Burdwan Medical College : ইউজিসি-র ‘তারিখ’ পেতে টাকা? বর্ধমান মেডিক্যালে দালাল ধরতে ওত পাতল পুলিশ
Burdwan Medical College : এ ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতে ব্যাপক চাঞল্য ছড়িয়েছে হাসপাতাল চত্বরে। ইউএসজি বিভাগের কোনও কর্মী এই দলাল চক্রে যুক্ত কি না তা নিয়েও ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন রোগীর পরিজনরা।
পূর্ব বর্ধমান : হাসপাতাল (Hospital) চত্বরে ওত পেতে বসে রয়েছে দালালের দল। রোগীর ক্ষতস্থানে ড্রেসিং করানো থেকে সময়মত ওষুধ খাওয়ানো, এমনকী বেডের আশপাশ পরিষ্কার রাখা, সবেতেই আলাদা আলাদা করে দিতে হবে টাকা। দালালদের টাকা না দিলে মিলছে না বেড। কিছুদিন আগেই মালদা মেডিক্যাল কলেজের এ ছবি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছিল স্বাস্থ্য মহলের অন্দরে। নজরে এবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল (Burdwan Medical College)। অভিযোগ, এই হাসপাতালেও সক্রিয় রয়েছে দালাল চক্র। ১০০ টাকার বিনিময়ে ঘুরপথে হয়ে যাচ্ছে ইউএসজি। হাতেনাতে এক দালালকে ধরে ফেলল পুলিশ। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকালে পূর্ব বর্ধমানের ভিটা-শোনপুর থেকে মেয়েকে আউটডোরে দেখাতে নিয়ে যান তুলা ধর। দিন কয়েক আগে থেকেই পেটের যন্ত্রণায় ভুগছিলেন তাঁর মেয়ে সোমা ধর। এদিন মেয়েকে আউটডোরে দেখানোর পর চিকিৎসকরা ইউএসজি করানোর পরামর্শ দেন। সেই মত তুলা দেবী হাসপাতালের ৬ নম্বর কাউন্টারে যান ইউএসজি-র কাগজপত্র করাতে। কাউন্টারে তাঁকে এক সপ্তাহ পর ইউএসজি করানোর জন্য তারিখ দেওয়া হয়। এদিকে তখন যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন তাঁর মেয়ে। যন্ত্রণাকাতার রোগীর ইউএসজি করাতে কেন এত সময় লাগবে? প্রশ্ন করেন তুলা দেবী। তবে হাসপাতালের সাফ বার্তা এটাই নিয়ম।
তুলা দেবীর দাবি, সেই সময় ওই কাউন্টারের বাইরে একজন তাঁর কাছে ১০০ টাকা দাবি করেন। ওই টাকার বিনিময়ে মঙ্গলবারই ইউএসজি করিয়ে দেওয়া হবে বলে ওই ব্যক্তি আশ্বাস দেন বলে অভিযোগ তুলা দেবীর। কিন্তু, সেই সময় তুলা দেবীর কাছে টাকা না থাকায় তিনি সোজা চলে যান হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে। এরপরেই এ ঘটনায় দেখা যায় নাটকীয় মোড়। অভিযোগ পাওয়ার পরেই হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ আব্দুল নাসির খান ওই ‘দালাল’কে ধরার জন্য ফাঁদ পাতেন। তিনি নিজে একটি ১০০ টাকার নোট তুলা দেবীকে দেন। ওই টাকা দালালের কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেন। দালালকে ধরতে ওত পেতে বসে থাকেন পুলিশ কর্মীরা। টাকা নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই হাতেনাতে ধরা হয় ওই ব্যক্তিকে। উদ্ধার হয় হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জের নাম লেখা নোট। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে বর্ধমান থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়। ধৃত ব্যক্তির নাম রবিউল ইসলাম মল্লিক। বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের গলসির পুরসায়। এ ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতে ব্যাপক চাঞল্য ছড়িয়েছে হাসপাতাল চত্বরে। ইউএসজি বিভাগের কোনও কর্মী এই দলাল চক্রে যুক্ত কি না তা নিয়েও ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন রোগীর পরিজনরা।
ঘটনা প্রসঙ্গে হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ ওই ব্যক্তিকে আটক করেছে। কোনও কর্মী এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কি না সেই বিষয়ে জানার জন্য তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।”