R G Kar: ‘আদালতে শুনানির মাঝেই আমাদের এসব বললেন, বিচারপতি সব শুনেছেন…’, হাইকোর্টে এজলাসে তিলোত্তমার মা-বাবার কী অভিজ্ঞতা হল?
R G Kar: সোমবার আরজি কর মামলায় হাইকোর্টে শুনানির পর সিবিআই-এর ওপর কিছুটা হলেও চাপ বেড়েছে বলে দাবি করলেন তিলোত্তমার বাবা। তিনি জানান, বিচারপতি সিবিআই-এর কাছে তিনটে প্রশ্ন রেখেছেন। সেই উত্তরগুলো শুক্রবার সিবিআই-কে আদালতে দিতে হবে।

উত্তর ২৪ পরগনা: হাইকোর্টে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে শুনানির মাঝেই তাঁদের ওপর চাপ তৈরি করা হয়েছিল। বিস্ফোরক দাবি করলেন তিলোত্তমার বাবা-মা। তিলোত্তমার বাবা বললেন, “আমরা এখন কী করতে পারি, আমাদের সে পরামর্শ দিচ্ছিলেন রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্য়োপাধ্যায়। আমরা কেন হাইকোর্টে মামলা করলাম, সে পরামর্শও দিচ্ছিলেন। বিচারপতি সব শুনেছেন।”
সোমবার আরজি কর মামলায় হাইকোর্টে শুনানির পর সিবিআই-এর ওপর কিছুটা হলেও চাপ বেড়েছে বলে দাবি করলেন তিলোত্তমার বাবা। তিনি জানান, বিচারপতি সিবিআই-এর কাছে তিনটে প্রশ্ন রেখেছেন। সেই উত্তরগুলো শুক্রবার সিবিআই-কে আদালতে দিতে হবে। তিলোত্তমার বাবার কথায়, “হাইকোর্টের বিচারপতি আমাদের সাবমিশনগুলো সব শুনেছেন। সিবিআই-এর কাছে তিনটে প্রশ্ন বিচারপতি রেখেছেন। সেই তিনটে প্রশ্নের উত্তর ও কেস ডায়েরি নিয়ে শুক্রবার দিতে হবে।”
তিলোত্তমার বাবা বলেন, “শিয়ালদহ আদালতে সিবিআই-এর আইনজীবীরা যে বিরোধিতা করছিলেন আমাদের, হাইকোর্টে তা করতে পারেননি, সেই মাত্রা কমে গিয়েছে।” তিলোত্তমার বাবা-মায়ের বিস্ফোরক অভিযোগ, একটা সময়ে সিবিআই-এর তরফেও তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা চলেছিল, যে সঞ্জয় রাই একাই অপরাধী। তবে কেবল সিবিআই-এর ওপরে নয়, হাইকোর্টের এই শুনানিতে যে রাজ্যের ওপরেও চাপ বেড়েছে, তা বললেন তিলোত্তমার বাবা।
প্রসঙ্গত, বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের কাছে রাজ্যের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, নতুন কোনও তদন্তে রাজ্যের আপত্তি নেই। তবে তাঁর প্রশ্ন, “আদালত কী ট্রায়ালের পর কাউকে ফের তদন্তের কথা বলতে পারে? ট্রায়াল কোর্টের কাছে যাননি।” এই বিষয়টি নিয়ে তিলোত্তমার বাবাও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “আমাদের মামলায় রাজ্য সরকারকে পার্টি করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের থেকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় যে সমস্ত কথা বলেছেন, তাতে মনে হয় রাজ্যের ওপরেও চাপ সৃষ্টি হয়েছে। রাজ্য বলছে, পুনরায় তদন্ত হোক, তাদের আপত্তি নেই। এটা বলার পরই বলছে, কনভিকশন হয়ে যাওয়ার পরও কীভাবে পুনরায় তদন্ত করা যায়? আমরা কেন হাইকোর্টে গেলাম, কেন বিশেষ আদালতে গেলাম না, সে প্রশ্নও রেখেছেন। কোর্টের ভিতরেই আমাদের এসব বলেছেন। বিচারপতি সব শুনেছেন।”
মামলা ‘সুপ্রিম’ নির্দেশে হাইকোর্টে আসতেই তিলোত্তমার বাড়িতে এসে বাবার হাতে ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে যান স্বাস্থ্যসচিব। প্রায় সাড়ে সাত মাস ধরে এই ডেথ সার্টিফিকেটের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরেছিলেন তিলোত্তমার বাবা-মা। রাজ্যের হাসপাতালের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তারা দিতে পারবে না। দিল্লি পর্যন্ত পৌঁছেছিলেন তিলোত্তমার বাবা-মা। দেখা করেছিলেন সিবিআই- ডিরেক্টরের সঙ্গেও। রাজ্যের দেওয়া সেই ডেথ সার্টিফিকেট নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বাবা। তিনি বলেন, “ডেথ সার্টিফিকেট নিয়েও বেশ কিছু প্রশ্ন হয়েছে। কারণ বেশ কিছু নথি লাগে, ৪ নম্বর ফর্ম লাগে, সেগুলো আমাদের বাড়ির ড্রয়ারেই পড়ে রয়েছে। কিন্তু সব করে ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার মানে নামেই সব পোর্টাল, সব নিয়ন্ত্রণ করে রাজ্য সরকার।” এই বিষয়গুলোও তিনি হাইকোর্টে বিচারপতির নজরে আনবেন বলে জানিয়েছেন। আগামী ২৮ মার্চ পরবর্তী শুনানি।

