Coal Scam Case: সত্যিই কি অসুস্থ বিকাশ মিশ্র? আসানসোল-সহ ৩ হাসপাতালে চিঠি CBI-র

TV9 Bangla Digital | Edited By: tista roychowdhury

Dec 17, 2021 | 7:05 PM

CBI: শনিবার সিজেএম আদালতে বিকাশ মিশ্রের দু’দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেইমতো তাঁকে আসানসোলে বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজির করার কথা ছিল সোমবার। কিন্তু বিকাশ মিশ্র রবিবার রাতে শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন।

Coal Scam Case: সত্যিই কি অসুস্থ বিকাশ মিশ্র? আসানসোল-সহ ৩ হাসপাতালে চিঠি CBI-র
বিকাশের শারীরিক অবস্থা কেমন? রিপোর্ট চাইল সিবিআই

Follow Us

পশ্চিম বর্ধমান: কয়লা পাচারকাণ্ডের অন্যতম মূল অভিযুক্ত বিকাশ মিশ্রের (Bikash Mishra) আদৌ কি  কোনও শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে? থাকলে তার সঠিক চিকিৎসা কী? তা, জানতে চেয়ে অবশেষে আসানসোল জেলা হাসপাতাল-সহ ৩ টি হাসপাতালে  চিঠি পাঠাল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI)। চিঠি প্রাপকের তালিকায় রয়েছে এসএসকেএম হাসপাতাল , বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও আসানসোল জেলা হাসপাতাল।

সূত্রের খবর, সোমবার আসানসোলে বিশেষ সিবিআই আদালতে বিকাশ মিশ্রের (Bikash Mishra) শুনানি ছিল। যদিও আগেই বিকাশ কলকাতায় চলে আসায় সশরীরে এদিন এজলাসে হাজির হতে পারেননি তিনি। উপস্থিত ছিলেন বিকাশ মিশ্রের আইনজীবী। বিকাশের আইনজীবী তাঁর মক্কেলের জামিনের আবেদন করলে সিবিআইয়ের আইনজীবী তার বিরোধিতা করেন। সব শুনে বিচারক বিকাশ মিশ্রকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। আগামী ২২ ডিসেম্বর ফের তাঁকে আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক।

অন্যদিকে, শনিবার সিজেএম আদালতে বিকাশ মিশ্রের দু’দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেইমতো তাঁকে আসানসোলে বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজির করার কথা ছিল সোমবার। কিন্তু বিকাশ মিশ্র রবিবার রাতে শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকেই পরে স্থানান্তর করা হয় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। সে কারণেই এদিন তিনি সশরীরে আদালতে হাজির হতে পারেননি।

আর এতেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের মনে । আদৌ কি অসুস্থ বিকাশ মিশ্র? কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অনুমান, সিবিআই হেফজত থেকে বাঁচার জন্যই শারীরিক অসুস্থতাকে ঢাল করেছেন বিকাশ। সূত্রের খবর, বিকাশের অসুস্থতা নিয়ে, এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই একদফা ভিডিয়ো কনফারেন্সে কথা বলেছেন সিবিআই গোয়েন্দারা।

আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে শুক্রবারই কয়লা পাচারকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত বিকাশ মিশ্রকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। বিকাশের জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়ে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী বলেছিলেন, বিকাশ মিশ্র যেদিন সুস্থ হবেন, সেদিন তাঁকে এজলাসে হাজির করতে হবে। কিন্তু সেই নির্দেশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই শনিবার কলকাতার বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন বিকাশ মিশ্রকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় নিজাম প্যালেসে। যদিও এই সিবিআই দফতরের ভিতরে যাননি বিকাশ। বাইরে গাড়িতেই বসেছিলেন। এরপর সেখান থেকে সোজা নিয়ে যাওয়া হয় আসানসোলে। নিয়মমতো শনিবার ও রবিবার সিবিআই আদালত বন্ধ থাকে। তাই শনিবার সন্ধ্যায় শুনানি হয়েছিল আসানসোল আদালতের সিজিএমের দায়িত্বে থাকা চতুর্থ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অর্পিত ভট্টাচার্যর এজলাসে।

এরপরেই হাসপাতাল গুলিতে চিঠি পাঠিয়েছে সিবিআই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দ্রুত সেই চিঠির জবাব দিতে বলা হয়েছে। আসানসোল জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদিও এই চিঠিপ্রাপ্তি নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে এক আধিকারিক বলেন, “একটা চিঠি এসেছে। সময়মতোই চিঠির জবাব দেওয়া হবে।”

কে এই বিকাশ মিশ্র?

কয়লাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজির টাকা যিনি প্রভাবশালীদের কাছে পৌঁছে দিতেন বলে অভিযোগ সেই বিনয় মিশ্রের ভাই বিকাশ। সিবিআই প্রথম থেকেই বলে এসেছে, কয়লার ‘কালো’ টাকা কলকাতার প্রভাবশালীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া কিংবা প্রভাবশালীদের একাংশের টাকা কীভাবে এই কয়লার ব্যবসায় ঢুকেছে তার পুরোটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতেন ‘মিশ্র ভ্রাতৃদ্বয়’। বিনয় ও বিকাশের একাধিক ভুয়ো ব্যবসা রয়েছে বলেও অভিযোগ। সেই ব্যবসাতেও এই কয়লার টাকা খাটানো হতো বলেই জানতে পেরেছে সিবিআই। সেই টাকার হদিশও গোয়েন্দারা পেয়েছেন। কয়েক কোটি টাকা বাজেয়াপ্তও করা হয়েছে। ফলে বিকাশকে হেফাজতে নিয়ে সিবিআই জেরা শুরু করতেই কেঁচোর বদলে কেউটে উঠে আসতে পারে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।

কয়লাকাণ্ডে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বিকাশের গ্রেফতারি

কার কাছে কোথায় কত টাকা পৌঁছেছে তার একটা স্পষ্ট তথ্য সিবিআই এবার পেতে পারে বলেই মনে করছে। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, বিকাশ মিশ্রকে গ্রেফতার কয়লা-মামলায় অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ গ্রেফতারি। কারণ, বিকাশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কয়লার দু’নম্বরি টাকা লেনদেনের সিংহভাগটাই বিকাশ দেখতেন। ভাইকে সবরকম সহযোগিতা করতেন দাদা বিনয়।

সম্প্রতি কয়লাপাচার কাণ্ডে মূল চক্রী অনুপ মাজি ওরফে লালা, বিনয় মিশ্র ও বিকাশ মিশ্রর ৯.২৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এর মধ্যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, জমি, গাড়ি, বেনামে থাকা সম্পত্তি ও কারখানাও রয়েছে। তদন্ত শুরু করার পর কয়লাপাচার কাণ্ডে বড় অঙ্কের টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ইডির তরফে। এর আগে বিনয় মিশ্রের বাড়িও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে মোট সাড়ে ১৩ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

অভিযোগ, গরু পাচারকাণ্ড ও কয়লা পাচারকাণ্ডে প্রভাবশালীদের কাছে টাকা লেনদেনের অন্যতম মাধ্যম ছিলেন বিনয়। যদিও একাধিকবার তিনি সে সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি করেছেন। তবে একদিকে ইডি যখন তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে, সিবিআইও এফআইআর দায়ের করেছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় তদন্তকারীরা। এরই মধ্যে বিনয় মিশ্রও পাল্টা কলকাতা হাইকোর্টের কাছে আবেদন জানান, এই জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব যেন ভার্চুয়ালি হয়।

প্রসঙ্গত, কয়লা ও গরুপাচার কাণ্ডে পলাতক বিনয় মিশ্র গত বছরই ভারতীয় নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। এর পর প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ ভানুয়াতুর নাগরিকত্ব নেন তিনি।

উল্লেখ্য এর আগে, কয়লা কাণ্ডে মূল চক্রী অনুপ মাঝি ওরফে লালার ৫০ রকমের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অনুমতি দেয় আসানসোল সিবিআই আদালত। জমি, বাড়ি-সহ বিভিন্ন সম্পত্তি রয়েছে লালার। এই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ৬৮ জায়গায় সম্পত্তি রয়েছে লালার। পুরুলিয়া, আসানসোল, রানিগঞ্জ, বাঁকুড়া, দুর্গাপুরে এই সম্পত্তি রয়েছে অনুপ মাঝি ওরফে লালার। এর মধ্যে কয়েকশো একর জমি রয়েছে, যেখানে কয়লা খনি বানাতে চেয়েছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: CBI arrested Burdwan Municipal Chairperson in Chit Fund Case: চিটফান্ড-কাণ্ডে তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করল CBI

 

 

Next Article