বর্ধমান: বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আগুন। কোভিড ওয়ার্ডে আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয়েছে এক রোগীর। শনিবার ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ কোভিড ওয়ার্ডের ৬ নম্বর ব্লকে আগুন লাগে বলে খবর। মৃতের নাম সন্ধ্যা মণ্ডল (৬০)। গলসির বড়মুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা তিনি। কোভিড ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন। তবে এই ঘটনায় আর কোনও রোগী সেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হননি বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। তাঁদের প্রত্যেককেই নিরাপদে হাসপাতালের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে আগুন লাগার ঘটনায় রোগী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোর সাড়ে ৪ টে নাগাদ কোভিড ওয়ার্ড থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন কোভিড ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা এক রোগীর আত্মীয়। প্রচণ্ড ঠান্ডা থাকায় ওয়ার্ডের ভিতরের রোগী ও হাসপাতালের অনান্য কর্মীরা সেভাবে তাপ তখনও অনুভব করতে পারেননি। ভোর রাতে অঘোর ঘুমোচ্ছিলেন তাঁরা। ওই ব্যক্তিই চিৎকার চেঁচামেচি করে বাকিদের ঘুম থেকে তোলেন। ধোঁয়া বের হতে দেখে তৎপরতার সঙ্গে প্রাথমিক কাজ করেন কর্মীরা।
প্রাথমিকভাবে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন হাসপাতালের কর্মীরা। ততক্ষণে খবর ছড়িয়ে পড়ে দাবানলের মতো, সঙ্গে আতঙ্কও। ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে আসার জন্য প্রথমে রোগীদের মধ্যে ছোটছুটি শুরু হয়ে যায়। পরে হাসপাতাল কর্মীদের সাহায্যে প্রত্যেককে ওয়ার্ড থেকে বার করে আনা সম্ভব হয়। কিন্তু ততক্ষণে সন্ধ্যার মৃত্যু হয়।
রোগীদের অন্য ওয়ার্ডে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের একটি ইঞ্জিন। কিন্তু ততক্ষণে হাসপাতালের কর্মীরাই আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে ফেলেন। বর্তমানে রাধারানি ওয়ার্ডকে কোভিড ওয়ার্ড করা হয়েছে। সেখানেই ৬ নম্বর ব্লকে ভর্তি ছিলেন করোনা আক্রান্ত সন্ধ্যা মণ্ডল। তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, মশা মারার ধূপ থেকেই আগুন লেগেছে। আগুন লাগার প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তবে অগ্নিদগ্ধ হয়ে রোগী মৃত্যুর ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি ফরেন্সিক দলকে খবর দেওয়া হয়েছে বলে জানান বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ প্রবীর সেনগুপ্ত। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বর্ধমান থানার পুলিশ। তবে নিরাপত্তার গাফিলতির কথা অস্বীকার করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
অধ্যক্ষ বলেন, “কোভিড জেনারেল ওয়ার্ডে সাড়ে তিনটের সময়ে সার্জারির ডাক্তারবাবুরা গিয়ে সন্ধ্যা মণ্ডলকে দেখে যান। তারপর পাঁচটা নাগাদ খবর আসে। গিয়ে দেখা যায়, সন্ধ্যা মণ্ডলের বেডটাই দাউ দাউ করে জ্বলছে। অক্সিজেন সিলিন্ডার ছাড়া তো আর কোনও কিছু ছিল না ওখানে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: Post Poll Violence Case: ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় শীতলকুচিতে ধৃত তৃণমূল নেতারা জেল হেফাজতে