পশ্চিমবঙ্গ: ত্রিপুরায় (Tripura) তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের উপর অত্যাচার ও যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী সায়নী ঘোষের গ্রেফতারের প্রতিবাদে সোমবার দুপুর থেকেই এ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভে শামিল হয় দলের কর্মী ও সমর্থকেরা। এই প্রেক্ষিতে বঙ্গ বিজেপিকে হুমকি দিতে শোনা গেল রাজ্যের দুই মন্ত্রীকে। এক মন্ত্রীর হুঙ্কার, মিনিট দশের মধ্যে বিজেপি কার্যালয় ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন তাঁরা। আরেক মন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, বাংলার বিজেপি (নেতা, কর্মী ও সমর্থক) ছাড় পাবে না।
“ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয় ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয়েছে, তৃণমূল যদি পাল্টা করে বর্ধমানে বিজেপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভেঙে চুরমার করে দিতে দশ মিনিট সময় লাগবে না।” ত্রিপুরায় সায়নী ঘোষের গ্রেফতারের প্রতিবাদে বর্ধমানের কার্জনগেট চত্ত্বরে প্রতিবাদ সভায় এমনই মন্তব্য করলেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তিনি যোগ করেন, “এবার ত্রিপুরার ভোটে বিজেপি গো-হারা হারবে, তাই জেনে বুঝে আমাদের উপর এই ধরনের আক্রমণ।” স্বপনবাবুকে বলতে শোনা যায়, বাংলার মত ত্রিপুরাতেও ‘খেলা হবে’।
এদিন সায়নী ঘোষের গ্রেফতারের প্রতিবাদে বর্ধমান জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। এই সভাতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের হুঙ্কার, “বর্ধমানে বিজেপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভেঙে চুরমার করে দিতে দশ মিনিট সময় লাগবে না।”
অন্যদিকে ত্রিপুরার ঘটনায় বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিতে শোনা গিয়েছে রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককেও। তিনি বলেছেন, ‘বাংলায় ছাড় পাবে না বিজেপি’।
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাবি, বেশ কয়েক দিন ধরে ত্রিপুরায় চরম অত্যাচার হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকদের উপর। এমনকি প্রার্থীদের ওপর নেমে আসছে আক্রমণ। গত সাত-আট দিন ধরে এই অত্যাচারের মাত্রা চরম আকার ধারণ করেছে। যা দুঃখজনক এবং দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করতে শোনা যায় তাঁকে। তিনি বলেন, “সর্বোচ্চ আদালত যখন বলেছে, নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ করতে হবে, তা অগ্রাহ্য করে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী যে ভূমিকা পালন করছেন, আমার মনে হয়, মহামান্য উচ্চ আদালতের উচিত যথাযথ একটি বিচার করা। সমস্ত প্ল্যানটা হচ্ছে যে কোনো মূল্যে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আটকানোর।”
তিনি আরও যোগ করেন, “যে কোনও কৌশলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যেন ত্রিপুরা না যেতে পারেন, তার জন্য আটকানো হচ্ছে। ত্রিপুরার বিজেপি সরকার ভীত এবং আতঙ্কগ্রস্ত।
এদিকে স্বপন দেবনাথের মন্তব্যের সমালোচনা করে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বর্ধমান সদর জেলা বিজেপি। রাজ্যের একজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর এই মন্তব্য অনভিপ্রেত বলে জানিয়েছেন বর্ধমান সদর জেলা বিজেপির সম্পাদক শ্যামল রায়। মন্ত্রীর এই ধরনের মন্তব্যে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে ভুল বার্তা যাবে বলে দাবি তাঁর। যদিও হুঙ্কার দিতে শোনা যায় তাঁকেও। শ্যামল বাবু বলেন,”আমরা একটি সর্বভারতীয় দল করি। ওরা যদি আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভাঙতে পারে, তাহলে আমরা ওদের আসানসোল পার করতে দেব না।” এদিকে এদিন সন্ধ্যা নাগাদই জামিনে মুক্তি পেয়েছেন সায়নী ঘোষ।
আরও পড়ুন: Municipal Election: দু’এক দিনের মধ্যেই জারি হতে পারে পৌরভোটের বিজ্ঞপ্তি