Uttarakhand: হুড়মুড়িয়ে খাদের মধ্যে পড়ে গেল গাড়ি, নিমেষেই মৃত্যু ৫ বাঙালি পর্যটকের!

Death by Accident: আহত কঙ্কন রায় জানিয়েছেন,  অনেকের মতো তিনিও গিয়েছিলেন উত্তরাখণ্ড ভ্রমণে। মোট ৩০ জনের দলে তিনি ছাড়াও ছিলেন আসানসোল গ্রামের পিন্টু রায়। বাকিরাও ছিলেন  রানিগঞ্জ ও আসানসোলেরই আশেপাশের বাসিন্দা।

Uttarakhand: হুড়মুড়িয়ে খাদের মধ্যে পড়ে গেল গাড়ি, নিমেষেই মৃত্যু ৫ বাঙালি পর্যটকের!
চলছে উদ্ধারকার্য, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 27, 2021 | 11:26 PM

পশ্চিম বর্ধমান:  মাত্র কয়েক মুহূর্ত! চোখের পলক ফেলা মাত্র! এখনও যেন গোটা ঘটনাটা বিশ্বাস করার মতো নয়! অন্তত এমনটাই মনে করছেন  আসানসোল জেলা হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্য়ান্ট সুপার কঙ্কন রায়। কোনওক্রমে তিনি বেঁচে গিয়েছেন। কিন্তু, ওই দুর্ঘটনার কবলে  ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে খাদে পড়েই। প্রত্যেকেই বাঙালি। ঘটনাস্থল ফের সেই উত্তরাখণ্ড (Uttarakhand)। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ৭ জন। জানা গিয়েছে, আগামিকাল সকালেই  কলকাতায় আনা হবে ওই পাঁচ পর্যটকের মৃতদেহ।

আহত কঙ্কন রায় জানিয়েছেন,  অনেকের মতো তিনিও গিয়েছিলেন উত্তরাখণ্ড ভ্রমণে। মোট ৩০ জনের দলে তিনি ছাড়াও ছিলেন আসানসোল গ্রামের পিন্টু রায়। বাকিরাও ছিলেন  রানিগঞ্জ ও আসানসোলেরই আশেপাশের বাসিন্দা। তবে দুর্ঘটনায় কাদের মৃ্ত্যু হয়েছে বা কারা আহত হয়েছে, কারুর পরিচয় জানা  সম্ভব হয়নি। এমনকী, পাহাড়ে কে কোথায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন তাও বোঝা সম্ভব নয়। কোনওক্রমে হাসপাতালে ভর্তি হতে পেরেছেন কঙ্কন ও পিন্টু। কথা বলার শক্তিও বিশেষ নেই শরীরে।

সূত্রের খবর, আসানসোলের ওই পর্যটকের দলটি গত ২১ তারিখ রওনা হয়। আগামী ৩০ অক্টোবর তাঁদের ফেরার কথা ছিল। বুধবার মুরকেয়ারি থেকে  কৌশানি যাচ্ছিলেন ওই ৩০ জন। সকলের জন্যেই ট্যাম্পো ট্রেভেরা গাড়ি বুক করা হয়। তার মধ্যে একটি গাড়ি বাগেশ্বরের কাপকোট থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। গাড়িটিতে তখন ছিলেন ১২ জন।

ওই গাড়িতেই ছিলেন কঙ্কন রায় ও পিন্টু রায়। তাঁরা কোনওক্রমে বেঁচে যান। তবে গুরুতর আহত হয়েছেন। এই দু’জন ছাড়াও আরও ৭ জন আহত হয়েছেন। মৃত্যু হয় ৫ জনের। তাঁদের মধ্যে ৩ জন মহিলা ও ২ জন পুরুষ  বলে জানা গিয়েছে। আহতদের বাগেশ্বর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আপাতত সেখানেই তাঁরা চিকিত্‍সাধীন। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশ।

জানা গিয়েছে, আগামিকালই কলকাতায় আনা হবে ওই ৫জনের মৃতদেহ। সকাল ৬টা থেকে ৭টা কুড়ির মধ্যেই আনা হবে  মৃতদেহগুলি। ইতিমধ্যেই মৃতদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। তাঁদের পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

শনিবারই, উত্তরাখণ্ডে ট্রেকিংয়ে গিয়ে মৃত আরও এক বাঙালি পর্যটকের দেহ উদ্ধার হয়েছে। বছর তিরিশের তনুময় তিওয়ারির বাড়ি হরিদেবপুরের নেপালগঞ্জে। একটি গ্রুপের সঙ্গে ট্রেকিংয়ে গিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর মামা সুখেন মাঝিও। তনুময়ের দেহ উদ্ধার করা গেলেও, তার মামাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয়ের খবর শোনার পর থেকেই আতঙ্কের প্রহর কাটাচ্ছিলেন তিওয়ারি পরিবারের সদস্যরা। সর্বদা চোখ রেখেছিলেন টিভির পর্দায়। প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। যতদিন কোনও খবর মেলেনি, বুকের মধ্যে আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। ভেবেছিলেন, হয়তো কোথাও আটকে পড়েছে, কিন্তু তাঁদের সন্তান সুরক্ষিত রয়েছে। কিন্তু তা মিথ্যা করেই অবশেষে আসে সেই খবর।

উত্তরকাশীতে নিখোঁজ থাকা রিচার্ড মণ্ডলের দেহ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। তাঁর দেহ নামিয়ে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে। রিচার্ড মণ্ডলের সঙ্গে নিখোঁজ ছিলেন স্থানীয় এক গাইডও। তাঁরও দেহ উদ্ধার হয়েছে।

বাগেশ্বর জেলায় আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে এখনও পর্যন্ত অপারেশন শুরু করা সম্ভব হয়নি। আশা করা যায় অল্প কিছু সময় পরে অপারেশন শুরু করা সম্ভব হবে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী, সকাল সাড়ে সাতটায় অপারেশন শুরু করার কথা ছিল, কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি।

উত্তরাখণ্ডে ট্রেকিংয়ে গিয়ে ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে বাংলার ৫ জনের। উত্তরাখণ্ডের বাগেশ্বর কন্ট্রোল রুম থেকে বাংলার পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন,সাধন বসাক, তিনি ঠাকুরপুকুর জায়গীর রোডের বাসিন্দা। এছাড়াও বিকাশ মাকাল, সৌরভ দাস, সাবিয়ান দাসের দেহ উদ্ধার হয়েছে।

অন্যদিকে, নৈনিতাল থেকে কৌশানী যাওয়ার পথে ভওয়ালী নামে একটি জায়গায় আটকে পড়ে হুগলির একটি পরিবার। তিনদিন ধরে একটি গেস্ট হাউসে আটকে আছেন তাঁরা। এখনও খাবারের সমস্যা না হলেও বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছেন প্রত্যেকে।

উত্তরপাড়া মাখলার ঘোষ পরিবারও একই ভাবে আটকে গিয়েছেন উত্তরাখণ্ডে। নৈনিতাল যাওয়ার পথে আলমোরা জেলার বিনসারে আটকে রয়েছেন তাঁরা। মমি ঘোষ ফোনে জানিয়েছেন,এই মুহুর্তে বৃষ্টি কমেছে তবে রাস্তায় ধ্বস নেমে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে পর্যটকরদের।

উত্তরাখণ্ড পরিদর্শন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এ দিন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী অজয় ভাট ও উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী ধাওয়ান সিং রাওয়াতের সঙ্গে হেলিকপ্টারে বন্যা বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন অমিত শাহ। বুধবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমলেও এখনও একাধিক জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে সে রাজ্যে।

আরও পড়ুন: Anubrata Mondal: ‘ত্রিপুরায় জিতব, গোয়াতেও, গুন্ডামি করলে দল থেকে বের করে দেব’