
মেদিনীপুর: বিরোধী দল বারবার উল্লেখ করেছে, এসআইআর চালু হলে সরে যেতে হবে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের। আবার একথাও মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে এসআইআর-এর ভোটার তালিকায় নাম বাদ পড়লেও সিএএ-র মাধ্যমে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যাবে। এই দোলাচলের মাঝেই ঘুম উড়েছে হঠাৎ পল্লীর বাসিন্দাদের। নামটা শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এই নামেই জড়িয়ে আছে আসল কারণটা।
মেদিনীপুর শহরের একটি কলোনির নাম ‘হঠাৎ পল্লী’। এলাকার নেতা বা কাউন্সিলররা বলছেন, একসময় ওই জায়গায় ছিল ফাঁকা জমি বা মাঠ। তারপর সেখানে হঠাৎ পরপর গড়ে ওঠে বসতবাড়ি। তাই নামটা হঠাৎ পল্লী। আর সেখানে যাঁরা থাকেন, তাঁরা সবাই বাংলাদেশি। ২০০২-এর ভোটার তালিকায় প্রায় কারও নামই নেই। প্রশ্ন উঠছে, এসআইআর কার্যকর হলে কি উধাও হয়ে যাবে এই হঠাৎ পল্লী?
২০০২-০৩ থেকে একে একে বাংলাদেশ থেকে এসে এই কলোনি তৈরি করেছে একাধিক পরিবার। বর্তমানে এই হঠাৎ পল্লীতে প্রায় ১৫০ বাংলাদেশি ভোটারের বসবাস। প্রায় ৯০ টির কাছাকাছি বাড়ি রয়েছে সেখানে। মেদিনীপুরে থাকতে থাকতেই ধীরে ধীরে তারা ভোটার কার্ড সহ যাবতীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করেছেন। মেদিনীপুর শহরের এক নম্বর ওয়ার্ডের তোড়াপাড়া সংলগ্ন এলাকায় মূলত বাংলাদেশিদের নিয়েই তৈরি হয়েছে এই হঠাৎ পল্লী।
বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, দাঙ্গার আগুনে জ্বলছিল বাংলাদেশ, সেই সময় চলে এসেছেন তাঁরা। কেউ কাঁটাতার পেরিয়ে, কেউ বা দালাল ধরে এদেশে প্রবেশ করেছেন। তারপর ধীরে ধীরে এদেশের নাগরিকত্ব নিয়েছেন তাঁরা। আর এভাবেই মেদিনীপুর শহরে তৈরি হয়েছে হঠাৎপল্লী। কিন্তু চিন্তা বাড়াচ্ছে এসআইআর। হঠাৎপল্লীর বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, তাঁরা প্রায় প্রত্যেকেই ২০০২ সালের পর এই কলোনিতে এসেছেন। তাঁরা প্রত্যেকেই চান এদেশে বসবাস করতে। আপাতত সরকারের উপর আস্থা রাখছেন তাঁরা।
এলাকার স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অনিমা সাহাও জানিয়েছেন, একসময় ফাঁকা জমি ছিল এখানে, কম দামে জমি পেয়ে বসতি গড়ে উঠেছে। বেশিরভাগ মানুষেরই ২০০২-এর ভোটার লিস্টে নাম নেই। কাউন্সিলর রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে আশ্বস্ত করেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের।
স্থানীয় বিজেপি নেতা তথা বিজেপির শহর মন্ডল ১-এর সাধারণ সম্পাদক গোকুল আচার্য জানান, এই এলাকার প্রায় সকলেই বাংলাদেশি। স্থানীয়ভাবে তাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। প্রয়োজনে সিএএ ক্যাম্প করার কথাও জানিয়েছেন তিনি।