উত্তর ২৪ পরগনা: মুখ জোড়া কালশিটে। চাপ চাপ রক্ত জমে গোটা মুখ জুড়ে। যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। ওষুধ পেটে পড়লেও, আইনি বিচার এখনও মেলেনি। ‘কেউ মারেনি ঠাকুমাকে’। বৃদ্ধার নাতির এই বয়ানে আরও বিভ্রান্তি। কিন্তু প্রশ্ন একটাই তাহলে এই চেহারা হল কি করে? সদুত্তর তো মেলেইনি। উল্টে বৃদ্ধাকে মারধরের ঘটনায় সরগরম রাজনীতি। নিমতা কাণ্ডে (Nimta Case) নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) কাছে অভিযোগ জানিয়েছে মহিলা কমিশন (The Mohila Commission)।
জুল জুল করে তাকিয়ে আছেন অশীতিপর বৃদ্ধা। চোখে-মুখে যন্ত্রণার ছাপ। বুকের চাপা কষ্ট মুখ ফুটে বেরোচ্ছে না। হয়ত বুঝেই উঠতে পারেননি কি হয়েছে তাঁর সঙ্গে। কিন্তু পদে পদে যন্ত্রণা বুঝিয়ে দিচ্ছে ভাল নেই, মন শরীর কোনওটাই ভাল নেই।
উত্তর দমদম পুরসভার নিমতা। এক সময় সিপিএমের শক্ত ঘাঁটি অধুনা তৃণমূল শাসিত। বর্তমানে বিরোধী শূন্য। অভিযোগ, গত শুক্রবার রাত দেড়টা নাগাদ নিমতার বাসিন্দা গোপাল মজুমদারের বাড়িতে হামলা চালায় তৃণমূল। পরিবারের অভিযোগ, দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে মারধর করা হয় গোপাল মজুমদারকে। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত মা-ও।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যে সুরক্ষিত নন মায়েরাই। বাংলার মেয়ে স্লোগানে কটাক্ষ করে সুর চড়িয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী, অমিত মালব্যরা। বৃদ্ধার সেই ছবি পোস্টার করে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে টানানো হয়েছে। তাতে ইংরাজিতে লেখা, ‘ইজ সি নট অ্যা ডটার অফ বেঙ্গল?’
এরই মাঝে বৃদ্ধার নাতি গোবিন্দু মজুমদার নিজেই বলছেন,’ মারধরের অভিযোগ ভিত্তিহীন’। গোবিন্দ মজুমদারের কথায় রীতিমত বিভ্রান্ত সবাই। এই ঘটনা নিয়ে একের পর এক মন্তব্য করছেন রাজনৈতিক নেতারা। তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “প্রবীণদের নিয়ে ফেক নিউজ ছড়াচ্ছে বিজেপি।”
আরও পড়ুন: চোখে-মুখে জমাট বাঁধা রক্ত, নিমতার ৮০ বছরের সেই বৃদ্ধার মুখ আজ বিজেপির পোস্টার! এখনও অধরা অভিযুক্তরা
সোমবার সকালে নিমতার ওই বৃদ্ধার বাড়িতে যান বিজেপি প্রতিনিধি দল। বৃদ্ধার জন্য থানায় গেলেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন তিনি।