আসানসোল: দিনের আলোয় চুরি করতে এসে বামাল ধৃত চোর। গৃহস্থের অনুপস্থিতিতে ফাঁকা বাড়িতে দরজার তালা ভেঙে ঢুকে পড়েছিল দুই চোর। মনের সুখে জিনিসপত্র নিয়ে পালাতে যাবে এমন সময় উপস্থিত বাড়ির মালকিন। তার পরেও অবশ্য হাল ছাড়েনি তারা। বাড়ির মালিককে বাইর থেকে দরজা বন্ধ করে ছাদ হয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল। তবে গ্রামবাসীদের বুদ্ধিতে ধরা পড়ল দুই চোর। ঘটনাটি ঘটেছে কুলটির মিঠানি গ্রামের নবপল্লি এলাকায়।
বাড়িতে কেউ ছিল না, সেই খবর তাদের কাছে ছিল। তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে আলমারি ভেঙে, জিনিসপত্র তছনছ করে চলছিল চুরির কাজ। কিন্তু সেই সময়ই বাড়ি এসে পৌঁছন গৃহকর্ত্রী। বাড়িতে এসে চোরেদের উপস্থিতি টের পেয়ে যান তিনি। তাঁর চিৎকারে মূহূর্তের মধ্যে পাড়া প্রতিবেশীরা ঘিরে ফেলে সেই ঘর। ঘর বন্দী হয়ে পড়ে দুষ্কৃতীরা। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। স্থানীয়রা উত্তম-মধ্যম মারধর করে দুই চোরকে তুলে দেয় পুলিশের হাতে তুলে দেয়। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে কুলটির মিঠানিতে।
কুলটির মিঠানি গ্রামে নবপল্লির বাসিন্দা কৌশিক চট্টরাজ ও পিউ চট্টরাজ। দুই দম্পতি দোতলা বাড়িতে থাকেন। দু’জনেই প্রাইভেট সংস্থায় কর্মরত। সোমবার সকালে ঘরে তালা দিযে বেরিয়ে বিকেলে ফিরে আসেন তাঁরা। বিকেল ৫ টা নাগাদ ঘরে ফিরে গৃহকর্ত্রী বুঝতে পারেন বাড়িতে আরও কেউ আছে। দরজা খুলতে গিয়ে দেখেন তা ভেতর থেকে বন্ধ। আবার বাইরের তালাটিও ভাঙা। বুঝতে দেরি হয়নি তাঁর যে বাড়ির মধ্যে দুষ্কৃতী রয়েছে। মুহূর্তের মধ্যে বুঝতে পারেন দুস্কৃতী ঢুকে আছেন ঘরের ভেতরেই। এরপর তিনি চিৎকার চেঁচামেচি করে পাড়া প্রতিবেশীদের ডাকাডাকি করতে সবাই ছুটে আসেন।
এদিকে অবস্থা খারাপ বুঝে চোর বাবাজি ততক্ষণে ছাদে উঠে পড়েছে পালিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে ঘরটি গ্রামবাসীরা ঘিরে ফেলায় তারা আর পালাতে পারেনি। চারদিক থেকে ঘর ঘিরে রয়েছে গ্রামবাসী আর ছাদের ওপরে ছটফট করছে দুই চোর। কিন্তু পালানোর সব রাস্তা বন্ধ। ওদিকে খবর পেয়ে পুলিশও পৌঁছে গিয়েছে। কুলটি থানার নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ আসতেই গ্রামবাসীরাও ঢুকে পড়েন ওই বাড়িতে। হাতেনাতে পাকড়াও দুই চোরকে শুরু হয় মারধর। পুলিশ কোনওক্রমে ধৃতদের উদ্ধার করে নিয়ে যায় থানায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের সঙ্গে চুরির যন্ত্রপাতি ও একটি ব্যাগ ছিল। চুরির সব জিনিস উদ্ধার করা গিয়েছে। এদিকে গৃহকর্তা জানান বাড়িতে দুদিন আগেই জমি বিক্রির দু লাখ টাকা তাঁরা পেয়েছিলেন। বাড়িতে এসে দেখছেন সেই টাকা খোয়া গিয়েছে। বেশ কিছু সোনার গয়না ছিল সেগুলিও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এরপরেই দম্পতি ও গ্রামবাসীরা যান থানায়। পুলিশ ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। জানা গিয়েছে. দুই চোর আসলে দামি মোটরাবাইকে করে চুরি করতে এসেছিল। তারপর বাড়ি ফাঁকা পেয়ে টাকাকড়িও চুরি করার চেষ্টা করে তারা। নম্বরবিহীন সেই কালো রঙের অ্যাভেঞ্জার গাড়িটিও উদ্ধার করে পুলিশ নিয়ে যায়। আরও পড়ুন: ‘আরএসএস, বিজেপির থেকেও ভয়ঙ্কর ত্বহা সিদ্দিকি’ পোস্টারে ছয়লাপ, তৃণমূলের দিকে আঙুল তুললেন পীরজাদা!