পশ্চিম মেদিনীপুর: অশান্তি করে বাপের বাড়ি গিয়েছিল স্ত্রী। তাকে আনতে সেখানেই হাজির হয়েছিল স্বামী। কিন্তু কথা কাটাকাটিতে সেখানেই লেগে যায় ঝামেলা। মেয়ে-জামাইয়ের ঝামেলার মধ্যে নাক গলিয়ে ফেলেন শ্বশুরও। তারপর ঝামেলা বাধে দুজনের মধ্যে। শ্বশুর-জামাইয়ের ঝামেলায় তপ্ত হতে থাকে বাড়ির পরিস্থিতি। এরই মধ্যে মত্ত অবস্থায় জামাইয়ের মাথায় হাঁসুয়ার কোপ মারলেন শ্বশুর। অভিযোগ ঘিরে ধুন্ধুমার পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের রাধানগরের অমরপুর এলাকায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি জামাই। তাঁর মাথায় ১৬ টি সেলাই পড়েছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় পুলিশ তিন জনকে আটক করেছে।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে আনন্দপুর থানার চানমুড়া গ্রামের বাসিন্দা রাম হেমব্রত। পেশায় দিনমজুর রাম। স্ত্রী পার্বতির সঙ্গে মাধেমধ্যেই অশান্তি হত তাঁর। তবে একান্তই তা দাম্পত্য কলহ। পারিবারিক বিবাদ মিটেও যায়। গত মঙ্গলবারও স্বামী স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি হয়েছিল। তারপর স্ত্রী পার্বতী রাগ করে বাপের বাড়ি চলে যান।
বৃহস্পতিবার রাতে রাম তাঁর স্ত্রীকে আনতে গিয়েছিলেন শ্বশুরবাড়িতে। কিন্তু তখনও রাগ কমেনি পার্বতীর। দুজনের মধ্যে ফের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। তা থেকে ঝামেলা। পরিবারের সদস্যরা ঝামেলা মেটানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তা কাজে আসার বদলে ঝামেলা আরও বেড়ে যায়। এরই মাধে মত্ত অবস্থায় বাড়িতে ঢোকেন পার্বতীর বাবা। তিনি মেয়ে-জামাইয়ের ঝামেলার মধ্যে ঢুকে যান।
এরপর ঝামেলা বাড়তে থাকে জামাই আর শ্বশুরের মধ্যে। অভিযোগ, জামাইয়ের সঙ্গে কথা কাটাকাটির মাঝেই শ্বশুর যে এমন কাণ্ড করে ফেলবেন, তা বুঝতে পারেননি কেউ। ঝামেলা করতে করতেই ঘর থেকে বেরিয়ে যান শ্বশুর। আচমকাই একটি হাঁসুয়া নিয়ে ঘরে ঢোকেন। তারপর জামাইয়ের মাথায় পিছন থেকে একটা কোপ দেন। ঘটনার আকস্মিকতায় চমকে ওঠেন সকলেই।
রক্তাক্ত অবস্থাতেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন জামাই। মাথার ডান পাশে তাঁর গভীর ক্ষত তৈরি হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ঘাটাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর মাথায় ১৬ টা সেলাই পড়েছে। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ঘাটাল থানার পুলিশ। এদিকে, ঘটনার পর থেকে পলাতক শ্বশুর মধু সোরেন। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। তবে রামের স্ত্রী ও শাশুড়িকে আটক করেছে পুলিশ।
আক্রান্ত রাম বলেন, “আমি বলেছিলাম, আমার স্ত্রীকে আমি বাড়ি নিয়ে আসব। কিন্তু ওঁ বলেন, মেয়েকে ছাড়বেন না। আমার স্ত্রী কিন্তু আসতেই চেয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ কেন এমনটা করলেন জানি না।”