বিজেপির এগিয়ে থাকা বুথে কাজ করলেই খুন! অভিযোগ তুলে ইস্তফা তৃণমূল প্রধানের

"কাউকে সার্টিফিকেট দেব, কাউকে দেব না, এটা আমি পারব না। আমি জনগণের প্রধান। সবার কাজ করতে এসেছি। এইভাবে কাজ করা সম্ভব নয়। তাই আমি পদত্যাগ করেছি।''

বিজেপির এগিয়ে থাকা বুথে কাজ করলেই খুন! অভিযোগ তুলে ইস্তফা তৃণমূল প্রধানের
দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পুতুল দেবীর
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 04, 2021 | 6:36 PM

পশ্চিম মেদিনীপুর: বিজেপির এগিয়ে থাকা বুথের গ্রাম পঞ্চায়েতে মানুষকে পরিষেবা দিলে প্রাণে মেরে ফেলা হবে তৃণমূল প্রধানকে। বকলমে এমনই নাকি হুইপ জারি করেছেন তৃণমূল নেতারা। শুক্রবার দলের বিরুদ্ধে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করে বিডিওর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিলেন ঘাটালের মনসুকা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পুতুল পাত্র। ঘটনায় এলাকার রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তীব্র শোরগোল। এমনকি হুমকির প্রমাণ হিসাবে প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক শঙ্কর দোলুইয়ের সঙ্গে তাঁর ফোনে কথোপকথনের অডিয়ো সামনে এনেছেন এই তৃণমূল নেত্রী।

দীর্ঘদিন পর ঘাটাল বিধানসভা হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। একুশের বিধানসভা ভোটে এখানে জয়লাভ করেছে বিজেপি। তৃণমূলের দু’ বারের বিধায়ক শঙ্কর দোলইকে হারিয়ে ঘাটাল বিধানসভায় জয়লাভ করেন বিজেপি প্রার্থী শীতল কপাট। ভোটের ফলাফল বেরনোর পর থেকেই দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে হিংসার অভিযোগ করেছে। এই প্রেক্ষিতে নিজের দলের নেতৃত্ব তথা প্রাক্তন বিধায়কের বিরুদ্ধে কার্যত বোমা ফাটালেন তৃণমূল পরিচালিত মনসুকা দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পুতুল পাত্র। তাঁর অভিযোগ, প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দোলই-সহ দলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী হুইপ জারি করে বলেছেন, অঞ্চলের যে সমস্ত এলাকায় বিজেপি এগিয়ে রয়েছে সেখানে গ্রাম পঞ্চায়েতের পরিষেবা দেওয়া যাবে না। এই ‘হুইপ’ মেনে তাঁর পক্ষে কাজ করা অসম্ভব। তিনি পঞ্চায়েত এলাকায় সবার প্রধান। এভাবে বেছে বেছে কাজ করা যায় না। তাই প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করলেন তিনি।

পুতুল দেবীর কথায়, “নেতারা বলেছেন, যে তিনটে বুথে জিতেছে, সেই বুথগুলিতেই শুধু কাজ হবে। অন্য বুথে কাজ হবেনি। কোনও জরুরিভিত্তিক ইনকাম সার্টিফিকেট, সার্টিফিকেট দেওয়া যাবেনি। আমি এইখানে বসে এই কাজ করতে পারব না। কাউকে সার্টিফিকেট দেব, কাউকে দেব না, এটা আমি পারব না। আমি জনগণের প্রধান। সবার কাজ করতে এসেছি। এইভাবে কাজ করা সম্ভব নয়। তাই আমি পদত্যাগ করেছি।”

এখানেই শেষ নয়। পুতুল দেবীর দাবি, তাঁকে খুনেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে। বলেন, “আমি একজন মহিলা, আমাকে মার্ডারেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে। এখানকার নেতা নিরঞ্জন সামন্ত লোক লাগিয়েছিলেন আমাকে মার্ডারের জন্য।” এমনকি তাঁকে কেটে ফেলার হুমকি দিয়েছেন আর এক তৃণমূল নেতা, চাঞ্চল্যকর দাবি পুতুল দেবীর। জানান, প্রাক্তন বিধায়ক থেকে অঞ্চল সভাপতি সবাই এসব জানেন। প্রাক্তন বিধায়ককে নিশানা করে তিনি বলেন, “যেখানে টাকা সেখানেই এমএলএ। অন্যান্য সমস্য়ার কথা বললে কোনও কাজ হয় না।” সেই সঙ্গে যোগ করেন, “নিজের দল যদি কাজ করার জন্য খুন করতে চায় তাহলে বিরোধী দল তো আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যাবে। তারা কাজ হয়নি বলে মার্ডার করতে আসবে! তাই এই পদত্যাগ।”

যদিও ঘাটালের প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দলুইয়ের দাবি, ২০১৯ সালের আগে পর্যন্ত ঠিকঠাক কাজ করতেন ওই প্রধান। তার পর দলের সঙ্গে ‘অ্যাডজাস্টমেন্ট’ করতে পারেননি তিনি। হুমকির অভিযোগও অস্বীকার করেছেন তিনি।

অন্যদিকে বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাটের অভিযোগ, এভাবেই বিজেপিকে কাজ করতে দিচ্ছে না তৃণমূল। যেখানে কাটমানি নেই, সেখানে কাজ বন্ধ। টিপ্পনী তাঁর।