গলা কেটে খুন ভাইকে, বাথরুমের চৌবাচ্চায় মা’কে ডুবিয়ে মারল ছেলে, তারপর সোজা হাজির থানায়

Asansol murder: খুনের প্রমাণ পাওয়ার পরই গ্রেফতার করা হয়েছে পাপ্পু নামে অভিযুক্তকে। সম্পত্তি নিয়ে ভাগাভাগি নিয়েই সমস্যা ছিল বলে অনুমান পুলিশের।

গলা কেটে খুন ভাইকে, বাথরুমের চৌবাচ্চায় মা'কে ডুবিয়ে মারল ছেলে, তারপর সোজা হাজির থানায়
ভাই ও মা-কে খুনে তার কোনও অনুশোচনা নেই, জানাল মেজো ভাই। নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 16, 2021 | 9:45 PM

আসানসোল: ভাইকে গলা কেটে, মা’কে চৌবাচ্চায় ডুবিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে খুন (Murder) করল ছেলে। তারপর ভাইকে গলা কেটে খুন করে সোজা হাজির থানায়। ডিউটি অফিসারকে গিয়ে যুবক জানায়, ‘আমি খুন করে এসেছি।’ খবর শুনেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। তখন বাড়ির বাথরুম আর রান্নাঘরে পড়ে দুটি দেহ। বাড়ির মেজ ছেলে মহম্মদ আনোয়ার আলম ওরফে পাপ্পু। সম্পত্তি লোভেই এইভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ পরিবারের। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ ঘটনার সত্যতার প্রমান পাওয়ায় যুবককে গ্রেফতার করেছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে। আসানসোলের (Asansol) হিরাপুর থানার ইসমাইলের আজাদনগর এলাকায়। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। আতঙ্কিত পাপ্পুর পরিবার। টাকা পয়সার ভাগাভাগি নিয়ে সেজ ভাইয়ের সঙ্গে মেজভাইয়ের বিবাদ ছিল বলে জানা যায়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, সেই রাগেই সেজ ভাইকে খুন করে পাপ্পু। ওই বাড়িতেই বাকি দুই ভাইও পরিবার নিয়ে বসবাস করে। তবে পাপ্পু ওই বাড়িতে থাকত না। এ দিন বিকেলে অজুহাত দেখিয়ে ওই বাড়িতে ঢোকে সে। তারপরই এই নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটে।

বাথরুমের চৌবাচ্চায় ডুবিয়ে মারা হয়েছে ৫৫ বছরের আখতারি খাতুনকে। তাঁর চার ছেলে। বড় ছেলে সরবর আলম, মেজ ছেলে মহম্মদ আনোয়ার আলম, সেজ ছেলে মহম্মদ আফতাব আলম ও ছোট ছেলে জাফর ইকবাল। জানা গিয়েছে আখতারি খাতুনের বেশ কিছু পারিবারিক সম্পত্তি ছিল। মা সই জমি বিক্রি করে ভাই বোনদের মধ্যে টাকা ভাগ করে দিয়েছিলেন। সেই টাকা পয়সার ভাগাভাগি নিয়ে সেজ ভাইয়ের সঙ্গে মেজভাইয়ের বিবাদ তৈরি হয়েছিল বেশ কিছুদিন ধরে। একইভাবে মেজভাইয়ের সঙ্গে মনোমালিন্য ছিল মায়েরও। তিনভাই পরিবার নিয়ে আজাদনগরে থাকেন। একমাত্র মেজ ভাই আনোয়ার আলম আসানসোল উত্তর থানার রেলপার ঝোপর পট্টিতে থাকে।

বুধবার বিকেলে সেই মেজভাই আজাদনগরে আনোয়ার আলম মা’কে ফল দেওয়ার অজুহাতে বাড়িতে ঢোকে। তারপর সেজভাই মহম্মদ আফতাব আলমের স্ত্রী ও মেয়েদের ঘরে বন্দি করে রেখে দেয়। এরপর সে আফতাব আলমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কাটে। পরে মাকে চৌবাচ্চাতে ডুবিয়ে মেরে ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে পালিয়ে যায়। হত্যাকারী পালিয়ে যাওয়ার পর প্রতিবেশীদের সাহায্যে দু’জনকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

মা ও ভাইকে খুন করার পরে মেজভাই মহম্মদ আনোয়ার আলম আনোয়ার সরাসরি হিরাপুর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে। সে থানায় ডিউটি অফিসারকে বলে, ‘আমি খুন করে এসেছি। আমার বাড়ি আজদনগরে৷’ ততক্ষণে অবশ্য হিরাপুর থানায় ঘটনার খবর চলে যায়। তাকে থানায় আটকে রেখে পুলিশ এলাকায় পৌঁছয়। ঘটনাস্থলে আসেন ডিসিপি (পশ্চিম) অভিষেক মোদী। পুলিশ বাড়ির সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করে, মোটরসাইকেল নিয়ে শুধু কি একাই মেজোভাই আনোয়ার আলম এসেছিল? না সঙ্গে কেউ ছিল? কতক্ষণ সে ছিল? প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, জমির ভাগাভাগির কারণে অসন্তুষ্ট হয়েই যুবক হয়ত এই কান্ড ঘটিয়েছে। ডিসিপি (পশ্চিম) বলেন, তদন্ত শুরু করা হয়েছে। সবদিক তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘অজানা জ্বর ফেলে সরকারের নজর ভবানীপুরে’, কেন্দ্রকে চিঠি শুভেন্দুর