উত্তর ২৪ পরগনা: বিশ্বাস করে নিজের মেয়েকে ‘স্যরের’ কাছে পাঠিয়েছিলেন শেখর ঘোষ। মেয়েকে কম্পিউটার শেখাবেন। নিজেও কম্পিউটার শিখেছেন ‘শঙ্কর স্যরের’ কাছেই। কিন্তু, সেই শিক্ষকই যে এমন কাজ করবেন তা ভাবতেও পারেননি ঘোষ দম্পতি। নাবালিকা মেয়েকে কম্পিউটার ট্রেনিং ক্লাসে শ্লীলতাহানির (molestation) অভিযোগ তুলে শিক্ষকের বিরুদ্ধে অশোকনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন শেখর ঘোষ।
নির্যাতিতা নাবালিকার বাবা শেখর ঘোষের অভিযোগ, বিগত দুইবছর ধরে বল্লভপুরের একটি কম্পিউটার সেন্টারে প্রশিক্ষণ নিতে যেত ওই কিশোরী। প্রবীণ শিক্ষক শঙ্কর বল্লভ এলাকায় কম্পিউটার প্রশিক্ষক বলেই পরিচিত। খোদ শেখরবাবুও শঙ্কর বল্লভের শিক্ষক ছিলেন। তাই সরল বিশ্বাসেই মেয়েকে পাঠাতেন ওই ট্রেনিং সেন্টারে। অভিযোগ, শুক্রবার ওই নাবালিকা ক্লাস করতে গেলে তার উপর শারীরিকভাবে জোর খাটানোর (molestation) চেষ্টা করেন শঙ্কর বল্লভ। এমনকী তার গায়ে হাত দেন বলেও অভিযোগ। বাড়ি ফিরে ওই নির্যাচতিতা কিশোরী সব কথা খুলে বলতেই অভিযুক্ত শিক্ষকের বাড়িতে যান শেখরবাবু ও তাঁর স্ত্রী। কিন্তু, তাঁদের একরকম বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপর, ওই রাতেই নির্যাতিতার পরিবারের তরফে অশোকনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। ওই রাতেই, অভিযুক্ত শঙ্কর বল্লভকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
চোখের জল ফেলতে ফেলতে শেখরবাবু বলেন, “শঙ্করবাবু আমারও মাষ্টারমশাই ছিলেন। তিনি যে এমন কাজ করতে পারেন কখনও ভাবতেও পারিনি। মেয়ে এর আগে কয়েকবার এসে বলেছিল যে স্যর নাকি ওর হাত ধরেন, গাল টিপে দেন, চুলে হাত দেন এমনকী হাতেও একদিন চুমু খেয়েছেন। আমরা ভেবেছি, ও অনেক ছোট। তাই ভালোবেসে কন্যাসম স্নেহেই হয়ত অমন করে থাকেন স্যর। কিন্তু, শুক্রবার আমার মেয়ের সঙ্গে যা হয়েছে তা আমি ভাবতেও পারিনা। আমার মেয়ের গায়ে যেখানে সেখানে হাত দিয়েছে। আমার মেয়ে বারণ করা সত্ত্বেও ওর প্রাইভেট পার্টসেও হাত দিয়েছে। চূড়ান্ত অসভ্যতামি করেছে। শিক্ষক বলতেও ঘেন্না হয় আমার। আমি চাই না আর কোনও মেয়ের সঙ্গে এমন হোক, তাই আজ থানায় এসেছি।”
অশোকনগর পুলিশ জানিয়েছে, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পকসো আইনে মামলা রুজু করে অভিযুক্তকে শনিবার বারাসাত আদালতে তোলা হয়েছে। আরও পড়ুন: ‘একটা নাইটি চেয়েও পায়নি মেয়ে, জামাই খালি টাকা নিয়েছে’, বধূর রহস্যমৃত্যুতে তোলপাড় হাড়োয়া