নিউমোনিয়ার সঙ্গে লড়াই করতে বিনামূল্যে টিকা দেবে রাজ্য, করোনাকালে রক্ষাকবচ

Pneumonia: এতদিন এই টিকা বেসরকারি জায়গা থেকে  নিতে হতো শিশুকে। যার জন্য খরচ পড়ত অনেক টাকা।

নিউমোনিয়ার সঙ্গে লড়াই করতে বিনামূল্যে টিকা দেবে রাজ্য, করোনাকালে রক্ষাকবচ
অবশেষে মিলল শিশুদের ভ্যাকসিনের অনুমতি (ফাইল চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 30, 2021 | 12:13 AM

কলকাতা: সদ্যোজাত থেকে ১ বছরের শিশুদের বিনামূল্যে নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন (পিসিভি) দেওয়ার সিদ্ধান্ত রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের। এর জন্য ১ লক্ষ টিকা পাঠাচ্ছে কেন্দ্র। শিশুদের রুটিন ইমিউনাইজেশনে পিসিভি এতদিন ছিল না। ফলে নিউমোনিয়া রোধে এই টিকা কিনতে হতো বাইরে থেকে। এদিকে টিকার দাম যেহেতু বেশি, অনেকের পক্ষেই তা কেনার সামর্থ্য নেই। ফলে বহু পরিবার তা কিনত না। যার জেরে অসুরক্ষিত থেকে যেত শিশুদের জীবন। শিশু মৃত্যুর হার কমাতে নিঃসন্দেহে এই সিদ্ধান্তকে বড় পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা।

কেন্দ্রের ‘ইউনিভার্সাল ইমিউনাইজেশন প্রোগ্রাম’-এ নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন বা পিসিভির তিন ডোজ়ের কথা বলা হয়েছে। যদিও চারটে ডোজ় দিতে হয়। কিন্তু সেটা পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে ছোট আকারে কয়েকটি জায়গায় দেওয়া হচ্ছে। সবার জন্য দেওয়া হয় না। পশ্চিমবঙ্গে সরকারি ভ্যাকসিনেশন সেন্টারগুলি থেকে বাচ্চারা নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন পায় না। ফলে ওদের প্রাইভেট হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে গিয়ে নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন নিতে হয়। ফলে নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন নেওয়ার হার খুবই কম। যার জেরে ইনভেসিভ নিউমোকক্কাল ডিজিজ (IPD) দেখতে পাই।

প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ শিশু প্রাণ হারায় নিউমোনিয়ায়। ২০১৭ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এ ক্ষেত্রে ৫ বছরের কম বয়স যে সমস্ত শিশুর, তাদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর প্রায় ১৫ শতাংশ এই সংক্রমণে। নিউমোনিয়া নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে ১২ নভেম্বর নিউমোনিয়া দিবসও পালিত হয় বিশ্বজুড়ে। এতদিন নানা টিকা, সতর্কতা দিয়ে নিউমোনিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই চলছিল ঠিকই। কিন্তু করোনা কালে নিউমোনিয়া একটা বড় হুমকি হয়ে উঠেছে শিশু ও বয়স্কদের জন্য।

করোনা দেহে বাসা বেঁধে সব থেকে বেশি ক্ষতি করে ফুসফুসের। এদিকে নিউমোনিয়াও ফুসফুসেরই অসুখ। তাই এই সময়ে নিউমোনিয়া নিয়ে চিন্তা একটু বেশিই। চিকিৎসকরা বলেন মায়ের দুধ এই নিউমোনিয়ার সঙ্গে শিশুকে যুঝতে সাহায্য করে। এ ছাড়া ভিটামিন এ’র গুরুত্বও এই অসুখে বেশ ভাল রকমই। এর জেরে ফুসফুসের এপিথেলিয়াল কোষ সুস্থ স্বাভাবিক থাকে। তবে সব কিছুর সঙ্গে সঙ্গে শিশুর নিউমোনিয়ার টিকাকরণ কিন্তু অত্যাবশ্যক বলেই মনে করেন চিকিৎসকরা। নিউমোকক্কাল টিকা শিশুর রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়।

এদিকে এতদিন এই টিকা বেসরকারি জায়গা থেকে  নিতে হতো শিশুকে। যার জন্য খরচ পড়ত কয়েক হাজার টাকা। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর এই টিকাই এবার নিখরচায় দিতে উদ্যোগী হয়েছে। অর্থাৎ শিশুর ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে সরকারই প্রয়োজনীয় এই টিকার যা খরচ তা বহন করবে। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের সম্ভাবনা ও শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে চিকিৎসক মহল যখন বিশেষ উদ্বিগ্ন, তখন নিউমোকক্কাল টিকা শিশুকে দেওয়া থাকলে তা যে আলাদা রক্ষাকবচের ভূমিকা নেবে তেমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। আরও পড়ুন: অপারেশন টেবিলে হৃদযন্ত্র স্তব্ধ রোগীর! ‘মৃত’ দেহে প্রাণ ফেরালেন মেডিক্যালের চিকিৎসকরা