
মধুকল্পিতা চৌধুরীর রিপোর্ট
দুর্গাপুর: যে গেটে আটকাল কংগ্রেস, সেই একই গেটেই আটকালেন প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্য়ায়। দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ঘিরে রয়েছে ‘অলিখিত বেষ্টনী’। অভিযোগ, বন্ধ প্রতিটি গেট, বন্ধ রয়েছে ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডের এক মাত্র পথও। তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ভিতরে প্রহরী রাজ্য পুলিশ।
শনিবার থেকে শিরোনামে চলে এসেছে দুর্গাপুরের এই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজটি। এই কলেজেরই এক দ্বিতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়াকে ‘গণধর্ষণের’ ঘটনায় চড়েছে পারদ। দফায় দফায় সংশ্লিষ্ট মেডিক্য়াল কলেজে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলি। বলে রাখা ভাল, এই বেসরকারি হাসপাতালেই এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই নির্যাতিতাও।
রবিবার দুপুরে সেখানেই পৌঁছে গেলেন বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্য়ায়। সকালে কংগ্রেসের বিক্ষোভ। দুপুর দলবল নিয়ে পৌঁছলেন বিজেপি নেত্রী লকেট। সময়ের ফারাক থাকলেও ছবি এক। গেট ধরে ধাক্কা দিতে দেখা গেল দুই পক্ষকেই। এদিন ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডের ভিতরে উপস্থিত পুলিশ কর্মীদের বারংবার গেট খুলে দেওয়ার জন্য ডাক দিলেন লকেট। বিজেপি নেত্রীর চিৎকার শুনে কিছু সময় পর এগিয়ে আসেন এক কর্তব্যরত মহিলা পুলিশ কর্মী। একজনকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে বলেও জানান তিনি। কিন্তু সেই ওয়ার্ডের গেট আর খোলেন না।
এদিন লকেট বলেন, ‘পুলিশ ভিতরে, সাধারণ মানুষ বাইরে। উপর থেকে নির্দেশ, কেউ কোনও জায়গায় যেতে পারবেন না। একেবারে তালিবানি শাসন চলছে। ভেবে দেখুন, অপারেশন সিঁদুর হয়েছে, সোফিয়া কুরেশি, ব্যোমিকা সিং-রা রাতের অন্ধকারে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করে এসেছে। আর বাংলায় কী চলছে? জঙ্গল রয়েছে, জন্তু-জানোয়াররা মেয়েদের খেয়ে নেবে। সেই জন্য মুখ্যমন্ত্রী মেয়েদের বাইরে বেরতে বারণ করছে। উনিই তো বলেন, ওনার বাংলা সবচেয়ে সুরক্ষিত। তা হলে সেই রাজ্যেই মেয়েরা রাতে বেরবে না কেন?’
কিন্তু কারণে বন্ধ হাসপাতালের দুয়ার? লকেটকে অবশ্য সেই যুক্তিও দিয়েছেন পুলিশ কর্মীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, গতকাল থেকে পর পর ডেপুটেশন জমা পড়ছে, রোগীদের অসুবিধা হচ্ছে। সেই কারণে কর্তৃপক্ষ গেট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন। উল্লেখ্য, পুলিশকর্মীর এই যুক্তি শুনে আরও গলা চড়ান লকেট। দেখান বিক্ষোভ। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ না হওয়ায়, অগত্যা হাসপাতালের ওই বন্ধ ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডের সামনেই অবস্থান বিক্ষোভে বসে পড়েন তিনি।