আসানসোল: ওনারা সবাই বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিক। আধার কার্ড নেই ফলে বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা বা স্বাস্থ্যসাথী পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। জীবদ্দশায় আধার কার্ডের যতটা প্রয়োজন ততটাই মৃত্যুর পরও প্রয়োজন আত্মীয়-স্বজন ছেলে মেয়ে ছেড়ে থাকা এই বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের। নইলে মিলবে না ডেথ সার্টিফিকেট। শুনতে অপ্রিয় হলেও অকপটে দাবি বৃদ্ধাশ্রমে থাকা আবাসিকদেরই।
আত্মীয়-স্বজন ছেলে-মেয়ে আপনজন ছাড়াই বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের ঘর ছেড়ে থাকতে হয় বৃদ্ধাশ্রমে। ফলে, সরকারে দরকারে তাঁরা ব্রাত্য। কিন্তু তাদেরও প্রয়োজন বার্ধক্য ভাতা বা স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের। বার্নপুরের শেষ প্রান্তে রয়েছে ঢাকেশ্বরি প্রান্তিক বৃদ্ধাশ্রম। ২৬ জন আবাসিকের আধার কার্ড নেই বা ত্রুটিপূর্ণ। ফলে রাজ্য সরকারের ১৮ টি প্রকল্পের একটিরও সুবিধা তারা পাচ্ছেন না। অসহায় এই বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের কথা মাথায় রেখে এবার হাজির বৃদ্ধাশ্রমে সরকার। এই প্রকল্পের উদ্যোগী আসানসোল পুরনিগমের পুরবোর্ডের সদস্য চন্দ্রশেখর কুন্ডু ও পুরপ্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় নিজে দাঁড়িয়ে থেকে আধার কার্ড তৈরির ব্যবস্থা করলেন।
আসানসোল পৌরনিগম উদ্যোগ নিয়ে পোস্ট অফিসের কর্মীদের নিয়ে এসে ছবি তোলা থেকে শুরু করে বায়োমেট্রিক সিস্টেম এমনকি রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করেছে। পাশাপাশি আধার কার্ডও হাতে দেওয়ার ব্যবস্থার মত অভিনব কর্মসূচি দেখা গেল প্রান্তিক বৃদ্ধাশ্রমে।
এই উদ্যোগটি সেপ্টেম্বর মাসে নিয়েছিলেন আসানসোল পৌরপ্রশাসক বোর্ডের সদস্য তথা সমাজকর্মী চন্দ্রশেখর কুণ্ডু। তিনি নিজে এসে সমস্ত আবাসিকদের সাথে কথা বলে সমস্যার কথা জেনেছিলেন। তারপরেই এই বিশেষ আধার তৈরির শিবির বসানো হলো এদিন।
পুরপ্রশাসকের দাবি, রাজ্যের ১৮ টি প্রকল্পের পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য শুরু হয়েছে দুয়ারে সরকার কর্মসূচি। বিভিন্ন ওয়ার্ডে বা গ্রামে গ্রামে শিবির করা হচ্ছে। মানুষজন লাইন দিয়ে সেই পরিষেবার জন্য ফর্ম তুলছেন এবং জমা করছেন। শিবিরে উপচে পড়ছে ভিড়। এই পরিস্থিতিতে রিমোর্ট এলাকায় থাকা মানুষজন বঞ্চিত হচ্ছেন পরিষেবা থেকে। বিশেষ করে বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের জন্য অভিনব উদ্যোগ নিল আসানসোল পুরনিগম। কারো প্রয়োজন স্বাস্থ্যসাথী কারো বার্ধক্যভাতা, কারো বা বিধবাভাতা। আবার ভোটার কার্ড নেই কারোর। এই সমস্ত সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে সেপ্টেম্বরেই আবাসিকদের ফর্ম ফিলাপ করে জমা নেওয়া হয়েছিল। এই সমস্ত কাজগুলি তৈরীর জন্য প্রয়োজন আধার কার্ডের। সেই কার্ড ছিল না এতদিন। এবার সেই আধার কার্ডের ব্যবস্থা হতেই হাসি ফুটল বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের মুখে।
আরও পড়ুন: SLST Movement: স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভে এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীরা