Post Poll Violence: ৪ জ়োনে বাংলাকে ভাগ করবে সিবিআই, চারটি দল চষে বেড়াবে ‘হিংসা’ খুঁজতে

গত ১৯ অগস্টই কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্ত করবে সিবিআই। একইসঙ্গে গঠন করা হয় সিট।

Post Poll Violence: ৪ জ়োনে বাংলাকে ভাগ করবে সিবিআই, চারটি দল চষে বেড়াবে 'হিংসা' খুঁজতে
নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 21, 2021 | 4:48 PM

কলকাতা: ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগের তদন্তভার এখন সিবিআইয়ের হাতে। প্রথম থেকেই তৎপর তারা। সূত্রের খবর, তদন্তের সুবিধার্থে প্রথমেই গোটা রাজ্যকে চারটি জ়োনে ভাগ করেছে তারা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার চারটি দল রাজ্যে আসার পর এই জ়োন ধরেই তদন্ত করবে। শুক্রবারই চার দলের দায়িত্বে থাকা জয়েন্ট ডিরেক্টরদের ভার্চুয়াল বৈঠক।

সূত্রের খবর, পূর্ব-পশ্চিম-উত্তর-দক্ষিণ এই চার ভাগে রাজ্যকে ভাগ করবে সিবিআই। এরপর যে সমস্ত জায়গা থেকে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ উঠেছে, তা ঘুরে দেখবে। কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টকে এই তদন্তে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে বলেও সূত্রের দাবি। আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলবে। আগামী সোমবার বা মঙ্গলবারই রাজ্যে আসতে চলেছে সিবিআই।

গত ১৯ অগস্টই কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্ত করবে সিবিআই। একইসঙ্গে গঠন করা হয় সিট। পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চের নির্দেশ, আদালতের নজরদারিতে খুন, ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগের তদন্ত করবে সিবিআই। অন্যান্য অভিযোগের তদন্ত করবে সিট। সিটের তদন্তের নজরদারিতে থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি।

এই নির্দেশ মিলতেই দিল্লিতে তৎপরতা শুরু হয়ে যায়। শুক্রবারই এ রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে চারটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে সিবিআই। প্রতি দলের নেতৃত্বে রাখা হচ্ছে জয়েন্ট ডিরেক্টর পদমর্যাদার একজন অফিসারকে। এছাড়াও বিশেষ তদন্তকারী দলে রাখা হচ্ছে ডিআইজি ও এসপি পদমর্যাদার অফিসারদের। সূত্রের খবর, লখনউ, পাটনা, দিল্লি ও দেহরাদুনের সিবিআই অফিসারদের নিয়ে গড়া হয়েছে এই বিশেষ দল। চারটে দলে আট জন করে আধিকারিক থাকছেন। প্রত্যেক টিমে এক জন করে এসপি পদমর্যাদার মহিলা আধিকারিকও থাকছেন।

নির্বাচনের পর রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হিংসার অভিযোগ ওঠে। অশান্ত বাংলায় রাজ্য ও রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন আইনজীবী অনিন্দ্যসুন্দর দাস। পাশাপাশি এই ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ তুলে আদালতে যান আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেয়ালও। এ ছাড়াও আরও দু’টি মামলা দায়ের হয় এ সংক্রান্ত। এই ঘটনায় প্রথম থেকেই বিজেপি অভিযোগ করে এসেছে, পুলিশ অভিযোগ নিতে চাইছে না। হাইকোর্টে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার শুনানিতেও বার বার সে কথা উঠে আসে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দলীয় কর্মীদের উপর তৃণমূল কর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তারও অভিযোগ তোলে গেরুয়া শিবির। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও এ নিয়ে তারা রিপোর্ট দেয়।

এদিকে রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তুষ্ট আদালত জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও রাজ্যের লিগ্যাল সার্ভিসের আধিকারিককে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কিন্তু সেই কমিটির অগ্রগতি নিয়ে খুব একটা সন্তুষ্ট হয়নি আদালত। এরপরই যাবতীয় অভিযোগ পর্যবেক্ষণের ভার জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বা NHRC-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে রাজ্য কেবলমাত্র লজিস্টিক সাপোর্ট দেবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়। ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা নিয়ে হাইকোর্টে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পাতার রিপোর্ট দেয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সেখানে অসংখ্য অভিযোগ তোলা হয়। “রাজ্যে আইনের শাসন নেই। শাসকের ইচ্ছাই এখানে আইন”, এমনও রিপোর্টে দাবি করে কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন। একই সঙ্গে ওই রিপোর্টে তৃণমূলের একাধিক প্রথম সারির নেতা মন্ত্রীকে ‘কুখ্যাত দুষ্কৃতী’ বলেও উল্লেখ করা হয়। পাল্টা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, “এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ করেছে মানবাধিকার কমিশনের বিশেষ দল। মানবাধিকার কমিশনের বিশেষ দল পক্ষপাতদুষ্ট।” আরও পড়ুন: ‘ও কোথায় যেত, কার সঙ্গে মিশত বাড়িতে কিছুই বলত না’, ভাইয়ের এমন পরিণতিতে বাকরুদ্ধ দাদা