সিপিএম থেকে ‘সাসপেন্ডেড’ অনিল কন্যা! ভুলের ফিরিস্তি দিয়ে চিঠি অজন্তাকে
Ajanta Biswas: গত ২১ অগাস্ট কলকাতার জেলা কমিটির বৈঠকে যেমনটা আলোচনা হয়েছিল, সেই বয়ানই অজন্তা বিশ্বাসের কাছে পৌঁছেছে।
কলকাতা: ‘জাগো বাংলা’য় কলম ধরার জের। সাসপেনশনের চিঠি পেলেন অজন্তা বিশ্বাস। কলকাতার জেলা কমিটির বৈঠকে যেমনটা আলোচনা হয়েছিল, বয়ানে লেখা হয়েছে সেরকমই। দল থেকে ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হল অজন্তা বিশ্বাসকে। শাস্তির চিঠি নিয়ে এখনও নীরব অনিল-কন্যা।
গত ২১ অগাস্ট কলকাতার জেলা কমিটির বৈঠকে যেমনটা আলোচনা হয়েছিল, সেই বয়ানই অজন্তা বিশ্বাসের কাছে পৌঁছেছে। তাঁকে চিঠিতে জানানো হয়েছে যে, ৬ মাসের জন্য তাঁকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে। অজন্তা বিশ্বাসের কোথায় কোথায় ভুল ছিল, সেই বিষয়গুলোও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, সিপিএমের পার্টি মেম্বার হওয়া সত্ত্বেও তিনি ‘শত্রু’পক্ষের মুখপত্রে কলম ধরেছেন। সিঙ্গুর নিয়ে তিনি যে মন্তব্য করেছেন, অর্থাত্ গণবিক্ষোভের প্রসঙ্গ-তাও সিপিআইএমের পার্টি-অবস্থান নয়। সেক্ষেত্রেও তিনি পার্টি-লাইন লঙ্ঘন করেছেন।
অজন্তা বিশ্বাস অবশ্য মাঝে দলকে জানিয়েছিলেন. তাঁর এই আচরণে যদি দলের কেউ দুঃখ পেয়ে থাকেন, তাহলে তিনি দুঃখিত। কিন্তু সেক্ষেত্রেও অনিল-কন্যার মনোভাব ও তাঁর ক্ষমা চাওয়ার কায়দায় সদিচ্ছার অভাব ছিল বলে মনে করছেন সিপিএম নেতৃত্ব। সাসপেনশনের জন্য যে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তাতে এই প্রত্যেকটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।
অনিল-কন্যা হওয়ায় তাঁর এই বিষয়টি নিয়ে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত আলোচনা হয়েছে। দলের এক শীর্ষস্তরের নেতা এই বিষয়টিকে নিয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কাছে নালিশও করেছেন বলে জানা যাচ্ছে।
তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’য় লেখার কারণ নিয়ে জুলাই মাসের শেষের দিকেই অজন্তার সঙ্গে সিপিএম নেতৃত্বের প্রাথমিক কথা হয়। অনিল কন্যার সেই জবাবে সন্তুষ্ট হয় না সিপিএম। তবে পরবর্তীতে যে শোকজ চিঠি অজন্তার কাছে পাঠিয়েছিল তাঁর ইউনিট, তার উত্তরও দেননি তিনি। শো কজের জবাব অজন্তা দেননি।
দল আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিল, অজন্তা ক্ষমা না চাইলে তাঁর বিরুদ্ধে চরম পদক্ষেপ করতে হবে।গোটা বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের ঝড় বয়ে গেলেও লক্ষ্যণীয় ভাবে অজন্তা কোনও প্রতিবাদ করেননি। তিনি এই বিষয় নিয়ে সরাসরি বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর সঙ্গে কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’ শীর্ষক বিষয়ে তৃণমূলের মুখপত্রে গত ২৮ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই তিন কিস্তিতে অজন্তার প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। শেষ কিস্তিতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশস্তিও ছিল। যা দলের সদস্য হয়ে কাম্য় নয় বলেই দাবি বাম নেতৃত্বের। প্রাথমিকভাবে, সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক কল্লোল মজুমদার তৃণমূলের মুখপত্রে অজন্তার উত্তর সম্পাদকীয় লেখাকে ‘খারাপ কাজ’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। জেলা কমিটির বৈঠকেও এই নিয়ে বিস্তর জলঘোলা, সংশয় তৈরি হয়। দলের সদস্য হয়ে প্রতিপক্ষ দলের মুখপত্রে বিনা অনুমতিতে লেখা যে মেনে নেওয়া হবে না তখনই স্পষ্ট করে দেয় সিপিএম রাজ্য় নেতৃত্ব। আরও পড়ুন: সব রিপোর্টই নেগেটিভ, অজানা জ্বরে ২৪ ঘণ্টাতেই মৃত্যু ১২ শিশুর! এক সপ্তাহে মৃত্যু বেড়ে দাঁড়াল ৬৮-তে