পূর্ব মেদিনীপুর: বঙ্গ বিজেপির অন্দরে ক্ষোভ বর্তমান। সদ্যই দল থেকে সাময়িক বরখাস্তের শিকার হয়েছেন জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারী। এ বার ফের, গেরুয়া শিবিরের অন্দরে আরও একদফা বিরোধের সূত্রপাত। সদ্যই প্রকাশিত হয়েছে জেলার দলীয় নব পরিচালন কমিটি। সেই তালিকাতেই এ বার জেলা বিজেপি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) ভাই সৌমেন্দু অধিকারী (Soumendu Adhikari) । যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিক্ষোভ।
সূত্রের খবর, নতুন পরিচালন কমিটি নিয়ে পদ্ম শিবিরের একাধিক নেতৃত্ব ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পরিচালন কমিটির তালিকা থেকে কার্যত পুরোপুরি বাদ গিয়েছেন আদি নেতারা। জায়গা করে দেওয়া হয়েছে নতুনদের। তারমধ্যে অনেকেই নির্বাচনী আবহে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসা। সৌমেন্দু কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার পাশাপাশি, নির্বাচনের ঠিক আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসা মেঘনাথ পাল নির্বাচিত হয়েছেন জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক হয়ে। নন্দীগ্রামে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন মেঘনাথ।
অন্যদিকে, নব পরিচালন কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন অসীম মিশ্রের মতো আদি নেতারা। যা নিয়ে রীতিমতো দলের অন্দরেই কার্যত দুইভাগে বিভক্ত পদ্ম শিবির। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ বলছেন, নতুন জেলা কমিটিতে সৌমেন্দুরা একা নন, শুভেন্দুর ‘গুড বুকে’ থাকা অনেকেই জায়গা পেয়েছেন। যা দলের সকলে ভাল চোখে দেখছেন না। স্বাভাবিকভাবেই, পূর্ব মেদিনীপুরের দুটি সাংগঠনিক জেলায় শুভেন্দু ঘনিষ্ঠরা প্রায় সকলেই একের পর এক পদে পাওয়ায় বিজেপির অন্দরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও, বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে, নিয়ম মেনেই কমিটির রদবদল করা হয়েছে। বিষয়টি অন্যভাবে দেখা ঠিক হবে না বলেই দাবি জেলা পদ্ম নেতৃত্বের।
বস্তুত, পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি ও তমলুক ‘অধিকারী গড়’ বলেই পরিচিত। শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের পর, ধীরে ধীরে, কাঁথি, তমলুক, হলদিয়ার একাধিক প্রশাসনিক ক্ষেত্র থেকে অধিকারীদের সরিয়েছে শাসক শিবির। পুরনো কমিটি ভেঙে নতুন করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুটি সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যানের পদ-সহ একাধিক পদ খুইয়েছেন খোদ শুভেন্দুও। এই পরিস্থিতিতে, শুভেন্দুর ‘কাছের মানুষ’-দের নির্বাচন কার্যত নতুন করে বিজেপির অন্দরে ক্ষোভের কারণ হতে পারে। আর তাতে, আখেরে বিজেপিরই ক্ষতি। এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।
অন্যদিকে, শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠদের সাংগঠনিক পদ পাওয়ার নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল নেতৃত্বরা। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা যুব তৃনমূলের সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি বলেন. “বিজেপি বলতে রাজ্যে কিছু নেই। শুভেন্দু অধিকারী অনুগামীরা এখন বিজেপি।”
আরও পড়ুন: মমতা ‘মেসি’! তৃণমূল সুপ্রিমোর ‘স্ট্রাটেজি’তে প্রচ্ছন্ন প্রশংসা জয়প্রকাশের?
আরও পড়ুন: পূর্বসূরির পথেই হাঁটলেন বুদ্ধদেব, প্রত্যাখ্যান করলেন পদ্ম সম্মান