‘ভুল তো আমারও ছিল,’ বাগদায় বিশ্বজিৎ ফিরতেই ব্যান্ড বাজিয়ে অভ্যর্থনা তৃণমূলের

Biswajit Das: বিশ্বজিৎ দাস ফের তৃণমূলে ফিরতে তাঁকে বুকে টেনে নিলেন তৃণমূল জেলা শঙ্কর আঢ্য। বললেন, 'ভুল তো আমারও ছিল। আসলে রাজনীতিতে চিরশত্রু বলে কিছু হয় না।' তাঁর উষ্ণ অভ্যর্থনায় বিগলিত বিশ্বজিৎ দাস।

'ভুল তো আমারও ছিল,' বাগদায় বিশ্বজিৎ ফিরতেই ব্যান্ড বাজিয়ে অভ্যর্থনা তৃণমূলের
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 01, 2021 | 9:19 PM

উত্তর ২৪ পরগনা: বিধানসভা ভোটের আগে একে অপরকে তীব্র বিঁধেছেন। তবে সে সব আর মনে রাখতে চান না শঙ্কর আঢ্য। বিজেপির টিকিটে জেতা বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস ফের তৃণমূলে ফিরতে তাঁকে বুকে টেনে নিলেন তৃণমূল জেলা শঙ্কর আঢ্য। বললেন, ‘ভুল তো আমারও ছিল। আসলে রাজনীতিতে চিরশত্রু বলে কিছু হয় না।’ তাঁর উষ্ণ অভ্যর্থনায় বিগলিত বিশ্বজিৎ দাস।

মঙ্গলে তৃণমূলে যোগদানের পরে বুধবার বনগাঁয় পা দিতেই বিশ্বজিৎকে ব্যান্ড বাজিয়ে মালা পরিয়ে স্বাগত জানান তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা। আর তার সামনে যিনি রয়েছেন, তিনি শঙ্কর আঢ্য। তৃণমূল ছেডে় বিজেপি যোগ দেওয়ার পর বিশ্বজিৎকে বারংবার নিশানা করেছেন তিনি। এদিন অবশ্য বনগাঁর প্রাক্তন পৌরপিতা শংকরের মন্তব্য, এবার একসঙ্গে কাজ করে বনগাঁ পৌরসভা দখল করতে হবে।

বুধবার বিকেলে বনগাঁয় ফেরার কথা ছিল বিশ্বজিৎ দাসের। তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে আগেভাগেই তৈরি ছিল তৃণমূল। বনগাঁ এক নাম্বার রেল গেটে প্রচুর কর্মী সমর্থক ফুলের মালা ও ব্যান্ড পার্টি নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। বিধায়ক গাড়ি থেকে নামতেই তাঁকে মালা পরিয়ে ব্যান্ড বাজিয়ে যশোর রোড ধরে এগোতে থাকে সংবর্ধনা যাত্রা। তার পর মাটিগঞ্জে বিশ্বজিৎ দাসকে সংবর্ধন দেওয়ার আয়োজন করেছিলেন খোদ বনগাঁর প্রাক্তন পৌরপিতা শঙ্কর আঢ্য। বিশ্বজিৎ মঞ্চে আসতেই বুকে জড়িয়ে ধরে বিশ্বজিৎ দাসকে স্বাগত জানান।

বাগদার বিধায়ক বনগাঁয় ফেরার পরে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের উন্মাদনা দেখা যায়। যার কারণে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন বলে শোনা যায় সেই শঙ্কর আঢ্য আজ সংবর্ধনার আয়োজন প্রসঙ্গে বলেন, “রাজনীতিতে চিরশত্রু বলে কিছু হয়না। আগামীতে বনগাঁ পৌরসভা ২২ টি আসনের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভ করার জন্য একসঙ্গে কাজ করব।”

উঠে আসে শুভেন্দু অধিকারীর দলত্যাগ বিরোধী চিঠি প্রসঙ্গও। শঙ্করের কথায়, “অসুবিধা নেই, নিশ্চয়ই বাবার ব্যাপারটা উনি দেখছেন। বাবার চিঠিটাও উনি ধরাচ্ছেন নিশ্চয়। আইন আইনের টা দেখবেন।”

যদিও মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার একদিনের মধ্যেই বেসুরো বাগদার বিধায়ক। আগে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন বিশ্বজিৎ। সেখানে বড় ভূমিকা ছিল মুকুলেরই। এরপর বনগাঁ উত্তরের টিকিট না পেয়ে একুশের বিধানসভা ভোটের সময় তাঁর অবস্থান নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। এহেন বিশ্বজিৎ তাঁর এলাকায় দিলীপ ঘোষের বনগাঁর কর্মসূচিতে অনুপস্থিত ছিলেন। আর এ নিয়ে তাঁর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, কী করবেন তা সময় ঠিক করবে। বারবার কর্মসূচিতে অনুপস্থিতি এবং কথাবার্তার মধ্যে দলবদলের ইঙ্গিত পাচ্ছিল ওয়াকিবহাল মহল।

তার মধ্যে মঙ্গলবার পুরনো দলে ফিরে বিজেপির টিকিটে জয়ী বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “ওই দলে কাজ করার কোনও পরিবেশই নেই। প্রতিনিয়ত তা শিরোনামেও উঠে আসে। দলের মধ্যেই কোনও একতা নেই। এ ওর নামে প্রকাশ্যে বিষোদগার করছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কুৎসা করছে। এর পর কি আর সেই দলের কোনও জন প্রতিনিধি মানুষের জন্য কাজ করতে পারেন? আর এটাও তো মাথায় রাখতে হবে, দল তো স্থানীয় নেতৃত্বের উপর গড়ে ওঠে। বহিরাগত নেতৃত্ব দিয়ে দল চলে না। বিশেষ করে যাঁদের ভাষাগত পার্থক্য এতটা প্রকট, সেই ভাষা তো মানুষ বুঝতেই পারবেন না।” আরও পড়ুন: বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরলেন বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, ৬ মাসের জল্পনা মিটিয়ে বললেন ‘ঘরের ছেলে, ঘরে ফিরে এসেছি’