ঘাটাল: শরীরে পোশাক বলতে রয়েছে কেবল অন্তর্বাস। সারা দেহে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন। রক্ত চুঁইয়ে বেরোচ্ছে। মাথায় গভীর ক্ষত। চোখ দুটো খোলা তবে স্তব্ধ। পলক পড়ছে না। গ্রামবাসীদের যখন নজর পড়েছিল তাঁর ওপর, তখন ধুকধুক করে চলছিল হৃদযন্ত্রটি। কিছু বলার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু অস্পষ্ট ক্ষীণ গলায় গোঙানির আওয়াজ ছাড়া কিছুই বেরোয়নি। সাতসকালে গা শিউরে ওঠার মতো ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুরের (Paschim Medinipur) দাসপুরে (Daspur)।
নাম বিজয় বারিক। দাসপুরের গৌর এলাকারই বাসিন্দা। স্থানীয় এলাকাতেই একটি মাছের আরতে কাজ করতেন তিনি। বৃহস্পতিবারও কাজে যান। পরিবার বলছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে বিজয়ের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সম্ভাব্য সমস্ত জায়গাতেই খোঁজ করেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। এরপর শুক্রবার সকালে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে রাস্তাতেই পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে বারিক কিছু বলার চেষ্টা করেছিলেন। কীভাবে তাঁর এই অবস্থা হয়েছে, সেই প্রশ্নেরই উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল কিছু বলতে পারেননি। স্থানীয়দের দাবি, শরীরে একাধিক আঘাত ছিল, মাথার পিছন থ্যাঁতলানো ছিল।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁকে ঘাটাল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরিবারের অভিযোগ, খুন করা হয়েছে তাঁকে। কিন্তু কী কারণে খুন, কারোর সঙ্গে বিজয়ের শত্রুতা ছিল কিনা, তা স্পষ্ট নয়। সে ব্যাপারে কোনও ইঙ্গিতও দিতে পারছেন না তাঁরা। পুলিশ আপাতত খুনের মামলা রুজু করেই তদন্ত শুরু করেছে। এলাকায় চাঞ্চল্য রয়েছে।
আরও পড়ুন: জুয়া খেলার প্রতিবাদ করাতেই কি হামলা? দুই বিজেপি কর্মীকে এলোপাথাড়ি অস্ত্রের ‘কোপ’
কিছুদিন আগেও এলাকায় এক যুবককে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়, পরে তাঁর মৃত্যু হয়। কেন এই ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে সন্ধিহান গ্রামবাসীরা। পুলিশকে গোটা বিষয়টি জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। বিজয় কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।