দাসপুর: সকাল থেকে হই-হট্টগোল চলছিল এলাকায়। পাশের বাড়ির বউটা আর নেই। কানাঘুষো ইতিউতি শোনা যাচ্ছিল অনেকক্ষণ ধরেই। কেউ বলছেন আত্মহত্যা, কেউ আবার বলছেন, ‘মেয়েটাকে মেরেই ফেলেছে হয়ত’ তবে পরিষ্কার কিছু জানা যাচ্ছিল না। সুরাহা হল পুলিশ আসার পর।
পাঁচ বছরের বিবাহিত সম্পর্ক। এক সন্তানও রয়েছে দম্পতির। তবে, সংসার সুখের ছিল না। কিছু না কিছু অশান্তি চলছিল। এরপর ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নিলেন স্বামী। নিজের স্ত্রীকে নিজেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, স্ত্রীর হয়ে নিজেই লিখলেন সুইসাইড নোটও! পরে যদিও ভিলেজ পুলিশের কাছে গোটা বিষয়টি স্বীকার করে নেয় অভিযুক্ত।
পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের ঘটনা। দাসপুর থানার রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের রামগড় গ্রাম। সেখানেই বাস করতেন বিজলী দম্পতি । স্বামী প্রসেনজিৎ বিজলী ও স্ত্রী আস্থা বিজলীর এক সন্তানও রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ছ’টা নাগাদ হঠাৎ হন্তদন্ত হয়ে প্রসেনজিৎ বাবু গ্রামের ভিলেজ পুলিশের কাছে যান। ভিলেজ পুলিশ সুশান্ত কপাটের কাছে গিয়ে তিনি প্রথমে জানান, তাঁর স্ত্রী বিজলী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এরপর ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দাসপুর থানার পুলিশ।
কিন্তু প্রসেনজিৎ এর হাবভাবে প্রথম থেকেই সন্দেহ হয় দাসপুর থানার পুলিশের। ওই বাড়িতেই প্রসেনজিৎকে একাধিক প্রশ্ন করতে থাকেন তাঁরা। ততক্ষণে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় সংবাদ মাধ্যমও। এবার ক্রমাগত প্রশ্ন ও সংবাদ মাধ্যমের উপস্থিতিতে ভেঙে পড়েন স্বামী প্রসেনজিৎ। স্বীকার করে নেন যে তিনি নিজেই স্ত্রীকে খুন করে গলায় শাড়ির ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত পুলিশকে জানিয়েছে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে এলাকারই কারোর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। সেই কারণে স্ত্রীকে সন্দেহ করতেন তিনি। আর এই সন্দেহের জেরেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি চলছিল দীর্ঘদিন ধরেই।
ঘাটাল মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অগ্নিশ্বর চৌধুরী বলেন, “এই ঘটনায় স্বামী প্রসেনজিৎ বিজলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রসেনজিৎ পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে সে ঝগড়ার সময় রাগের বশে স্ত্রীর গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুন করে ফেলেছে। অন্যদিকে, স্ত্রী বছর ২২ এর আস্থা বিজলীর দেহ দাসপুর পুলিশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।