পূর্ব বর্ধমান: আচমকা বিকট শব্দে কেঁপে উঠল মঙ্গলকোটের নতুনহাট। ঠিক কীসের শব্দ প্রথমটা বুঝে উঠতে পারেননি কেউ। আওয়াজ শুনে আশপাশ থেকে ছুটে আসেন এলাকার মানুষ। দেখা যায় এলাকারই একটি দোকান বিস্ফোরণে ভেঙে গিয়েছে। উড়ে গিয়েছে দোকান লাগোয়া একটি ঘর। গুরুতর জখম হয়েছেন এক ব্যক্তি।
না, কোনও বোমাবাজির জেরে নয়, স্থানীয়রা জানিয়েছেন বাইপাসের ধারে একটি টায়ারের দোকানে কম্প্রেসার মেশিন ফেটে গিয়ে এই বিস্ফোরণ ঘটে। ঠিক কী হয়েছিল? স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, “আমরা তো আশেপাশেই ছিলাম। দোকানে বাচ্চা ছেলেটা কাজ করছিল। সেই সময় আচমকা একটা বিকট শব্দ পাই। চোখের নিমেষে দেখলাম দোকানটা ভেঙে পড়ল, ঘরের চালটা উড়ে গেল। ছেলেটাও খুব জখম হয়েছে।”
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ওই টায়ারের দোকানের পাশেই রয়েছে একটি পেট্রল পাম্প। অল্পের জন্য সেটি রক্ষা পেয়েছে। নয়ত বড় বিপদ হতে পারত। দোকানের মালিক জানিয়েছেন, গোটা দোকানটাই ধসে পড়েছে। তবে কীভাবে কমপ্রেসার মেশিন ফেটে এই বিস্ফোরণ ঘটল তা এখনও স্পষ্ট নয়। দোকানে সেই সময়ে কর্মরত এক ব্যক্তি গুরুতর জখম হয়েছেন। তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় পুলিশ। গোটা এলাকা খতিয়ে দেখছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে সাতসকালেই ভয়াবহ বিস্ফোরণে উত্তাল হয়ে ওঠে নোদাখালি। ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুও হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে আশেপাশের বাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে যায়। অবৈধ বাজি কারখানায় জমে থাকা বাজি তৈরির মশলা থেকেই এই বিস্ফোরণ বলে জানা যায়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নোদাখালি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক। ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় তৃণমূল নেতা বুচান বন্দ্যোপাধ্যায়।
বজবজ ২ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত নোদাখালি থানার নস্কর পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোহনপুর, আর্য পাড়ার ঘটনা। চলতি মাসেই ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। জানা যায়, একটি বাড়িতে অবৈধ ভাবে চলছিল বাজি কারখানা। আর সেখানেই ঘটে এই বিস্ফোরণের ঘটনা। বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় বাড়ির মালিক অসীম মিদ্য়ের। তাঁর মামী কাকলি মিদ্যে এবং কারখানার একজন শ্রমিকেরও মৃত্যু হয়।
খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছন নোদাখালি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক, উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারাও। এ ভাবে লোকালয়ে বাজি তৈরির মশলা কী ভাবে বাড়ির মালিক মজুত করেছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এলাকার মানুষ বারবার এই নিয়ে অভিযোগ জানান। তাঁদের দাবি, লোকালয়ে এ ভাবে বাজির কারখানা নিয়ে তাঁদের আপত্তি ছিল অনেক দিনের। একই ঘটনায় বিরক্ত হয়ে আজ ওই বাড়ির সামনে বিক্ষোভও দেখান স্থানীয়রা। তাঁরা দাবি করেন কোনও ভাবেই এই অবৈধ কারবার এই এলাকায় আর চলতে দেওয়া হবে না। ঘটনায়, NIA তদন্তের দাবি করে বিজেপির উচ্চ নেতৃত্ব।