AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Madan Mitra: ‘বাড়াবাড়ি করলে হাতের পাঞ্জা কেটে দেব’, প্রোমোটিং নিয়ে হুঁশিয়ারি মদনের, পরে বললেন, ‘সরি’

Kamarhati: "এই লড়াকু মনোভাব, এই পাঞ্জা কটে দেব বলাটা তো কোনও অশ্লীল কথা নয়, এটা আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে শিখেছি। এরকম লড়াকু মনোভাব আমাদের নেত্রীর থেকেই শেখা।" বললেন মদন

Madan Mitra: 'বাড়াবাড়ি করলে হাতের পাঞ্জা কেটে দেব', প্রোমোটিং নিয়ে হুঁশিয়ারি মদনের, পরে বললেন, 'সরি'
তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র (ফাইল ছবি)
| Edited By: | Updated on: Oct 17, 2021 | 7:28 PM
Share

উত্তর ২৪ পরগনা: বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারণে চর্চায় থেকেছেন তিনি। নিজের পরিচয় দেন ‘কালারফুল বয়’ বলে। তিনি কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। এ বার এলাকার বেআইনি প্রোমোটিংয়ের বিরুদ্ধে সরব হলেন বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা (Madan Mitra)। সম্প্রতি, নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে একটি ফেসবুক লাইভে  তিনি কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, “বাড়াবাড়ি দেখলে পাঞ্জা কেটে নেব।” পরে অবশ্য নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমাও চাইলেন তিনি, কিন্তু, হুঁশিয়ারি দেওয়া থেকে বিরত থাকেননি ‘এমএম’।

একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে কেন এমন মন্তব্য? TV9 বাংলার প্রতিনিধিকে ফোনে কামারহাটির বিধায়ক জানান, লাইভে তিনি নিজের পাঞ্জা কাটার কথা বলেছেন। অন্যের নয়। শুধু তাই নয়, তিনি ক্ষমা চেয়েছেন এই বলে, তাঁর মন্তব্য যদি কারুর লাগে তারজন্য দুঃখিত। তবে এলাকায় বেআইনি কাজ হতে দেবেন না বলেই দাবি করেছেন মদন। ফোনে তিনি বলেন, “আমি হাতের পাঞ্জা কেটে নেব মানে নিজের হাতের পাঞ্জা কেটে নেব বলেছি। হ্যাঁ, মানছি আমি আবেগের বশে বলেছি। কিন্তু নিজেরই তো পাঞ্জা কাটব। লোকে আমায় ভালবাসেন। তাই আমি পাঞ্জা কাটলে কেউ যদি খারাপ পান সেই জন্য বলেছি। আমি কথাটা উইথড্র করছি।”

বিতর্কের সূত্রপাত ঠিক কোথায়? কামারহাটিতে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছিলেন মদন মিত্র। সেইসময়ে একটি লাইভে এসে তিনি দাবি করেন কামারহাটির মেঘনাদ মাঠ বেদখল হয়ে যাচ্ছে। অন্যায়ভাবে সেখানে প্রোমোটিং করার ছক তৈরি হয়েছে। কিছু প্রোমোটার ছক করে এই অন্যায় কাজে সামিল হয়েছেন। এ প্রসঙ্গেই লাইভে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আমি মদন মিত্র বলছি। মেঘনাদ মাঠের দিকে হাত বাড়াবেন না। তিনজনের নাম ঘুরে ফিরে শুনছি। তৃণমূলে থেকে দলের নাম করে গুন্ডামি  চলবে না। প্যানক্রিয়াস হয়েছে, ক্যানসার হয়েছে, তাও লোভ যায় না। বেশি বাড়াবাড়ি করলে হাতের পাঞ্জা কেটে নেব।”

এখানেই থামেননি তৃণমূল নেতা। খেলার মাঠ ‘বাঁচাতে’ মুখ্য়মন্ত্রীর দোরগোড়াতেও যেতে পারেন বলে  সাফ জানিয়ে দেন তিনি। পাশাপাশি আরও জানান, মাঠের চাবি তাঁর কাছে। সেই চাবি তিনি পৌরসভায় জমা দেবেন। বাম আমলের দুর্নীতিকে প্রশয় দেবেন না বলেই স্পষ্ট দাবি করেন তৃণমূল নেতা।

মদন মিত্রের এ হেন অভিযোগের পরেই ব্যারাকপুর-দমদমের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিককে প্রশ্ন করা হলে তিনি পাল্টা জানিয়ে দেন, মেঘনাদ মাঠ দখলের কোনও খবর তিনি জানেন না। এমন কোনও খবর তাঁর কাছে আসেনি। পাশাপাশি, বিধায়কের মন্তব্যও যে তাঁর ভাল লাগেনি তা ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দেন পার্থ।

এই ঘটনার পরেই আরও একটি ফেসবুক লাইভ করেন মদন। সেখানে সম্পূর্ণ সুর বদলে তিনি বলেন, “ধন্যবাদ পার্থ ভৌমিক। পার্থর সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ একমত। আমি পাঞ্জা কেটে নেব কথাটা রাগের বশে উত্তেজিত হয়ে বলেছি। আই অ্যাম রিয়েলি সরি। আমি নিজের পাঞ্জা কাটার কথা বলেছি। প্রোমোটারের নয়। ঠিক আছে, আমরা এখন সরকারে রয়েছি। সরকারের উচিত মাথা ঠাণ্ডা রেখে কাজ করা। তবে এই লড়াকু মনোভাব, এই পাঞ্জা কটে দেব বলাটা তো কোনও অশ্লীল কথা নয়, এটা আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে শিখেছি। এরকম লড়াকু মনোভাব আমাদের নেত্রীর থেকেই শেখা।”

এখানেই না থেমে কামারহাটির বিধায়ক আরও বলেন, “আমি আমার কথাটা উইথড্র করছি। কিন্তু পার্থ ভৌমিক যেটা জানেন না সেটা হল এখানে এত বড় বড় রাঘব বোয়ালেরা রয়েছে না আপনার নৈহাটি, হালিশহরে নেই। ভাটপাড়ার রাঘব বোয়ালরা আরিয়াদহের রাঘব বোয়ালদের কাছে বাচ্চা। তবে, এই বাচ্চাদের কী করে ঠাণ্ডা করতে জানি। বলি, বয়স তো অনেক হল। প্যানক্রিয়াস, ক্য়ানসার বাকি তো কিছুই নেই। তাও এত্ত বড় জিভ বের করে অ্যাঅ্যাঅ্যা করতেই হবে! লোভ কি গেল না! মেঘনাদ মাঠের দিকে কিন্তু হাত নয়। খুব সাবধান। কামারহাটিতে বোমাবাজি বন্ধ করেছি। এটাও বন্ধ করে দেব।”

পাশাপাশি তিনি বলেন, “খেলার মাঠে প্রোমোটিং হলে চুপ করে থাকব না। প্রশাসন এবং দলের উপর সম্পূর্ণ আস্থা রেখেই যা বলার বলেছি। বাম-কংগ্রেস-বিজেপি যৌথভাবে প্রোমোটিং করছে। রাজুর জন্মদিনে ওর বাড়িতে কারা গিয়েছিল আর কী কী ডিল হয়েছে সব জানি। তাই মাঠের দিকে একদম চোখ তুলে তাকাবেন না। এটাই শেষ ওয়ার্নিং দিলাম।”

প্রসঙ্গত, এই প্রথম নয়, কামারাহাটিতে বরাবরই এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে শাসক-বিরোধী লড়াই হয়ে এসেছে। সেই বিতর্কে নাম জড়িয়েছে সিপিএমের নেতা মানস মুখোপাধ্যায়ের নামও। খোদ মদন মিত্রই একদা সংবাদমাধ্যমে একটি কল রেকর্ড ফাঁস করেনস, যেখানে জনৈক ব্যক্তির কণ্ঠে শোনা যায়, তিনি বলছেন, “প্রয়োজনে বোমা মেরে উড়িয়ে দেব। দুটো তিনটে লাশ পড়লে কোনও কিছু যাবে আসবে না।” সেই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যদিও যাচাই করেনি TV9 বাংলা। ফের, তৃণমূল বিধায়কের বিস্ফোরক মন্তব্যের জেরে শোরগোল রাজনৈতিক মহলে।

আরও পড়ুন: CPM TMC Clash: মার্কসীয় বুকস্টলে ভাঙচুর, ‘হামলা’ শাসক শিবিরের!