মেদিনীপুর: কেন একসঙ্গে সমস্ত পুরসভায় ভোট নয়, শনিবারও তা নিয়ে সরব হলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এদিন মেদিনীপুরে দিলীপ ঘোষ বলেন, বিধানসভা, লোকসভা, পঞ্চায়েত সমস্ত ভোটই তো এক সঙ্গে হয়েছে। তা হলে হঠাৎ পুরসভার ক্ষেত্রে অন্য নিয়ম কেন? এ প্রসঙ্গেই দিলীপের সংযোজন, “তবে কি তৃণমূল ভয় পাচ্ছে? একসঙ্গে ভোট হলে লুঠপাটে সমস্যা হবে?”
এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমরা চাইছিলাম পশ্চিমবাংলার প্রতিটা পুরসভায় একসঙ্গে নির্বাচন হোক। কলকাতার লোকেদের যদি এই সুবিধাটা পাওয়ার অধিকার থাকে, তাহলে বাংলার বাকি জায়গার লোকজনেরও তো তা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। বিধানসভা ও লোকসভা ভোট একসঙ্গে হল, পঞ্চায়েতও একসঙ্গে হয়েছিল। তাহলে পুরসভা নির্বাচনের সময় আলাদা আলাদা ভাবে কেন করা হচ্ছে? যদি একসঙ্গে নির্বাচন হয় লুটপাট করতে পারবে না, সরকার কি এই ভয়টাই পাচ্ছে?”
একই সঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, পুরভোটও কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই হোক, তেমনটাই চান তাঁরা। তাঁর বক্তব্য, বাংলায় যে কোনও ভোটই কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে করানো প্রয়োজন। বাংলায় একেবারেই আইনশৃঙ্খলা নেই। পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্নের অবকাশ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষের প্রতিক্রিয়া, “বাংলায় নির্বাচন হলেই আমরা সব সময় চাই কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে হোক। কিন্তু তার জন্য কোর্টে যেতে হয়। আসলে এখানকার রাজ্য সরকার তো তা চায় না। ত্রিপুরাকে দেখে শেখা উচিত এ রাজ্যের। যার এত সমালোচনা করা হচ্ছে, সেই ত্রিপুরা আগেই কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে রেখেছিল। কারণ, যাতে কেউ অভিযোগ না করতে পারে, যাতে গোলমাল না হয়। ত্রিপুরা সরকার সেটা করেও দেখিয়েছে। দু’ একটা জায়গায় লোকজনকে চমকে দিয়েছে। তার জন্য এখানে কান্নাকাটির রোল পড়ে গিয়েছে।”
দিলীপ ঘোষের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে শান্তিপূর্ণ ভোট হওয়া তো দূরের কথা, মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করেও হিংসার বাতাবরণ তৈরি করা হয়। ‘এখানে মনোনয়ন থেকে ভোট পর্যন্ত সব জায়গায় মারপিট করা হয়, লুঠপাট করা হয়, বিরোধীদের আটকানো হয়’, বক্তব্য দিলীপ ঘোষের।
একই সঙ্গে কলকাতা পুরভোটে বিজেপির প্রার্থী তালিকা প্রকাশ নিয়েও মুখ খোলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। জানান, সঠিক সময়েই তালিকা প্রকাশ করা হবে। দিলীপ ঘোষের কথায়, “প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার জন্য দলীয় নেতৃত্ব প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন। ঠিক সময়ে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হবে। নির্বাচন হবে, নির্বাচনে লড়াইও হবে।”
সূত্রের খবর, শনিবারই বিজেপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে চূড়ান্ত বৈঠক হতে পারে। এদিন সন্ধ্যায় কিংবা রবিবারই প্রকাশ করা হতে পারে কলকাতা পুরভোটে বিজেপির মুখেদের নাম। তৃণমূল তাদের প্রার্থী তালিকায় ৪৫ শতাংশ মহিলা রেখেছেন। বিজেপিও কি মহিলাদের অগ্রাধিকার দেবে? দিলীপ ঘোষের জবাব, “শুধু মহিলাই নয়, সমাজের সর্বস্তরের প্রতিনিধিরা থাকবেন আমাদের তালিকায়।”