Coal Scam Case: হাসপাতাল ভর্তি থেকেও মুক্তি নেই বিকাশ মিশ্রের, সুস্থ হলেই আদালতে হাজিরার নির্দেশ

TV9 Bangla Digital | Edited By: tista roychowdhury

Dec 10, 2021 | 11:53 PM

Bikash Mishra: দুপক্ষের আইনজীবীর দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের শেষে বিচারক বিকাশ মিশ্রর জামিন আরও একবার নাকচ করে দেন। এদিন বিচারক নির্দেশ দেন, পূর্ব নির্দেশ মতো  আগামী ১৫ ডিসেম্বর বিকাশের আদালতে হাজিরার দরকার নেই।

Coal Scam Case: হাসপাতাল ভর্তি থেকেও মুক্তি নেই বিকাশ মিশ্রের, সুস্থ হলেই আদালতে হাজিরার নির্দেশ
বিকাশ মিশ্রের শারীরিক অবস্থা নিয়ে তৎপর সিবিআই (ফাইল ছবি)।

Follow Us

পশ্চিম বর্ধমান: আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর গ্রেফতারও করা হয়েছে তাঁকে। কিন্তু  হাসপাতাল থেকে ছাড়া হচ্ছে না কয়লাপাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত বিকাশ মিশ্রকে। এদিকে, আদালতে নির্দেশ দিয়েছে, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেই আদালতে হাজিরা দিতে হবে কয়লাকাণ্ডে (Coal Scam Case) মূল  অভিযুক্ত বিনয় মিশ্রের ভাই বিকাশকে।

শুক্রবার বিকাশ মিশ্রের জামিনের আর্জি আরও একবার নাকচ করে দেওয়া হয়। গত বুধবারই বিকাশ মিশ্রর অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আর্জি খারিজ করেছিলেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। একইসঙ্গে বিকাশের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন আসানসোলের সিবিআই আদালতের বিচারক। আগামী ১৫ ডিসেম্বর বিকাশকে আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

এদিন,  আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে বিকাশকে গ্রেফতারের কথা বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীকে জানান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আইনজীবী রাকেশ কুমার। তিনি বিচারককে বলেন, “বিকাশ অসুস্থ হয়ে ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে। তাই তাঁকে এদিন হাজির করানো যায়নি। বিকাশকে অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হলেও, সে শর্ত মেনে আদালতে পেশ হয়নি। এছাড়াও তাঁর ঠিক কী শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। তাই  বিকাশকে যেন জামিন না দেওয়া হয়।”

সিবিআইয়ের আইনজীবীর পাল্টা সওয়ালে বিকাশ মিশ্রর আইনজীবি শেখর কুণ্ডু ও সোমনাথ চট্টরাজ বলেন, ” আমাদের মক্কেল খুবই অসুস্থ। তিনি কলকাতায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তাই বুধবার আদালতে হাজিরা দিতে পারেননি বিকাশ। সেই কারণে তাঁর অন্তর্বর্তী জামিন নাকচ হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার রাতে বিকাশকে হাসপাতালে গ্রেফতার করা হয়।” বিকাশের আইনজীবীদের আরও সংযোজন,  “বিকাশকে ভালো চিকিৎসার জন্য আরও বড় হাসপাতালে ভর্তি করার দরকার। তাঁর শারীরিক অবস্থার কথা ভেবে তাকে জামিন দেওয়া হোক।”

গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে সিবিআই কলকাতার ইএম বাইপাশ সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি বিকাশকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে সিবিআইয়ের নজরদারিতে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে বিকাশ মিশ্র।

দুপক্ষের আইনজীবীর দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের শেষে বিচারক বিকাশ মিশ্রর জামিন আরও একবার নাকচ করে দেন। এদিন বিচারক নির্দেশ দেন, পূর্ব নির্দেশ মতো  আগামী ১৫ ডিসেম্বর বিকাশের আদালতে হাজিরার দরকার নেই। যেদিনই তিনি  সুস্থ হবেন সেদিনই তাঁকে আদালতে হাজির হতে হবে। সেদিন তাঁর জামিনের বিষয়ে নতুন করে শুনানি হবে। এদিন যেহেতু বিকাশ সশরীরে আদালতে হাজিরা দেননি, তাই জামিন দেওয়ার প্রশ্ন নেই।

বুধবার আসানসোল আদালত তার অর্ডারে উল্লেখ করেছে বিকাশের সুস্থতার কথা। সে দিব্যি হেঁটে চলে বেড়াচ্ছে, তাও লেখা রয়েছে অর্ডারে। আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত নির্দেশ দেয় বিকাশ মিশ্রকে গ্রেফতার করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই নির্দেশের কপি হাতে পেতেই বিকাশকে গ্রেফতারির সমস্তরকম তোড়জোর শুরু করে সিবিআই। সেদিনই হাসপাতালের কাছে আদালতের নির্দেশের কপিও পাঠিয়ে দেওয়া হয়। স্পষ্ট তদন্তকারীরা জানিয়ে দেন, সিবিআইকে না জানিয়ে বিকাশকে ছুটি দিতে পারবে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপরই বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থাতেই গ্রেফতার করা হয় বিকাশকে।

কয়লাকাণ্ডের লিঙ্কম্যান বিনয় মিশ্রের ভাই হচ্ছেন বিকাশ মিশ্র। বিনয়কে নাগালে পাচ্ছেন না তদন্তকারীরা। কিন্তু বিকাশকে গ্রেফতারির পর নানা তথ্য উঠে আসতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। বিকাশ মিশ্রকে গ্রেফতার কয়লা-মামলায় অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ গ্রেফতারি। কারণ, বিকাশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কয়লার দু’নম্বরি টাকা লেনদেনের সিংহভাগটাই বিকাশ দেখতেন।

সম্প্রতি কয়লাপাচার কাণ্ডে মূল চক্রী অনুপ মাজি ওরফে লালা, বিনয় মিশ্র ও বিকাশ মিশ্রর ৯.২৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এর মধ্যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, জমি, গাড়ি, বেনামে থাকা সম্পত্তি ও কারখানাও রয়েছে। তদন্ত শুরু করার পর কয়লাপাচার কাণ্ডে বড় অঙ্কের টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ইডির তরফে। এর আগে বিনয় মিশ্রের বাড়িও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে মোট সাড়ে ১৩ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

অভিযোগ, গরু পাচারকাণ্ড ও কয়লা পাচারকাণ্ডে প্রভাবশালীদের কাছে টাকা লেনদেনের অন্যতম মাধ্যম ছিলেন বিনয়। যদিও একাধিকবার তিনি সে সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি করেছেন। তবে একদিকে ইডি যখন তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে, সিবিআইও এফআইআর দায়ের করেছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় তদন্তকারীরা। এরই মধ্যে বিনয় মিশ্রও পাল্টা কলকাতা হাইকোর্টের কাছে আবেদন জানান, এই জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব যেন ভার্চুয়ালি হয়।

প্রসঙ্গত, কয়লা ও গরুপাচার কাণ্ডে পলাতক বিনয় মিশ্র গত বছরই ভারতীয় নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। এর পর প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ ভানুয়াতুর নাগরিকত্ব নেন তিনি।

উল্লেখ্য এর আগে, কয়লা কাণ্ডে মূল চক্রী অনুপ মাঝি ওরফে লালার ৫০ রকমের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অনুমতি দেয় আসানসোল সিবিআই আদালত। জমি, বাড়ি-সহ বিভিন্ন সম্পত্তি রয়েছে লালার। এই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ৬৮ জায়গায় সম্পত্তি রয়েছে লালার। পুরুলিয়া, আসানসোল, রানিগঞ্জ, বাঁকুড়া, দুর্গাপুরে এই সম্পত্তি রয়েছে অনুপ মাঝি ওরফে লালার। এর মধ্যে কয়েকশো একর জমি রয়েছে, যেখানে কয়লা খনি বানাতে চেয়েছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: CBI arrested Burdwan Municipal Chairperson in Chit Fund Case: চিটফান্ড-কাণ্ডে তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করল CBI

 

 

Next Article