‘আমার খুব ইচ্ছা করে ১০০ বছর বাঁচি’, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হাতে পেয়ে উৎফুল্ল ‘বুড়ি’ মা-মেয়ে

TV9 Bangla Digital | Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Aug 30, 2021 | 1:05 AM

Purba Burdwan: স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে নসরতপুরের ইটখোলা পাড়ায় মেয়ে লতিকা সরকারের সঙ্গেই থাকেন তাঁর ছিয়ানব্বই বছরের বৃদ্ধা মা।

আমার খুব ইচ্ছা করে ১০০ বছর বাঁচি, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হাতে পেয়ে উৎফুল্ল বুড়ি মা-মেয়ে
নিজস্ব চিত্র।

Follow Us

পূর্ব বর্ধমান: ৯৬ বছরের মা। ৭৬ বছরের মেয়ে। প্রথমজন বয়সের ভারে ন্যুব্জ। দ্বিতীয় জন বয়সের ছাপ চোখে মুখে থাকলেও কথা বলেন গুছিয়ে। বয়স বাড়ছে, রোগের চিন্তাও বাড়ছে। বিপদ আপদ হলে কে খরচ করে চিকিৎসা করাবে, সেটাই এতদিন চিন্তা ছিল। সদ্য হাতে এসেছে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড। কার্ড হাতে পেতেই খুশি ‘দুই বুড়ি’। বলছেন, কিছুটা নিশ্চিন্ত হওয়া গেল। কোনও রোগ হলে চিকিৎসার দায়িত্ব এবার সরকারেরই।

পূর্বস্থলী-১ নম্বর ব্লকের নসরপুর পঞ্চায়েতের ইট খোলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা সরস্বতী ঘোষ ও লতিকা সরকার। এখন থেকে একই সঙ্গে মা ও মেয়ে পাবেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা। গত দু’ দিন আগে পূর্বস্থলীর সমুদ্রগড়ে নসরতপুর পারুলডাঙা হাইস্কুলে অনুষ্ঠিত হয় দুয়ারে সরকারের শিবির। সেই শিবিরেই সরকারী স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিতে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন মা ও মেয়ে। অন্যান্যদের সঙ্গে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে বয়সের তোয়াক্কা না করেই দু’জনে সংগ্রহ করেন কার্ড।

এ দিন ৯৬ বছর বয়সী সরস্বতী ঘোষ জানান, তাঁর দেখা সেরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। বৃদ্ধার বড় সাধ ১০০ বছর পর্যন্ত বাঁচার। বয়স কত জিজ্ঞাসা করায় বললেন, “আমি তো বয়স এখন কত বলতে পারি না। তবে সাল ধরে বলতে পারি। বাংলার ৫০ সালে তখন খুব বন্যা হয়েছিল। তখন আমার ২৪ বছর বয়স ছিল।” ১৬ বছর বয়সে বউকে একা রেখে চলে যান স্বামী। এরপর এক মেয়েকে নিয়ে সরস্বতীদেবীর একা একা জীবনযুদ্ধ শুরু। বললেন, “মেয়ের বিয়ে দিলাম। বাচ্চাকাচ্চা হল। এর পর থেকেই মেয়ের কাছেই থাকি। আমার ইচ্ছা ১০০ বছর বাঁচি।” মেয়ে লতিকা সরকার বলেন, “আমি-মা আছি। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডটা পেয়ে ভালই হল। ডাক্তার দেখানোর তো সেরকম ক্ষমতা নেই।”

স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে নসরতপুরের ইটখোলা পাড়ায় মেয়ে লতিকা সরকারের সঙ্গেই থাকেন তাঁর ছিয়ানব্বই বছরের বৃদ্ধা মা। সরস্বতী দেবীর বয়স ৯৬ পেরিয়ে গেলেও এখনও লাঠি নিয়ে দিব্যি হেঁটে চলেই বেড়ান তিনি। অভাব-অনটন নিত্যদিনের সঙ্গী। তাই এই বয়সে মায়ের রোগভোগ হলে কী ভাবে তার চিকিৎসা করাবে চিন্তা ছিল মেয়েরও। এবার দু’জনেরই কিছুটা স্বস্তি।

বর্তমানে দুই বৃদ্ধাকে দেখভাল করেন লতিকাদেবীর মেয়ের ঘরের নাতি অভিজিৎ মল্লিক। তিনি জানালেন, গত সপ্তাহেই এলাকায় দুয়ারে সরকারের শিবির খোলা হয়। সেখানেই প্রয়োজনীয় ফর্ম তুলে তা পূরণ করেন তাঁরা। এরপর কার্ড পেতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি। তাড়াতাড়িই হয়ে গিয়েছে সমস্ত কিছু। রাজ্যজুড়ে দুয়ারে সরকার নিয়ে যখন ভুরি ভুরি অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে, সেখানে নসরতপুরের এই দুই বৃদ্ধার কাহিনী সদর্থকই বটে। আরও পড়ুন: নিউমোনিয়ার সঙ্গে লড়াই করতে বিনামূল্যে টিকা দেবে রাজ্য, করোনাকালে রক্ষাকবচ

Next Article