্ন প্রসঙ্গে মন্তব্য করে বিতর্কের মুখে পড়েছেন কুইন অভিনেতা। তবে তাঁর এবারের মন্তব্য আলাদা করে আলোড়ন তুলেছে। ১৯৪৭-এ ভারত স্বাধীনতা নয়, ভিক্ষা পেয়েছিল মন্তব্যের প্রেক্ষিতে অভিনেত্রীর বিরুদ্ধেই সরব হয়েছেন বিজেপি নেতারাও। গত বৃহস্পতিবারই এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কঙ্গনা রানাউতের মনোভাবকে ‘পাগলামি’, ‘দেশদ্রোহ’ বলে কটাক্ষ করেছেন সাংসদ বরুণ গান্ধী।
বলেছেন, তা একপ্রকার স্পষ্ট। অভিনেত্রীর এই মন্তব্যের পরই দেশজুড়ে বিতর্কের ঝড় ওঠে। নেটিজেনদেরও নেক-নজরে পড়েছেন অভিনেত্রী। আরেক বিজেপি নেতা প্রবীণ শঙ্কর কাপুরও কঙ্গনার এই মন্তব্যের প্রবল সমালোচনা করেন। এদিকে তৃণমূল বিধায়ক তথা লেখক মনোরঞ্জন ব্যাপারী এক ফেসবুক পোস্টে কটাক্ষ করেন, তাঁকেও পদ্মশ্রী দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল একবার। কিন্তু যে সম্মান কঙ্গনাকে দেওয়া হয়, তা তিনি চান না।