Paschim Medinipur: অনেকদিন ধরেই ক্লাসে আসছিল না মেয়েটি, সন্দেহ হতেই বাড়ি গিয়ে সহপাঠীরা যা দেখল…
Paschim Medinipur: স্কুলেরই এক নাবালিকা ছাত্রী বেশ কয়েকদিন যাবত ক্লাসে আসছিলেন না। সন্দেহটা প্রথম দানা বাঁধে শিক্ষকদের মনেই।
পশ্চিম মেদিনীপুর: সংসারে অর্থাভাব। নুন আনতে পান্তা ফুরায় দিনের পর দিন। এমতাবস্থায় মেয়ে পড়াশোনা করে কী করে? একটা পেটের খরচ কমাতে তাই নাবালিকা অবস্থাতেই মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেওয়ার মত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাবা। নাহ! শেষমেশ আর সেই মেয়েকে উঠতে হয়নি বিয়ের পিঁড়িতে। বরং স্কুলের কন্যাশ্রী ক্লাবের সহপাঠীদের উদ্যোগে নাবালিকা ফিরেছে ক্লাসরুমে। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার অন্তর্গত বরুনা সৎসঙ্গ হাই স্কুলে তাই আপাতত খুশির মেজাজ। কারণ সেখানে কুসংস্কার হেরেছে চেতনার কাছে।
স্কুলেরই এক নাবালিকা ছাত্রী বেশ কয়েকদিন যাবত ক্লাসে আসছিলেন না। সন্দেহটা প্রথম দানা বাঁধে শিক্ষকদের মনেই। সহপাঠীর না আসায় হতবাক হয়ে যায় বাকি ছাত্রীরাও। শিক্ষকদের পরামর্শে ওই ছাত্রীর খোঁজখবর শুরু করে স্কুলের কন্যাশ্রী ক্লাব ও বন্ধুমহল ক্লাবের সদস্যরা। সটান তাঁরা পৌঁছে যায় অনুপস্থিত ছাত্রীর বাড়িতে। সেখানে তার বাবা মায়ের বয়ানে হতবাক হয়ে যায় বাকি ছাত্রীরা। তারা জানতে পারে পরিবারের তরফে বিয়ে ঠিক করা হয়ে গিয়েছে ওই নাবালিকার। তাই পড়াশোনা বন্ধ করিয়ে তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে মাসির বাড়ি।
কিন্তু নাবালিকা বিবাহ কেন হবে? কেনই বা এক ছাত্রী পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত হবে? সহপাঠীরা গোটা বিষয়টি বুঝিয়ে বলে ওই ছাত্রীর বাবা-মাকে। সফল হয় তারা। বিয়ের পিঁড়ি নয়, নিজের মেয়েকে ফের স্কুলে ফেরাতেও রাজি হন অভিভাবকরা। আপাতত হাসিমুখে সেই ছাত্রী নিয়মিত স্কুলে আসছে। লেখাপড়া শুরু হয়েছে জোর কদমে।
বিষয়টি নিয়ে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুজিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাদের স্কুলেরই এক ছাত্রী হঠাৎ পড়াশোনা বন্ধ করে দেয়। বেশ কিছুদিন যাবত তাকে স্কুলেও দেখা যাচ্ছিল না। জানতে পারা যায় তার পরিবার বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তার পড়াশোনা। আমাদের স্কুলের কন্যাশ্রী ক্লাব ও বন্ধুমহল ক্লাবের সদস্য ছাত্রীরা ওই মেয়েটির বাবা মাকে পড়াশোনা করাতে রাজি করায়। ছাত্রীটি স্কুলে আসছে। মাধ্যমিকের রেজিস্ট্রেশন করার জন্য আবেদন করেছে। তার পড়াশোনায় যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেজন্য আমরা পরিবারটিকে আশ্বস্ত করেছি। আর যারা সহপাঠীকে ফেরাল, তারা হয়ত আমাদের চেয়েও বেশি খুশি।’