ভাঙল বাড়ি, পুড়ল বাইক! ভোটের পরে সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত জামুড়িয়া
ঘটনায় প্রাক্তন সিপিএম পঞ্চায়েত প্রধান সান্তনা বাউরি বলেন, "গত ৪ মে থেকে এই অরাজকতা শুরু হয়েছে। সেই সময় থেকেই চলছে এসব। যেদিন মলয় ঘটক শপথ নিলেন সেদিনও এমন হয়।"
পশ্চিম বর্ধমান: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম জামুড়িয়াতে সবুজ ঝড় তুলেছে ঘাসফুল। ভোট মিটলেও জারি সন্ত্রাস। বুধবার রাতে, সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল জামুড়িয়ার কেন্দা গ্রাম। একাধিক বাড়িতে ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আহত বেশ কয়েকজন। চলে বিক্ষিপ্ত বোমাবাজিও।
বাম দলীয় সূত্রে খবর, বুধবার সন্ধ্যায়, সিপিএম সমর্থক রোহিত বাউরিকে আটকে কয়েকজন তৃণমূল কর্মী টিপ্পনি কাটেন বলে অভিযোগ। রোহিত বাউরর কথায়, “আমাকে পথ আটকে জেরা করা হয়। আমার পরিবারের লোকজন কেন ভোটে সিপিএমের পোলিং এজেন্ট বসে ছিল? এই ঘটনার প্রতিবাদ করতেই বাদ বিবাদ শুরু হয়। তখনই আমারে বেধড়ক মারধর করা হয়।” এখানেই শেষ হয়নি। পাড়ায় এসে স্থানীয়দের জানানোর পর, সকলে মিলে জোট বেঁধে জামুড়িয়া থানার কেন্দা ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করতে গেলে ফাঁকা পাড়াতে ফের হামলা চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুস্কৃতীরা। বোমা রড ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করা হয় বলে অভিযোগ।
ঘটনায় প্রাক্তন সিপিএম পঞ্চায়েত প্রধান সান্তনা বাউরি বলেন, “গত ৪ মে থেকে এই অরাজকতা শুরু হয়েছে। সেই সময় থেকেই চলছে এসব। যেদিন মলয় ঘটক শপথ নিলেন সেদিনও এমন হয়। আমার বাড়িতে ও সিপিএম নেত্রী কৃষ্ণা বাউরির বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। পরিবারের সদস্যদের মারধর করা হয় ও তিনটি মোটর বাইকে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। ভাঙচুর করা হয়েছে একটি চারচাকা গাড়িতে ও টোটোতেও।” বামদলীয় সূত্রে খবর, এই ঘটনায় তৃণমূল নেতা রূপম ভট্টাচার্য্য় জড়িত।
অন্যদিকে অভিযুক্ত ওই তৃণমূল নেতা রূপমের পরিবারে অভিযোগ রাতে তাঁদের বাড়িতে সিপিএমের দুস্কৃতীরা হামলা চালায়। তৃণমূল নেতার স্ত্রী শ্রীতমা ভট্টাচার্য্য বলেন , “আমাদের বাড়ির পাঁচিল টপকে ঘরে ঢোকার চেষ্টা করে অনেকে। হঠাৎ করে ভাঙচুর শুরু হয়। আমার বৃদ্ধ শ্বশুর মশাইকে মারধর করা হয়েছে। আমার হাত কেটে গিয়েছে। আমার ছোট ছেলেকেও ছাড়েনি। আমরা এর শাস্তি চাইছি।” যদিও, ব্লক তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি দুই মদ্যপের বচসা থেকে এই ঘটনা ঘটেছে। ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুকুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন, এই ঘটনায় তৃণমূলের যোগ নেই। বরং ওই মদ্যপরা আগে সিপিএম করত। এখন বিজেপি হয়েছে। তারাই তৃণমূল সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
স্থানীয়দের মতে দু পক্ষই হামলা চালিয়েছে একে অপরের বিরুদ্ধে। জামুড়িয়ার পুলিশ জানিয়েছে, গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সন্দেহভাজন কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে। এই ঘটনায় কে বা কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হবে।
আরও পড়ুন: গায়ে স্যানিটাইজার ছিটিয়ে বিজেপির ‘করোনা ভাইরাসদের’ যোগদান ঘাসফুলে