Panihati Murder: জামাই ‘অপহরণ’ কাণ্ডে ২২ দিন পর পানশালার জলাশয় থেকে উদ্ধার যুবকের গলাকাটা দেহ
Panihati: ঘটনার সূত্রপাত হয় চলতি মাসের ১৭ তারিখে। পানিহাটি পুরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের নেতাজি সুভাষ রোডের বাসিন্দা শুভজ্যোতি বোস।
পানিহাটি: শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার জন্য ডেকে পাঠিয়েছিলেন স্ত্রী। সেই মোতাবেক গিয়েওছিলেন যুবক। তারপর থেকেই নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। পরে একদিন ফোন করে বাড়িতে জানান, তাঁর উপর অত্যাচার করছে শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। এরপর বন্ধ হয়ে যায় ফোন। আর যোগাযোগ করা যায়নি তাঁর সঙ্গে। সেই ঘটনায় এবার চাঞ্চল্যকর মোড়। দীর্ঘ ২২ দিন পর উদ্ধার হল নিখোঁজ হওয়া যুবকের দেহ। গলাকাটা অবস্থায় ওই যুবককের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে খবর দেওয়া হয় পরিবারের সদস্যদেরও। তাঁরাই এসে শনাক্ত করেন যুবককে। গোটা ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে পানিহাটি এলাকায়।
কী ঘটেছে?
ঘটনার সূত্রপাত হয় চলতি মাসের ১৭ তারিখে। পানিহাটি পুরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের নেতাজি সুভাষ রোডের বাসিন্দা শুভজ্যোতি বোস। তাঁর সঙ্গে ১৩ ই মার্চ বিয়ে হয় হুগলির উত্তরপাড়ার বাসিন্দা পূজা রায়ের। বিয়ের সাতদিন পরেই শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে তাঁর দিদির সঙ্গে হুগলি উত্তরপাড়ায় চলে যান পূজা। অনেক দিন হয়ে যাওয়ার পরও পূজা বাড়ি না ফেরায় শুভজ্যোতি ফোন করেন তাঁকে। যুবকের পরিবারের দাবি, এরপর গত মাসে অর্থাৎ ১ এপ্রিল শুভজ্যোতিকে তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা ফোন করে ডেকে পাঠান। সেই মতোই শুভ্রজ্যোতিকে বাড়িতে বলেন যে, তিনি শ্বশুরবাড়ি উত্তরপাড়ায় যাচ্ছেন। একদিন সেখানে থেকে পরের দিনই বাড়িতে ফিরবেন।
অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট দিনে বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা শুভ্রজ্যোতিকে ফোন করেন। কিন্তু ছেলের ফোন সুইচ অফ বলায় চিন্তা হয় তাঁদের। এ দিকে, পূজার বাড়িতে ফোন করা হলেও কেউ ফোন ধরেননি বলে খবর। এরপর ৬ তারিখ শুভজ্যোতি তাঁর বাড়িতে ফোন করে জানায়, তাঁকে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন আটকে রেখে অত্যাচার করছে। সে ভাল নেই।
এরপরই খড়দহ থানায় শুভ্রজ্যোতি বোসের পরিবারের লোকজন অভিযোগ দায়ের করেন। পরপর তিন বার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু ষোলো দিন কেটে গেলেও খড়দহ থানার পুলিশ কোনও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেনি বলে অভিযোগ পরিবারের লোকজন। মঙ্গলবার পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে শুভ্রজ্যোতি বোসের বাড়ির সামনে স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের সাফ দাবি, খড়দহ থানার পুলিশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করে শুভ্রজ্যোতি বোসকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসুক। এবং যাঁরা তাঁকে আটকে রেখে অত্যাচার করছে অর্থাৎ পূজার বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক।
তারপর কেটে গিয়েছে আরও একটা সপ্তাহ। ছেলে না পেয়ে পাগল-পাগল অবস্থা বাবা মায়ের। এরপর আজ একটি পানশালার পিছনের জলাশয় থেকে গলা কাটা অবস্থায় শুভ্রজ্যোতির মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এই বিষয়ে এলাকাবাসী বলেন, ‘গতকাল রাত্রিবেলা একটা নাগাদ শ্রীরামপুর থানার পুলিশ ফোন করে। তারপর জানায় যে একটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। আমরা গিয়ে শনাক্ত করি মৃতদেহ।’এরপর এলাকাবাসী পুলিশের নিষ্কৃয়তার অভিযোগ তুলে বলেন, ‘যদি পুলিশ আরও আগে থেকে সক্রিয় হত তাহলে এই দিন আমাদের আর দেখতে হত না।দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই।’