TMC MLA: ‘যমের অরুচি’! তৃণমূল বিধায়কের গাড়ি দুর্ঘটনার পরই ফেসবুকে পোস্ট, দায়ের হল খুনের চেষ্টার অভিযোগ
Kalna: বাপ্পা দাস এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। পাল্টা তাঁর দাবি, বিধায়ক মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন।
পূর্ব বর্ধমান: বৃহস্পতিবারই দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল কালনার বিধায়কের গাড়ি। সেই ঘটনায় কালনা থানায় দায়ের হল খুনের চেষ্টার অভিযোগ। শুক্রবার এই অভিযোগ দায়ের করেন খোদ তৃণমূল বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ। বিধায়কের দাবি, প্রথমে নিছক দুর্ঘটনা বলে মনে হলেও পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট দেখে এর মধ্যে অন্য গন্ধ পাচ্ছেন তিনি।
ঋষিকেশ দাস ওরফে বাপ্পা নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন দেবপ্রসাদ বাগ। বাপ্পা কালনার ছোট দেউড়িপাড়ার বাসিন্দা। বিধায়কের বক্তব্য, তাঁকে উদ্দেশ্য করে বাপ্পা নামে ওই যুবক এর আগেও কুকথা, হুমকি পোস্ট করেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার কলকাতা যাওয়ার পথে বলাগড়ে তাঁর গাড়ি দুর্ঘটনার পরও ওই যুবক সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন।
সেই পোস্টে লেখা ছিল, ‘যমের অরুচি’! সঙ্গে একটি কান্নার ইমোজিও দেওয়া ছিল কান্নার। সেই পোস্ট দেখার পরই দেবপ্রসাদ বাগ পুলিশের দ্বারস্থ হন। বিধায়কের অভিযোগ, প্রথমে নিছক দুর্ঘটনা বলে মনে করেছিলেন বৃহস্পতিবারের বিষয়টি। কিন্তু ঋষিকেশ দাস ওরফে বাপ্পার সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট দেখে বিধায়কের ধারণা ওই যুবকই তাঁর গাড়ি দুর্ঘটনার পিছনে জড়িত। বিধায়ক পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলতেই পরিকল্পনা করে এই দুর্ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
বাপ্পা দাস এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। পাল্টা তাঁর দাবি, বিধায়ক মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। একই সঙ্গে বাপ্পা দাসের অভিযোগ, বিধায়কের সঙ্গে ব্যক্তিগত তাঁর কোনও সমস্যা নেই। বাপ্পা দাসের ছেলে মারা গিয়েছেন কয়েক বছর আগে। সেই মৃত্যুর ঘটনা নিয়েই দেবপ্রসাদ বাগের সঙ্গে তাঁর ঝামেলা হয়।
বাপ্পা দাসের কথায়, “আমার সঙ্গে ওনার ব্যক্তিগত কোনও শত্রুতা কোনওদিনই ছিল না। আমার ছেলে খুন হয়। তা নিয়েই ওনার সঙ্গে ঝামেলা। উনি আমাকে বহুবার পয়সা দিয়ে কেনার চেষ্টা করেছেন। আমার ছেলের খুনের যিনি সাক্ষী তাঁকে হুমকি দিয়েছেন যাতে সাক্ষ্য না দেন। কোনওভাবেই আমাকে রুখতে না পেরে এখন হেনস্থা করার চেষ্টা করছেন। উনি এখন সবকিছু ছেড়ে দিয়ে আমাকে কীভাবে হেনস্থা করবেন সেদিকে মন দিয়েছেন। সিআইডি আমার ছেলের খুনের ঘটনায় তিনজনের নাম পেয়েছে। এরপর থেকেই রাগ। কোথায় করোলায় দুর্ঘটনা সেখানে আমার নাম জড়াচ্ছে।”
বাপ্পা দাসের কথায়, “উনি সংবাদমাধ্যমে বলেছেন ওনার গাড়ি পিছনে ছিল, সামনে কনটেনার ছিল। তাহলে ওনার চালকেরই তো ভুল। আর ফেসবুকে কী পোস্ট করলাম তা নিয়ে তো এত হইচইয়ের কিছু নেই। ফেসবুক তো স্বাধীন জায়গা। আমি আমার এক বন্ধুকে উদ্দেশ্য করে লিখেছি। সে আবার কমেন্টও করেছে। আমার বন্ধুকে বলেছি।”
যদিও এই দুর্ঘটনা নিয়ে বৃহস্পতিবারই তৃণমূলের কালনা ব্লক সভাপতি প্রণব রায় বলেন, “করোলা মোড়ের কাছে একটা ডাম্পার হঠাৎ করে দাঁড়িয়ে পড়ে। ওর পিছনের বিধায়কের গাড়িটি ছিল। ব্রেক কষার সময়টুকুও না পাওয়ায় ওই ডাম্পারের পিছনে গিয়ে ধাক্কা মারে। হঠাৎ করে ডাম্পারটা কেন দাঁড়িয়ে গেল তার একটা তদন্ত হওয়া দরকার। বোর্ড লাগানো গাড়ি। বিধায়কের গাড়ির সামনে এসেই দাঁড়িয়ে পড়ল আচমকা!”