পশ্চিম বর্ধমান: আচমকা খনির ভিতর হানা দুষ্কৃতীদের। বাধা পেতেই চলল গুলি, খনির ভেতরেই বোমাবাজির (Bomb blast) অভিযোগ। রবিবার রাত ১২ টা থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। অভিযোগ কয়লা চুরি করতে দুষ্কৃতীরা তামার তার কেটে খনিতে প্রবেশ করে। পুলিশের সঙ্গে তাদের খণ্ডযুদ্ধও হয়। রবিবার গভীর রাতে বোমাবাজি ও গুলিবর্ষণের জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল ভাগ্যলক্ষ্মী কোলিয়ারি।
সূত্রের খবর, রবিবার রাত ১২ টা নাগাদ কয়লাচুরি করতে খনিতে ভাগ্যলক্ষ্মী কোলিয়ারিতে পৌঁছয় ২০ জন দুষ্কৃতীর একটি দল। অভিযোগ, তামার তার কেটে খনির ভেতর ঢুকে যায় দুষ্কৃতীরা। তারপর থেকে খনির মধ্যেই রয়েছে তারা। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় পুলিশ ও সিআইএসএফ বাহিনী। কিন্তু তাতে দুষ্কৃতীদের টলানো যায়নি। রাত কাবার হলেও খনির মধ্যে থেকেই পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ চালিয়ে যায় ওই দুষ্কৃতীরা।
আসানসোল পুলিশ সূত্রে খবর, খনির মধ্যে থাকলেও দুষ্কৃতীদের কাছে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। ফলে তারাও পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে প্রস্তুত নয়। প্রথমে দুষ্কৃতীদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। কিন্তু, তারা তা করেনি বলেই অভিযোগ। পাল্টা চালানো হয় গুলি। খনির মধ্যে থেকেই গুলি চালানোর পাশাপাশি বোমাবাজি করা হয়। পুলিশও বাইরে গুলি করে।
ইতিমধ্যেই গোটা খনি চত্বর ঘিরে ফেলেছে পুলিশ। রয়েছেন সিআইএসএফ জওয়ানরাও। কোলিয়ারির ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে কীভাবে অন্য পথে খনির ভেতরে যাওয়া যায় সেবিষয়েই কথা বলেছেন পুলিশ কর্তারা। প্রয়োজনে আরও ফোর্স ডাকা হতে পারে বলেই জানিয়েছেন এক পুলিশ আধিকারিক।
এদিকে, পুলিশ আর দুষ্কৃতীদের খণ্ডযুদ্ধে বোমাবাজি গুলিবর্ষণের ঘটনায় জখম হয়েছেন বেশ কয়েকজন নিরাপত্তা রক্ষী। ঘটনায়, নিরাপত্তা অফিসার অবোধ বিরোধী মাহাতর হাতের দুটি আঙুলও নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
এক নিরাপত্তা রক্ষীর কথায়, “কাল রাত ১২ টার পরে কিছু দুষ্কৃতী খনির ভেতর ঢুকে যায়। ওরা কয়লা চুরি করতে এসেছিল। সঙ্গে সঙ্গে এখান থেকে ৪-৫ জন নিরাপত্তারক্ষী খনির ভেতর ঢোকে। কিন্তু, চাইলেও ওই দুষ্কৃতীদের আটকানো যায়নি। উল্টে তারা কয়েকজন আহত হয়। পরে পুলিশ আসে। কিন্তু ওই চোরেরা এখনও খনির মধ্যেই বসে রয়েছে। ওদের কাছে অনেক অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে। ”
ওই নিরাপত্তারক্ষী আরও বলেন, “এভাবে কয়লাচোরেদের দাপট নতুন নয়। প্রায়ই হয়ে থাকে। পুলিশকে বলেও কোনও লাভ হয়নি। দুষ্কৃতীদের বাগে আনা যায়নি। এইসব দুষ্কৃতীদের পেছনে আরও বড় বড় মাথা রয়েছে। পুলিশ কিছুই করতে পারে না। ” আসানসোল পুলিশ যদিও জানিয়েছে, কয়লাচোরদের ধরতে বিশেষ পদক্ষেফ করা হচ্ছে। আপাতত ভাগ্যলক্ষ্মী কোলিয়ারিতে যে দুষ্কৃতী দল প্রবেশ করেছে তাদের কীভাবে পাকড়াও করা যায় তা নিয়েই পরিকল্পনা চলছে।
আরও পড়ুন: Rajib Banerjee: ‘কাকে দালাল বলছেন, তিনি অন্য কোনও দলের দালাল নন তো?’