
পিংলা: এসআইআরের সৌজন্যে ২৬ বছর পর বাবা-মার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। নিরুদ্দেশ ছেলেকে ফিরে পেয়ে যেমন বাবা-মার চোখে আনন্দাশ্রু। তেমনই বাবা-মার সঙ্গে কথা বলতে পেরে চোখে জল ছেলেরও। কিন্তু, ২৬ বছর আগে কেন বাড়ি ছেড়েছিলেন? কোথায় কোথায় থেকেছেন? আজ বাবা-মার সঙ্গে ফের যোগাযোগের পর স্মৃতির সরণি বেয়ে ২৬ বছর আগের সেই ঘটনা তুলে ধরলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার তরুণ দত্ত।
বর্তমানে পিংলার দুজিপুর এলাকার বাসিন্দা হলেও তরুণ দত্তর আদি বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ায়। ১৯৯৯ সালে কুড়ি বছর বয়সে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন তিনি। কেন বাড়ি ছেড়েছিলেন। পিংলার বাড়িতে বসে তরুণ বললেন, “বাবার সঙ্গে ধান কেনাবেচা করতাম। বেশ কিছু ধারদেনা হয়ে গিয়েছিল। বাবা বকাবকি করেছিলেন। বাবার উপর অভিমানে ঘর ছেড়ে চলে যাই।” ঘর ছেড়ে কোথায় গিয়েছিলেন? স্মৃতির সরণি বেয়ে তরুণ বলেন, “ঘর ছেড়ে প্রথমে দিল্লি যাই। ওখানে দর্জির কাজ করতাম। দিল্লিতে সাত-আট বছর দর্জির কাজ করেছি।”
দিল্লিতে থাকা অবস্থায় পিংলার এক সহকর্মীর সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। তাঁর পরামর্শে পিংলায় এসে জমি জায়গা কিনে বিয়ে করেন। বর্তমানে স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে থাকেন। দর্জির কাজের পাশাপাশি চাষবাস করেন। এই ২৬ বছরে মা ও বাবার সঙ্গে একবারও যোগাযোগ হয়নি তাঁর। কখনও কি বাবা-মাকে মনে পড়েনি? চোখের জল লুকিয়ে তরুণ বললেন, বাবা-মার কথা তাঁর মনে পড়েছে। কিন্তু, যোগাযোগা করেননি। আর সেই যোগাযোগটাই হয়ে গেল এসআইআরের সৌজন্যে।
তরুণ জানালেন, বাবা, মা ছাড়াও তাঁর তিন দিদি রয়েছেন। এখন প্রত্যেকদিন সবার সঙ্গে কথা হয়। বাবা-মার সঙ্গে দেখা করতে যাবেন কবে? তরুণ বললেন, বাবা-মাকে দেখতে যাওয়ার খুব ইচ্ছে করছে তাঁর। কিন্তু, চাষের কিছু কাজ বাকি। কয়েকদিনের মধ্যেই শেষ কাজ শেষ করে ছুটে যাবেন বাবা-মার কাছে। ফোনে কথা হলেও একদম সামনে থেকে ২৬ বছর পর বাবা-মাকে দেখবেন। এখন সেই অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি।