Post Poll Violence: ধরা পড়েনি কেউই, উলটে জুটছে খুনের হুমকি! ক্ষোভ উগরাতে সিবিআই দফতরে নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিতের দাদা
Post Poll Violence: সিবিআই কর্তাদের কাছে অনুরোধ করবেন, তার নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য। পাশাপাশি এই খুনের মামলায় দ্রুত যাতে তাঁর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়, সেই ব্যবস্থা করার আবেদন জানাবেন।
কলকাতা: তদন্তভার নেওয়ার পর এত দিনেও হয়নি কোনও গ্রেফতারি। উল্টে জুটছে খুনের হুমকি। এবার ক্ষোভ উগরে দিতে সিবিআই দফতরের দ্বারস্থ হবেন ভোট পরবর্তী হিংসায় খুন হওয়া অভিজিৎ সরকারের দাদা বিশ্বজিৎ। আজ, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় সিবিআই দফতরে যাবেন।
সিবিআই কর্তাদের কাছে অনুরোধ করবেন, তার নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য। পাশাপাশি এই খুনের মামলায় দ্রুত যাতে তাঁর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়, সেই ব্যবস্থা করার আবেদন জানাবেন। কারণ তিনি অন্যতম সাক্ষী, তাঁর জবানবন্দি গুরুত্বপূর্ণ। খুনে হয়ে যেতে পারেন, এই আশঙ্কা করছেন বিশ্বজিত্। তাই আগেই তিনি তাঁর গোপন জবানবন্দি দিতে চাইছেন।
মামলা প্রত্যাহার না করলে খুন করার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ তুলেছেন বিশ্বজিৎ সরকার। ঘটনায় বৃহস্পতিবার লালবাজারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভোট পরবর্তী হিংসায় নিহত অভিজিৎ সরকারের দাদা বিশ্বজিৎ।
কাঁকুরগাছি অভিজিত্ সরকার ‘খুনে’র ঘটনায় ততপর সিবিআই। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই। চার অভিযুক্তের বাড়িতে অক্টোবরের শুরুতেই হানা দিয়েছে সিবিআই। পলাতক অভিযুক্তদের ওপর চাপ বাড়াতেই সিবিআইয়ের এই কৌশল।চার অভিযুক্তের বাড়িতে পৌঁছে যান তদন্তকারীরা। ওই চার জনের নাম রয়েছে চার্জশিটে। চার জনের বিরুদ্ধেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। তিন অভিযুক্তকেই বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তাঁরা কোথায় গিয়েছেন, তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় পরিবারের সদস্যদের।
প্রসঙ্গত, সেপ্টেম্বরেই চার্জশিট জমা করেছে সিবিআই। ২০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা করা হয়েছে। ভোট গণনার পরের দিনই মৃত্যু হয় বেলেঘাটার বাসিন্দা বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের। তদন্তের স্বার্থে তাঁর দেহ সৎকার করা হয়নি। ১৩৬ দিন পর সৎকারের অনুমতি পায় পরিবার।
ভোটের দিন গলায় তার পেঁচানো উদ্ধার হয় অভিজিৎ সরকারের মৃতদেহ। তাঁর পরিবার প্রথম থেকেই দাবি তোলে, বিজেপি করার অপরাধে অভিজিৎকে খুন করা হয়েছে। একই সঙ্গে এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলে নিহতের পরিবার।
সম্প্রতি অভিজিৎ সরকারের এই মোবাইল ফোন নিয়ে সিবিআই দফতরে গিয়েছিলেন দাদা বিশ্বজিৎ। বিশ্বজিতের বক্তব্য, অভিজিৎ সম্ভবত আগেই বুঝতে পেরেছিলেন, তিনি খুন হতে পারেন। সেই জন্যই নিজের মোবাইল ফোন লুকিয়ে রেখেছিলেন বলে মনে করছেন বিশ্বজিৎ। সূত্রের খবর, মোবাইল ফোনে অভিজিতের মৃত্য়ুর আগের মুহূর্তের বেশ কিছু ভিডিয়ো রয়েছে। সেগুলি তদন্তকারীদের কাজে লাগতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্বজিৎ। সেই ভিডিয়ো নিয়েই সম্প্রতি সিবিআই দফতরে হাজির হন তিনি।
সিবিআই তদন্ত ভার নেওয়ার পর থেকেই এই ঘটনায় একাধিকবার অভিজিতের দাদা বিশ্বজিৎ সরকারের সঙ্গে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। কখনও বিশ্বজিতের বাড়িতে গিয়েছেন তাঁরা। কখনও আবার নিজাম প্যালেস কিংবা সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হয়েছেন বিশ্বজিৎ নিজে।
সেপ্টেম্বরেই ৫ তারিখেই অভিজিতের বাড়িতে যান সিবিআই আধিকারিকরা। অভিজিতের মায়ের বয়ান রেকর্ড করা হয়। দীর্ঘ কয়েক মাস লাশকাটা ঘরে পড়েছিল অভিজিতের দেহ। শেষে ডিএনএ রিপোর্টে দেখে ভাইয়ের শ্রাদ্ধের ব্যবস্থা করেছেন দাদা। সেপ্টেম্বরে তাঁর শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হয়। পরিবারেরও অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হাতেই খুন হয়েছেন অভিজিৎ। প্রমাণ ধামাচাপা দিতে পুলিশের সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে বলেও অভিযোগ পরিবারের। এই টানাপোড়েনেই গত কয়েক মাস ধরে মর্গে পড়েছিল অভিজিতের দেহ। তবে শেষমেশ ডিএনএ রিপোর্ট পাওয়ার পর দেহ দাহ এবং শ্রাদ্ধপর্ব সারেন অভিজিতের দাদা বিশ্বজিৎ সরকার। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তি না পাওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে বলে আগেই অভিজিতের পরিবারকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা।
বিশ্বজিত্ এই মামলায় সিবিআই-এর প্রধান হাতিয়ার। তাই এই তাঁকেই এবার খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
আরও পড়ুন: Gariahat Double Murder: ড্রেন-খাল থেকে উদ্ধার সুবীর চাকির একাধিক কার্ড, কাকুলিয়া খুনে নয়া তথ্য