WB Madhyamik Result: দিনমজুর বাবা, অনটনের সংসারে ‘নতুন ভোর’ হয়ে এল রিম্পার মাধ্যমিকের নম্বর
WBBSE Madhyamik 10th class Result 2025: স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রিম্পাদের সংসার বড়ই অনটন। কিন্তু তার পরেও থামেনি পড়াশোনা। তার বাবা একজন দিনমজুর। যেদিন কাজ পেলেন, সেদিন চলে গেল। কিন্তু কাজ না পেলেই পেটে পড়ে টান।

উত্তর ২৪ পরগনা: সেরা দশে সে নেই। নাম নেই সেরা পনেরোতেও। খুব খুঁজে দেখলে মেধাতালিকার সেরা বিশে থাকতে পারে রিম্পা। কিন্তু এলাকায় তাও সে ‘চোখের মণি’। এভাবেও করে দেখানো যায়, এভাবেও জিতে যাওয়া যায়। শুক্রবার সকালে মাধ্যমিকের ফলাফল ঘোষণা পর রিম্পা যখন তার নম্বর দেখছেন, তখন ঠিক এমনটাই বলছেন তার পাড়া-প্রতিবেশীরা।
উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদের বরুনহাটের মেয়ে রিম্পা দাস। পড়াশোনা স্থানীয় বরুণহাট হাই স্কুলেই। মাধ্যমিকের ফল ঘোষণার পর যখন খবরের শিরোনামে উঠেছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পরীক্ষার্থীদের নাম। সেই সময় তাদের থেকে পিছিয়ে থাকেনি রিম্পা। উঠে এসেছে তার সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে তৈরি জয়গাঁথা। মাধ্যমিকে সে ৬৭৬ অর্থাৎ ৯৬ শতাংশ নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রিম্পাদের সংসার বড়ই অনটন। কিন্তু তার পরেও থামেনি পড়াশোনা। তার বাবা একজন দিনমজুর। যেদিন কাজ পেলেন, সেদিন চলে গেল। কিন্তু কাজ না পেলেই পেটে পড়ে টান। মাও মাঝে মধ্যেই মাঠে-ঘাটে যান কাজ করতে। সেই অল্প কিছু টাকাতেই তাদের দিন আনা দিন খাওয়া সংসার।
রিম্পা জানিয়েছে, সকালে উঠেই মাকে রান্নায় সাহায্য করে সে। তারপর চলে যায় স্কুল। বিকালে ফিরে এসে বাড়ির কাজ সামলে তারপর শুরু হয় পড়াশোনা। এই বাঁধা-ধরা ভাবেই কেটেছে তার প্রতিটা দিন। একজন গৃহশিক্ষক ছিলেন। তবে তিনি পড়াতেন বিনা বেতনেই। সংসারে এত অনটনের মাঝেও কিন্তু স্বপ্ন দেখা কখনওই ছাড়েনি রিম্পা। স্বপ্ন দেখতে তো আর পুঁজি লাগে না, লাগে ভাবার শক্তি। সেই স্বপ্নই তাকে এগিয়ে দিল এক ধাপ।
বড় হয়ে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখে রিম্পা। আর প্রিয় বিষয় গণিত। এদিন রিম্পা জানিয়েছে, ‘আমাদের সুন্দরবন এলাকায় ভালো ডাক্তার নেই। কেউ অসুস্থ হলে শহরে যেতে হয়। আমি গরিব মানুষদের চিকিৎসা করব, যেন টাকার অভাবে কেউ মারা না যায়।’ রিম্পার স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, ‘রিম্পা অসাধারণ মেয়ে। ওর মনোযোগ, অধ্যবসায়, আর চোখের জ্যোতি আমাদেরও নতুন করে স্বপ্ন দেখায়। আমরা গর্বিত।’ তবে কীভাবে পূরণ হবে চিকিৎসক হওয়ার মতো একটা ব্যয়বহুল স্বপ্ন? রিম্পা মা জানিয়েছেন, ‘সরকারি সাহায্য পেলে মেয়ের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন আমরা হয়তো পূরণ করতে পারবে।’

