Asansol: ‘যৌন হেনস্থার ছবি তুলে রেখে ব্ল্যাকমেইল করত’, আসানসোলে রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্রের মৃত্যুতে বিস্ফোরক অভিযোগ পরিবারের
Asansol: অভিযোগ, গাড়িতে মাদক খাইয়ে ওই ছাত্রকে যৌন হেনস্থা করা হয়। সেই ছবি মোবাইলে তুলে রেখেছিলেন অভিযুক্ত। তারপর থেকে সেই ছবি দেখিয়ে বারবার ছাত্রকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা নেওয়া শুরু হয়। ইন্সটাগ্রাম চ্যাট ও ফোন কল রেকর্ড থেকে সে সব কিছু জানা গিয়েছে। বারবার তাকে ফোন করে ভয় দেখানো হয়, টাকা না দিলে ছবি প্রকাশ করা হবে।

আসানসোল: বাড়িতে গলায় দড়ি দিয়ে ছাত্রের আত্মহত্যার দিন ছয়েক পর বিস্ফোরক অভিযোগ পরিবারের। আসানসোলের নবম শ্রেণির ওই ছাত্রকে যৌন হেনস্থার করে তার ভিডিয়ো তুলে রেখে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগ উঠল। মানসিক অবসাদে বছর পনেরোর ওই কিশোর আত্মঘাতী হয়েছে বলে আসানসোল উত্তর থানায় লিখিত অভিযোগ জানাল তার পরিবার।
ওই ছাত্রের বাড়ি আসানসোল উত্তর থানার সেনর্যালে এলাকায়। আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল সে। বাড়িতে মা ও দিদি রয়েছে। গত ২৯ মে নিজের বাড়িতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয় ওই ছাত্র। কী কারণে ওই ছাত্র আত্মঘাতী হয়েছে, তা নিয়ে প্রথম দিকে ধন্দে ছিল পরিবার। কিন্তু পরে ওই ছাত্রের বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে ও তার মোবাইল পরীক্ষা করে আসল ঘটনা সামনে আসে। পরিবারের অভিযোগ, ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে তীব্র মানসিক চাপে ওই ছাত্র আত্মঘাতী হয়েছে।
আসানসোল উত্তর থানায় লিখিত অভিযোগ ওই চাত্রের মা জানিয়েছেন, গত জানুয়ারি মাসে আসানসোল কসাইমহল্লার বাসিন্দা জনৈক যুবক ইমরান শেখ তাঁর পুত্রকে বলপূর্বক গাড়িতে তুলে নিয়ে যান। এরপর গাড়িতে মাদক খাইয়ে তাকে যৌন হেনস্থা করা হয়। সেই ছবি মোবাইলে তুলে রেখেছিলেন ইমরান। তারপর থেকে সেই ছবি দেখিয়ে বারবার তাকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা নেওয়া শুরু হয়। ইন্সটাগ্রাম চ্যাট ও ফোন কল রেকর্ড থেকে সে সব কিছু জানা গিয়েছে। বারবার তাকে ফোন করে ভয় দেখানো হয়, টাকা না দিলে সেই ছবি প্রকাশ করে দেওয়া হবে। বারবার টাকা নেওয়া হয় ব্ল্যাকমেইল করে। শেষ পর্যন্ত তাঁর ছেলে জানিয়েছিল, তার কাছে আর টাকা নেই। এরপরও টাকার জন্য প্রচণ্ড চাপ দেয় অভিযুক্ত। আর সেই চাপেই তাঁর পুত্র আত্মহত্যা করেছে বলে কিশোরের মায়ের অভিযোগ। আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ নির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
মৃতের দিদি বলেন, “আমার ভাইয়ের টিউশনের এক বন্ধুর মাধ্যমে ওই যুবকের সঙ্গে ভাইয়ের বন্ধুত্ব হয়েছিল। তারপর একদিন ভাইকে মাদক খাইয়ে যৌন হেনস্থা করে ছবি তুলে রাখে।” তিনি বলেন, “জানুয়ারির প্রথম থেকে ব্ল্যাকমেইল করত। ভাইয়ের মৃত্যুর পর তার ইনস্টাগ্রাম চেক করে বিষয়টা জানতে পারি। কত টাকা চাইত, সেটা বুঝতে পারছি না। ভাই আমাকে কিংবা মাকে কোনওদিন কিছু বলেনি।”
স্বামী অনেকদিন আগে মারা গিয়েছেন। এখন পুত্রকে হারিয়ে শোকে পাথর ওই কিশোরের মা। বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। কাঁদতে কাঁদতে বললেন, “আমাকে কোনওদিন বলেনি। বন্ধুদের বলেছিল, মাকে বলিস না। আমি অভিযুক্তের শাস্তি চাই।”

