মেদিনীপুর: সরকারে না থাকলে কি মানুষের দুয়ারে যাওয়া যায় না? রাজ্যের ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের জন্য রীতিমতো হেল্পডেস্ক খুলে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সে বার্তাই দিলেন মেদিনীপুর শহরের সিপিএম নেতৃত্ব। গোটা রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরেও শুরু হয়েছে দুয়ারে সরকার কর্মসূচি। সেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আসছেন, ফর্ম তুলছেন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা নিতে। সেই ফর্ম পূরণে সহযোগিতা-সহ বিভিন্ন বিভ্রান্তি দূর করতে এবার দুয়ারে সরকারের শিবিরের বাইরে আলাদা ক্যাম্প করল স্থানীয় সিপিএম নেতারা। এ এক বিরল দৃশ্যের সাক্ষী রইল মেদিনীপুর শহরের কর্নেলগোলা এলাকার মানুষ। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সুকুমার আচার্যের বক্তব্য, তাঁরা ক্ষমতা নেই ঠিকই। কিন্তু সরকারের ভাল কাজের বিরোধিতাতেও তাঁরা নেই।
মেদিনীপুর শহরের কর্নেলগোলায় নারায়ণ বিদ্যাভবন বালিকা বিভাগে দুয়ারে সরকারের শিবির খোলা হয়েছে। সেই শিবিরে যাওয়া মানুষের যাতে কোনও রকম অসুবিধা না হয়, সে কারণে সিপিএমের শাখা অফিসের বাইরে ক্যাম্প করেছে সিপিএম। আর তাতে সাধারণ মানুষ এসে সুযোগও নিচ্ছেন। কোনও টাকা পয়সা নেওয়ার ব্যাপার নেই। সাধারণ মানুষের স্বার্থে ফর্ম পূরণ-সহ বিভিন্ন কাজ করে দিচ্ছেন সিপিএম কর্মী, সমর্থকরা।
এ প্রসঙ্গে সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সুকুমার আচার্যের বক্তব্য, “সরকারে যেই থাকুক না কেন সে যদি জনগণের জন্য কিছু করতে চায়, তা হলে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব মানুষের পাশে দাঁড়ানো। সরকারের পাশে দাঁড়ানোটা বড় কথা নয়। আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছি।” সিপিএমের এই উদ্যোগে খুশি এলাকার সাধারণ মানুষও। তাঁরা বলছেন, “এটা খুবই ভাল উদ্যোগ। ওনারা সাহায্য করছেন বলে আমাদের ফর্মটা ভর্তি করতেও সুবিধা হচ্ছে। এ ধরনের কাজ হলে তো ভালই হয়। আমরাও চাই এলাকায় সকলের সঙ্গে সকলের এই সুসম্পর্কটা থাকুক। ”
তবে বিজেপি এর মধ্যে রাজনীতির স্পষ্ট অবস্থান লক্ষ্য করছে। বিজেপির জেলা সভাপতি সৌমেন তিওয়ারির বক্তব্য, “এটা ১০০ শতাংশ রাজনীতি। তোমার দু’ আনা, আমার দু’ আনা করেই তো বন্ধুপনা শুরু হয়েছে। এখানে তো রাজনীতি ছাড়া আর কিছু নয়। পশ্চিমবঙ্গে তো প্রতিটা ক্ষেত্রে রাজনীতি ছাড়া আর কিছু হয় না। তাই এটা রাজনীতির একটা অঙ্গ। মিলেমিশে ভাগ বাটোয়ারা করে যার যেখানে কম আছে লেনদেন করে চলছে তৃণমূল আর সিপিএম।
যদিও সিপিএমের এ ভাবে এগিয়ে আসাকে সাধুবাদ জানিয়েছে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসও। দলের চেয়ারম্যান দীনেন রায় বলেন, “এ ধরনের উদ্যোগ খুবই ভাল। মানুষের পাশে থাকার কথা সবাই বলে। কিন্তু কাজে খুব কম লোকই করেন। সিপিএম এ ধরনের কাজ করছে, তাই ওদের ধন্যবাদ জানাই।” আরও পড়ুন: ৪ জ়োনে বাংলাকে ভাগ করবে সিবিআই, চারটি দল চষে বেড়াবে ‘হিংসা’ খুঁজতে