‘ঘোরতর অপরাধী ছেলে’, ক্ষমা করলেন না মা, গ্রামবাসীদের ‘শাস্তি’-তে মৃত্যু যুবকের!

TV9 Bangla Digital | Edited By: tista roychowdhury

Jul 14, 2021 | 10:26 PM

Crime News: মহিলার আর্ত চিৎকার শুনে ছুটে আসেন কিছু গ্রামবাসী। অল্প সময়ের মধ্যেই গ্রামবাসীরা জড়ো হয়ে অভিযুক্তকে মারতে (Mob Lynching) শুরু করেন।

ঘোরতর অপরাধী ছেলে, ক্ষমা করলেন না মা, গ্রামবাসীদের শাস্তি-তে মৃত্যু যুবকের!
মৃত যুবকের মা বেগম বিবি, নিজস্ব চিত্র

Follow Us

পূর্ব বর্ধমান: ফের মধ্যযুগীয় বর্বরতা! গ্রামবাসীদের ‘নীতিপুলিশির’ জেরে মৃত্যু হল যুবকের। গ্রামেরই এক মহিলাকে ধর্ষণের চেষ্টা করার অভিযোগে যুবককে গণধোলাই (Mob Lynching) দিলেন গ্রামবাসীরা। হাসপাতালে যাওয়ার আগে রাস্তাতেই মৃত্য়ু হল অভিযুক্তের। ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে আউশগ্রামে।

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বুধবার বিকেলে আউশগ্রামের বনপাড়ার এক মহিলা মাঠে ধান কেটে ফেরার সময়ে অভিযুক্ত নয়ন শেখের নজরে পড়েন। অভিযোগ, ওই মহিলা একলা থাকায় তাঁকে টেনে এনে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন নয়ন। রাস্তার ধারের ঝোপেই তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন নয়ন বলে অভিযোগ। মহিলা নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তাঁকে এলোপাথাড়ি মারধর এমনকী চিৎকার করতে গেলে তাঁর মুখে রাস্তার মোরাম পাথরকুচি ঢুকিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

মহিলার আর্ত চিৎকার শুনে ছুটে আসেন কিছু গ্রামবাসী। অল্প সময়ের মধ্যেই গ্রামবাসীরা জড়ো হয়ে অভিযুক্তকে মারতে (Mob Lynching) শুরু করেন। রক্তাক্ত ওই মহিলাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় পুলিশ। আহত যুবককে উদ্ধার করে প্রথমে জামতাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় নয়নে বর্ধমানে নিয়ে যাওয়ার আগে পথেই তার মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে খবর, মাদকাসক্ত ছিলেন নয়ন। ফলে, শারীরিকভাবে দূর্বলও।  আচমকা এলোপাথাড়ি মারধরের (Mob Lynching) জন্যই মৃত্যু হয়েছে তার।

মৃত নয়নের মা বেগম বিবির কথায়, “ছেলে যা করেছে তা অপরাধ। ঘোরতর অপরাধী ও। ওকে আমি ক্ষমা করব না। নয়ন শাস্তি পাওয়ারই যোগ্য। কিন্তু, গ্রামের লোক কেন পিটিয়ে মারবে ওকে? আইন আছে। পুলিশ আছে। পুলিশ পিটিয়ে মারলেও আমি কিছু মনে করতাম না। কিন্তু, পাবলিকের হাতে আইন তুলে নেওয়ার পক্ষপাতী আমি নই।” পাল্টা, ঝিনু বাগদী নামে এক গ্রামবাসীর কথায়, “ছেলেটাকে পিটিয়ে মারা হল  কেবল ওটাই দেখা হল! আর মেয়েটাকে যা করা হয়েছে তার কী হবে! সেই দায় কেউ নেবে!”

ঘটনার উত্তেজনায় এলাকায় মোতয়েন করা হয় প্রচুর পুলিশ। এলাকায় আসেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ডিএসপি-সহ পুলিশ আধিকারিকরা। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, জেরায় নিহতের মা বেগম বিবি জানিয়েছেন মদ, গাঁঁজার নেশা করতেন নয়ন। আট মাস আগে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে তার। গণপিটুনির ঘটনায় দুই মহিলা-সহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে, এই প্রথম নয়, সম্প্রতি রাজ্যে একের পর এক এই নীতিপুলিশির ছবি ভেসে উঠেছে। কোথাও সামান্য ছাগল চুরির জন্য মারধর কোথাও বা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার অপরাধে আদিবাসী মহিলার সম্মানহানি। বঙ্গ জুড়ে একের পর এক উঠে এসেছে  নীতিপুলিশির ছবি। বুধবার আউশগ্রামের ঘটনায় যদিও জেলা প্রশাসনের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। আরও পড়ুন: ‘এত্ত অভিমান!’, নাতির ‘চরম’ সিদ্ধান্তে কেঁদে ভাসালেন দাদু

Next Article