সব রিপোর্টই নেগেটিভ, অজানা জ্বরে ২৪ ঘণ্টাতেই মৃত্যু ১২ শিশুর! এক সপ্তাহে মৃত্যু বেড়ে দাঁড়াল ৬৮-তে

Mystery fever in Uttar Pradesh: ফিরোজাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডঃ নীতা কুলশ্রেষ্ঠা বলেন,,"গত ২৪ ঘণ্টাতেই অজানা জ্বরে ১২টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি সমস্ত রোগীদেরই করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখনও অবধি কারোর রিপোর্টই পজেটিভ আসেনি।"

সব রিপোর্টই নেগেটিভ, অজানা জ্বরে ২৪ ঘণ্টাতেই মৃত্যু ১২ শিশুর! এক সপ্তাহে মৃত্যু বেড়ে দাঁড়াল ৬৮-তে
হাসপাতালের বাইরে রোগীদের ভিড়। ছবি:PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 30, 2021 | 12:03 PM

আগ্রা: কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসছে, সঙ্গে হাতে পায়ে খিঁচুনিও ধরছে। কখনও ডেঙ্গুর উপসর্গ, কখনও আবার চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন ম্যালেরিয়া হতে পারে। অজানা জ্বরে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২টি শিশুর মৃত্যু হল ফিরোজাবাদে। বিগত দু-এক সপ্তাহ ধরেই এই অজানা জ্বরে কাবু উত্তর প্রদেশের পশ্চিম অংশ। এক সপ্তাহেই সেখানে ৪০ শিশু সহ মোট ৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, মূলত ডেঙ্গু জ্বরের মতো উপর্সগ থাকলেও রিপোর্টে তা ধরা পড়ছে না। মূলত রাতে জ্বর আসছে, সকালের মধ্যেই এতটা শারীরিক অবনতি হচ্ছে যে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হচ্ছে রোগীদের। জ্বরের পাশাপাশি শরীরে জলের মাত্রা কমে যাওয়া ও প্লেটলেটের সংখ্যাও ব্যাপক হারে হ্রাস পাচ্ছে। সুস্থ হতে কমপক্ষে ১০ দিন সময় লাগায় অধিকাংশ হাসপাতালেই জায়গা মিলছে না। ব্লাড ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারও খালি হয়ে এসেছে প্রায়।

আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই আগ্রা, মথুরা, মইনপুরী, এটাহ ও কাশগঞ্জে সবথেকে বেশি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। অজানা জ্বরে সবথেকে বেশি প্রভাবিত হয়েছে ফিরোজাবাদ জেলা। পশ্চিমের পাশাপাশি বর্তমানে উত্তর প্রদেশের পূর্বভাগেও ভাইরাল জ্বরে আক্রান্তের খোঁজ মিলতে শুরু করেছে।

ফিরোজাবাদ জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ফিরোজাবাদ মেডিক্য়াল কলেজে মোট ১৩৫ জন শিশু অজানা জ্বর নিয়ে ভর্তি রয়েছে। এদের মধ্যে ৭২ জনেরই অবস্থা সঙ্কটজনক। আক্রান্তদের মধ্যে ৫০ শতাংশেরই ডেঙ্গুর উপসর্গ রয়েছে।

এ দিকে, একের পর এক শিশুর মৃত্যুর খবর মিলতেই কান্নায় ভেঙে পড়ছেন অভিভাবকরা। ফিরোজাবাদের শেখপুরের বাসিন্দা বিনোদ কুমার নামক এক ব্যক্তি বলেন, “আমার চার বছরের মেয়েটা বিগত চারদিন ধরে জ্বরে ভুগছিল। সরকারি হাসপাতালে জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়ে আমরা একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করি। জ্বর না কমায় ও প্লেটলেটের সংখ্যা কমে যাওয়ায় শনিবার তাঁর মৃত্যু হয়।”

গ্রামীণ অঞ্চলগুলির পাশাপাশি শহরেও এই অজানা জ্বর প্রবেশ করতে শুরু করেছে। আগ্রা সহ একাধিক শহরে আক্রান্তের খোঁজ মিলছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর একাধিক মেডিক্যাল টিম পাঠিয়েছে বিভিন্ন গ্রামে।  তবে পরিস্থিতি ক্রমশ্য খারাপ হওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে। ফিরোজাবাদের বিধায়ক মনীশ আসিজা বলেন, “জেলার অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। জল জমে থাকা, পরিস্কার পরিচ্ছ্ন্ন না থাকার কারণেও এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।”

এদিকে, ফিরোজাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডঃ নীতা কুলশ্রেষ্ঠা বলেন,,”গত ২৪ ঘণ্টাতেই অজানা জ্বরে ১২টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি সমস্ত রোগীদেরই করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখনও অবধি কারোর রিপোর্টই পজেটিভ আসেনি।”

পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালগুলিতে বেডের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে বলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। আপাতত রোগীদের ফাঁকা করোনা ওয়ার্ডেই রাখা হচ্ছে। অন্যত্র স্থানান্তরিত করার পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। জ্বর এতটাই বেশি থাকছে, যে তা চিন্তা বাড়াচ্ছে। প্রাপ্ত বয়স্করা ১০ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে গেলেও শিশুদের সুস্থ হতে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ সময় লাগছে। মৃত্যুহারও শিশুদের মধ্যেই বেশি। আরও পড়ুন: ১০০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্কদের টিকা দিয়ে নজির এই রাজ্যের, টিকাপ্রাপকদের সঙ্গে কথা বলবেন নমো