বনগাঁ: দূর থেকেই চালক দেখছিলেন ষাঁড় রেললাইন পার হচ্ছে। হর্নও বাজিয়েছিলেন চালক। এক টানা। ততক্ষণে ট্রেনও কাছে চলে আসে। ব্রেক কষা সম্ভব ছিল না। ষাঁড়টাকে সজোরে ধাক্কা ট্রেনের। রক্তাক্ত অবস্থায় লাইন থেকে বেশ কিছুটা দূরে ছিটকে পড়ে ষাঁড়টি। মৃত্যু হয় তার। তবে এটাও খবর, ষাঁড়টিকে ধাক্কা মেরে বিকল হয়ে পড়ে ট্রেনটিও। ট্রেনে দেখা দেয় যান্ত্রিক গোলোযোগ। ট্রেন থেমে থাকে লাইনের ওপরেই। ঘণ্টা পেরিয়ে যায়। রেলের চাকা গড়ায় না এক ফোঁটাও। পিছনের স্টেশনগুলিতে ততক্ষণে ট্রেনের লাইন বাড়তে থাকে। সপ্তাহের শুরুতেই ভয়ঙ্কর বিভ্রাট বনগাঁ লাইনের সংহতি স্টেশনে। ডাউন মাঝেরহাট লোকাল আসছিল। সকাল ৭-১৫ মিনিটে বনগাঁ থেকে ছাড়ে। সময়েই ছিল ট্রেন। সংহতি স্টেশন ছাড়ার পরই বিপর্যয়। প্ল্যাটফর্মে ছেড়ে কিছুদূর এগোতেই ট্রেন ধাক্কা মারে ষাঁড়টিকে।
রেলের যাত্রীরা জানাচ্ছেন, চালক ব্রেক কষেছিলেন। তবে সেটা যে ভয়ঙ্কর ছিল, তেমনটা নয়। যাত্রীদের মধ্যে ট্রেনের সজোরে ব্রেক কষার তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি। ট্রেনটা থেমে যাওয়ার পর প্রথমে যাত্রীরা বুঝতেই পারেননি কী হয়েছে। সিগন্যালে দাঁড়িয়েছে ট্রেন, তেমনটা ভেবেছিলেন। সময় পেরলেও ট্রেন না চলায় ভুল ভাঙে। বগি থেকে ততক্ষণে লাইনে নেমে পড়েন অনেক যাত্রী। তাঁরা লাইন ধরে এগিয়ে গিয়ে দেখেন, একটি ষাঁড় মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বিপদ বোঝেন তখনই। ভেবেছিলেন যাত্রীরা, ষাঁড়টির দেহ সরিয়ে নিলে ট্রেন চলবে। কিন্তু তখনও তাঁরা বোঝেননি, ট্রেনই যে বিকল পড়ে পড়েছে।
দত্তপুকুর স্টেশনে যাত্রীরা নেমে পড়েন। রেলের তরফে শুরু হয় মাইকিং। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ডাউন বনগাঁ-শিয়ালদা লাইনে একের পর এক ট্রেন দাঁড়িয়ে রয়েছে। স্টেশনে স্টেশনে কোন ট্রেন এক ঘণ্টা, কোনও ট্রেন ৪৫ মিনিট বা কোনও ট্রেন ৩০ মিনিট দাঁড়িয়ে আছে। অফিস সময়ে যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে।
রেলের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। ষাঁড়টির দেহও সরিয়ে নিয়ে যাওরা চেষ্টা চলছে। এক যাত্রী বললেন, “প্রথমে বুঝিনি কী হয়েছে। ভেবেছি ট্রেন সিগন্যালে আটকে। ট্রেন অবরোধে দাঁড়ায়, তবে ষাঁড়কে ধাক্কা মেরে ট্রেন খারাপ হয়ে যাওয়ার খবর আগে শুনিনি। এটা আমার প্রথম অভিজ্ঞতা।”
আরও পড়ুন: TMC Party Office: তৃণমূলের পার্টি অফিসে ‘মেয়ে নিয়ে আড্ডা, মদ-জুয়ার আসর’, বিস্ফোরক দলেরই কাউন্সিলর