Farmers’ Protest in Singur: ‘আন্দোলন করে রাজ্য সরকার গদি পেয়েছে, আর আমরা?’, পচা ধান নিয়ে বিক্ষোভ চাষিদের

Singur: ২০০৬ সালে সিঙ্গুরের মতো একটা শান্ত গ্রাম রাতারাতি বদলে গিয়েছিল প্রতিবাদের অগ্নিক্ষেত্রে। সেবার লড়াইটা ছিল শিল্প বনাম কৃষির লড়াই। সেই লড়াইতে কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Farmers' Protest in Singur: 'আন্দোলন করে রাজ্য সরকার গদি পেয়েছে, আর আমরা?', পচা ধান নিয়ে বিক্ষোভ চাষিদের
চাষিদের বিক্ষোভ, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 14, 2021 | 8:13 PM

হুগলি: সালটা ছিল ২০০৬। বামশাসন তখন বেশ টলোমলো। একটু একটু করে সিঙ্গুরের জমিতে তখন পুঞ্জীভূত হচ্ছে প্রতিবাদের আগুন। সরকারের একটা সিদ্ধান্তে শান্ত সিঙ্গুর রাতারাতি বদলে গিয়েছিল আন্দোলনের অগ্নিভূমিতে। এক দশকের লড়াইয়ের পর সেই মাটিই লিখে দিল কৃষক বিদ্রোহের অন্য আখ্যান। যাঁর নেতৃত্বে এই আন্দোলন পুঞ্জীভূত হয়, তিনি  আজকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৫ বছর পর সেই সিঙ্গুরেই এ বার, ফের ধরনায় বর্তমান রাজ্যের অন্যতম বিরোধী শক্তি বিজেপি। কিন্তু, যাঁদের রক্তক্ষয়ী প্রতিবাদে ইতিহাস তৈরি হয়েছিল, তাঁরা অর্থাত্‍ সেই কৃষকরা কী পেলেন? কারণ, মঙ্গলবার, দেখা গেল চাষিরাও সামিল হয়েছেন বিক্ষোভে। সঙ্গে পচা ধানের আঁটি।

কেন পচা ধান নিয়ে এমন বিক্ষোভ? প্রশ্ন করতেই ফুঁসে উঠলেন এক কৃষক। বললেন, “আন্দোলন করে, প্রতিবাদ করে সরকার তো গদি পেয়েছে, আমরা কী পেলাম? কিছুই পাইনি। সামান্য ক্ষতিপূরণটাও জুটছে না!” তাঁর আরও সংযোজন, “আমার ৯ বিঘা ধানজমি শেষ হয়ে গিয়েছে দুর্যোগে। তারমধ্যে বীজের দাম, সারের দাম, পাল্লা দিয়ে কেবলই বাড়ছে। আমরা কোথায় যাব! নবান্নে তো ঢুকতে দেবে না। তাই এখানেই বিক্ষোভ করছি। এছাড়া আর কোনও উপায় দেখছি না। এরপর আমরা না খেয়ে মরব।”

ভারতীয় জনতা কিষাণ মোর্চার ব্যানারে সিঙ্গুরে  এই ধরনার ডাক দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের বিভিন্ন দাবি দাওয়াকে সামনে রেখে তিনদিন ব্যাপী ধরনায় বসছে বিজেপি। তাও আবার জমি আন্দোলনের প্রাণভূমি সিঙ্গুরে। ১৪ ডিসেম্বর থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ধরনা চলবে। মঙ্গলবারই এই ধরনায় উপস্থিত হন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্য নেতা রাহুল সিনহা প্রমুখ।

তবে এই কর্মসূচি ঘিরে রবিবার থেকেই জটিলতা শুরু হয়। সেদিন বিজেপির স্থানীয় কর্মীরা ধরনামঞ্চ বাঁধার কাজ শুরু করতে গেলে পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ ওঠে। অবশেষে শর্তসাপেক্ষে বিজেপিকে সিঙ্গুরে ধরনার অনুমতি দিয়েছে হুগলি জেলা পুলিশ। শর্ত হল, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ করে ধরনা-অবস্থান চলবে না। একইসঙ্গে বলা হয়েছে মঞ্চে ৫০ থেকে ৬০ জনের বেশি লোক থাকতে পারবে না। তারপরেই তোড়জোড় শুরু করে বিজেপি। এদিনই,  বিজেপির ধর্না অবস্থানে দেখা যায় পচাধানের আঁটি নিয়ে বসে রয়েছেন কৃষকরা।

প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে সিঙ্গুরের মতো একটা শান্ত গ্রাম রাতারাতি বদলে গিয়েছিল প্রতিবাদের অগ্নিক্ষেত্রে। সেবার লড়াইটা ছিল শিল্প বনাম কৃষির লড়াই। সেই লড়াইতে কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গায়ের জোরে সরকারের বহুফসলি জমিঅধিগ্রহণ কার্যত রুখে দিতে পেরেছিলেন তত্‍কালীন তৃণমূল নেত্রী। দৃষ্টান্ত তৈরিতে সক্ষম হয়েছিল সিঙ্গুর। কিন্তু কী পেয়েছেন কৃষকরা? না পেয়েছেন শিল্পনগরী, না পেয়েছেন বহুফসলি জমি। কোনওরকমে বেঁচে থাকা। তাই পথে নেমেছেন। বিক্ষোভকেই হাতিয়ার করেছেন, অন্তত এমনটাই দাবি সিঙ্গুরের কৃষকদের।

আরও পড়ুন:  Firhad Hakim on Singur BJP Protest: ‘আমাদের মাস্টারমশাইকেও নিয়ে গিয়েছিলন…ওভাবে সিঙ্গুর দখল হয় না’